দর্জিপাড়ায় ব্যস্ত কারিগররা
ফারহান ফারুক : পবিত্র ঈদুল ফিতরের আগমনী বার্তা কড়া নাড়ছে। তাই ধুম পড়েছে কেনাকাটার। তরুণ-তরুণীদের পছন্দের তালিকায় আছে দেশি সাজের গজ কাপড়। আকর্ষণীয় সাজে নিজের পছন্দ অনুযায়ী কাপড়কে নিজস্ব সাজে সাজানোর জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ গজ কাপড় কিনতে দোকানগুলোতে উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা যায়। সৌখিন গ্রাহকরা গজ কাপড় কিনে সময় অপচয় না করে চলে যাচ্ছেন দর্জি কারিগরদের কাছে। কাপড়ের নিজস্ব রূপ দিতে বেছে নিচ্ছেন দর্জিদের কৌশল। সেই সুবাধে কাজে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন রাজধানীর দর্জিপাড়া।
গতকাল রোববার রাজধানীর বিভিন্ন মার্কেট ও শপিংমলে দেওয়া ব্যান্ডের টেইলার্স বা দর্জি দোকানগুলো ঘুরে এ চিত্র দেখা যায়। সৌখিন গ্রাহকরা দর্জির দোকানে ভিড় জমাচ্ছেন। নিজের পছন্দ মতো কাপড়ের ডিজাইন দিতে তারা ভিড় জমাচ্ছেন দর্জিপাড়ায়। রমজান আসার আগ থেকেই কাপড় কিনে টেইলার্সের দোকানে দিয়ে গেছে। অনেকেই কাপড় নিয়ে দিতে যাচ্ছেন দর্জিপাড়ায়। কেননা তাদের ইচ্ছে ঈদে নতুন ডিজাইনে নতুন পোশাক পরিধান করা। তাছাড়া কাপড়ের নিজস্ব রূপ দিতে তরুণীদের পাশাপাশি তরুণেরাও পিছিয়ে নেই। তারা পাঞ্জাবি-পাজামার পাশাপাশি ঈদে প্যান্ট, জামা, শেরওয়ানি, ফতুয়া, কাতুয়া ইত্যাদি তৈরিতে ব্যস্ত।
সরেজমিনে এলিফ্যান্ট রোডের ইস্টার্ণ মল্লিকা শপিং কমপেক্স গিয়ে দেখা যায়, দোকানগুলোতে প্রচ- ভিড়। লেডিস টেইলার্সের মালিক দুলাল বলেন, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তৈরি পোশাক সরবরাহ করতে হবে। তাই পছন্দের পোশাক বানাতে এখন আমরা ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছি। রোজার সময় আমাদের কাজের ব্যস্ততা দ্বিগুণের চেয়ে বেশি বেড়ে যায়। কাজের চাপ থাকে অনেক বেশি। দম ফেলানোর সময় থাকে না। তাছাড়া তিনি আরও জানান, আজকের পর থেকে আমরা অর্ডার নেওয়া বন্ধ করেছি।
তাছাড়া দেখা যাচ্ছে, দোকানগুলোতে ভিড় করছেন সৌখিন গ্রাহকরা। কেননা বাজার থেকে কেনা বাহারি পোশাকের দাম যেমন চড়া তেমনি মাপেও সঠিক হয় না। তাই দর্জির দোকানে অর্ডার দেয়ার ভিড় লক্ষণীয়।
এদিকে দর্জির দোকানগুলোতে নারীদের উপস্থিতি ছিল লক্ষণীয়। মার্কেটে আসা দুজন বেসরকারি চাকরিজীবী নারী একথা জানান, ছেলে-মেয়েদের চাহিদা অনুযায়ী একটু ভালো কাপড় কিনে বাহারি পোশাক তৈরির জন্য দর্জির দোকানে এসেছি। কিন্তু দর্জিরা অর্ডারের ভিড়ে মজুরিও অনেকাংশে বাড়িয়ে দিয়েছে। এরপরও বাধ্য হয়ে পোশাক তৈরির জন্য তাদের কাছে এসেছি।
আরেক নারী বলেন, ঈদের সময় সবাই চায় নতুন পোশাক পরতে। রেডিমেড দোকানে একই নকশার অনেক পোশাক থাকে। তাই নিজের পছন্দ মতো কাপড় কিনে বানাতে দেই।
ইস্টার্ণ মল্লিকা শপিং কমপ্লেক্সের আর রহমান টেইলার্স এন্ড ফেব্রিক্স মালিক জসিম উদ্দিন জানান, ক্রেতারা কাপড় কিনে বিভিন্ন দর্জির দোকানে তাদের পছন্দমাফিক পোশাক বানাতে দিচ্ছেন। দর্জি দোকানগুলোতে অতিরিক্ত শ্রমিক নিয়োগ করে বিরতিহীনভাবে রাতভর পোশাক তৈরির কাজ চলছে। তাদের ফুরসত নেই । দর্জিদের নিপুণ হাতের ছোঁয়ায় মানসম্পন্ন পোশাক তৈরির জন্য অর্ডারিরা ছুটছেন বিভিন্ন দোকানে।
এদিকে নিজস্ব ডিজাইনের পাঞ্জাবি তৈরি করতে আসা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবির বলেন, কেউ পাঞ্জাবি তৈরি করতে আবার কেউ কিনতে পছন্দ করেন। আমি সাধারণত পাঞ্জাবি তৈরি করে পরতে ভালোবাসি। নিজের পছন্দ মতো কাপড় কিনে নিজের করা ডিজাইন দিয়ে পাঞ্জাবি তৈরি করতে টেইলার্স দোকানে আসা। তাছাড়া কাপড় কিনতে ও বানাতে খরচ কিছুটা কম পড়ে।
তিনি আরও বলেন, পাঞ্জাবির ফিটিংসেরও একটা ব্যাপার থাকে। রেডিমেট কিনলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পাঞ্জাবির ফিটিংস হয় না। এখন থেকে আর কোনো অর্ডার নেওয়া হবে না বলে জানালেন দর্জি দোকানিরা। সম্পাদনা : সৈয়দ নূর-ই-আলম