আল্লাহর কাছে খালেদার জিয়ার প্রার্থনা গুম-খুনিদের যেন শাস্তি হয়
কিরণ সেখ : বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেছেন, বর্তমান সরকার অনেকের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা করছে। কিন্তু সরকার নিজেই রাষ্ট্রদ্রোহী। রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে তারা গোপনে কাজ করছে যা সাধারণ জনগণ জানে না। তারা দেশের স্বার্থের পরিপন্থী কাজ করছে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর লেডিস ক্লাবে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি আয়োজিত এক ইফতার মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন। ইফতার মাহফিলে বেগম জিয়া সন্ধ্যা ৬টা ৩৮ মিনিটে উপস্থিত হন। এতে সভাপতিত্ব করেন এলডিপির চেয়ারম্যান কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বীর বিক্রম।
খালেদা জিয়া বলেন, ছাত্রলীগের কর্মীরা অবাধে অস্ত্র নিয়ে ঘুরছে। কিন্তু তাদের ধরা হচ্ছে না। অথচ বিএনপির নেতাকর্মীদের মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার করা হচ্ছে। এমনকি বিএনপির নেতাকর্মীরা জামিন পাওয়ার পরও কারাগারের ফটক থেকে আরও একটি নতুন মামলা দিয়ে গ্রেফতার করা হয়। তবে লোক দেখানোর জন্য কিছু ছাত্রলীগ কর্মী গ্রেফতার করা হলেও কিছু দিনের মধ্যে তাকে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে।
বিডিআর হত্যাকা-ের কথা শেখ হাসিনা আগে থেকেই জানতেন দাবি করে তিনি বলেন, বিডিআর হত্যাকা-ের জন্য শেখ হাসিনা দায়ী। কারণ শেখ হাসিনা চাইলে সেদিন বিডিআর হত্যাকা- সংগঠিত হতো না। অথচ বিডিআর হত্যা মামলায় বিএনপিনেতা নাসির উদ্দিন আহমেদ পিন্টুর বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর কারাগারে তাকে (পিন্টু) হত্যা করা হয় বলে দাবি করেন বেগম জিয়া।
তিনি বলেন, সকল রাজনৈতিক নেতারা যারা স্ব স্ব প্ল্যাটফর্ম থেকে একই রকমের কথা বলছি, তাদের উচিত দেশের স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ হওয়া। কে কী পাব, সেটা বড় কথা নয়। অর্থাৎ চাওয়া-পাওয়াটা আজ বড় কথা নয়, আমাদের কাছে বড় কথা হলো- গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনা, দেশটাকে রক্ষা ও মানুষের কল্যাণ করা।
সরকারকে ব্যর্থ, অযোগ্য, অথর্ব, দুর্নীতিবাজ, খুনি, অত্যাচারী ও গুম-হত্যাকারী’ আখ্যা দিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, এরা অসংখ্য মানুষকে খুন করে চলেছে, অনেক অপরাধ করেছে। তাই আসুন, আমরা রমজান মাসে মহান আল্লাহর কাছে দোয়া করি, আল্লাহ যেন খুন-গুম ও অত্যাচারের জন্য এদের শাস্তি দেন।
দেশবাসী ও নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, সামনে নিশ্চয়ই শুভদিন আসবে। তাই আসুন, আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ থেকে দেশটাকে রক্ষা করে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করি, যাতে জনগণের কল্যাণ করা যায়।
সরকার পুরো দেশটাকেই কারাগার বানিয়েছে এমন অভিযোগ করে সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী বলেন, জঙ্গি দমনে সাঁড়াশি অভিযানের নামে এখন পর্যন্ত ১২ হাজারের অধিক মানুষকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর মধ্যে বিএনপি ও এর অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের প্রায় ২ হাজার ৭শ নেতাকর্মী রয়েছে।
সাঁড়াশি অভিযান প্রসঙ্গে তিনি দাবি করে বলেন, সরকারের লক্ষ্য সন্ত্রাসী ধরা নয়। জঙ্গি দমনের নামে বিএনপি ও এর সমর্থক, অন্য রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী এবং বিএনপিকে যারা ভালোবাসেন এমন নিরীহ মানুষকে জেলে ভরাই তাদের আসল লক্ষ্য। সেজন্য তারা সন্ত্রাসীদের নির্দ্বিধায়-নির্ভয়ে বিদেশে পার করে দেয়।
এ প্রসঙ্গে খালেদা জিয়া আরও বলেন, পত্রিকা খুললেই দেখা যায়, সরকার নিরীহ মানুষকে ধরে পুলিশ ভ্যানে ভরছে। আর তাদের স্বজনরা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে আহাজারি করছে। কিন্তু তারা কিছুই করতে পারছে না। এই হচ্ছে সরকারের দেশ চালানোর নমুনা। সম্পাদনা : বিশ্বজিৎ দত্ত