ওষুধ খাতে নৈরাজ্য প্রতিরোধে চালু হচ্ছে অনলাইন রিপোর্টিং
বিশেষ প্রতিনিধি : প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) প্রোগ্রামের সহায়তায় ওষুধ খাতের নৈরাজ্য-অনিয়ম প্রতিরোধে অনলাইন রিপোর্টিং প্রকল্পের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এটি শিগগিরই জনগণের ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।
গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে এক প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম একথা বলেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) প্রোগ্রামের সহায়তায় ওষুধের বিরূপ প্রতিক্রিয়া, নকল ওষুধ এবং ওষুধের নির্ধারিত মূল্যের অধিক মূল্যে বিক্রয়ের বিষয়ে অনলাইনভিত্তিক রিপোর্টিং-এর জন্য ওয়েব পোর্টাল ও মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন শীর্ষক একটি প্রকল্পের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, দেশে জীবন রক্ষাকারী নকল ওষুধ উৎপাদন ও বিক্রয়কারীদের বিরুদ্ধে সরকারের ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর সর্বদাই সচেষ্ট আছে এবং সরকার এ ব্যাপারে কঠোরতা অবলম্বন করছে।
এ লক্ষ্যে ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর অভিযান পরিচালনা, নিয়মিত মনিটরিং করার কথা উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, জানুয়ারি ২০১৫ হতে মে ২০১৬ পর্যন্ত সারাদেশে ভেজাল/নকল ওষুধ উৎপাদন ও বিক্রি করার দায়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত ১,৯৯৭টি মামলা দায়ের করে ৫ কোটি ৩৩ লাখ ৫০ হাজার তিনশ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে এবং ৫৭ জন আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদ- প্রদান করা হয়েছে, ৬৮টি প্রতিষ্ঠান সিলগালা করা হয়েছে। আনুমানিক ২৭ কোটি টাকার ওষুধ জব্দ ও ধ্বংস করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন মন্ত্রী।
এছাড়াও জানুয়ারি ২০১৫ হতে মে ২০১৬ পর্যন্ত ভেজাল ও নকল ওষুধ উৎপাদন ও বিক্রি করার দায়ে ড্রাগ কোর্টে ৩৯টি এবং ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে ১৬টি মামলা দায়ের করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার ভেজাল, নকল ও মানহীন ওষুধ বিক্রি বন্ধে দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে আদর্শ মডেল ফার্মেসি স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। বাংলাদেশকে কারিগরি সহায়তা দিচ্ছে আর্ন্তজাতিক সংস্থা ম্যানেজমেন্ট সায়েন্স ফর হেলথ (এসএসএইচ)-এর অ্যাক্রিডিটেড ড্রাগ সেলার (এডিএস) প্রকল্প।
আদর্শ মডেল ফার্মেসির জন্য একটি স্বতন্ত্র মনোগ্রাম তৈরির কাজ চলছে। আদর্শ মডেল ফার্মেসির আকার, ধরন ও কার্যক্রমের উপর ভিত্তি করে ‘লেভেল-১ ও লেভেল-২’ দুটি ক্যাটাগরি করা হয়েছে।
লেবেল-১ ক্যাটাগরির আদর্শ মডেল ফার্মেসি পরিচালিত হবে এ গ্রেড ফার্মাসিস্ট দ্বারা এবং লেবেল-২ পরিচালিত হবে বি এবং সি-গ্রেড ফার্মাসিস্ট দ্বারা।
আদর্শ মডেল ফার্মেসি থেকে জনগণ মানসম্মত ওষুধ কেনার পাশাপাশি যেন ওষুধের ব্যবহারবিধি ও গুণাগুণ সম্পর্কেও সঠিক ধারণা পায় সেজন্য কাউন্সিলিংয়ের জন্য পৃথক ব্যবস্থা থাকবে বলেও উল্লেখ করেন মন্ত্রী।