এসি রবিউল ও ওসি সালাউদ্দিনের গ্রামের বাড়িতে শোকের মাতম
আবুল বাসার আব্বাসী, মানিকগঞ্জ ও গোপালগঞ্জ প্রতিদিন : গুলশানের হলি আর্টিজানে জঙ্গিদের গুলিতে নিহত ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী কমিশনার রবিউল করিমের মৃত্যুর খবরে তার গ্রামের বাড়ি মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার কাটিগ্রামে চলছে শোকের মাতম। রবিউলের আর ঈদ করা হলো না গ্রামের বাড়িতে আপনজনদের সঙ্গে।
ছেলের মৃত্যুতে বাকরুদ্ধ রবিউলের মা করিমন নেছা। গ্রামের বাড়িতে রবিউলের মায়ের সঙ্গে থাকা দাদির অবস্থাও একই। গত ২৪ জুন গ্রামে দুস্থদের মধ্যে কাপড় বিতরণ করে তিনি কথা দিয়েছিলেন ৩ জুলাই তিনি গ্রামে ফিরবেন এবং সম্ভব হলে স্বজনদের সঙ্গেই ঈদ করবেন। গত ১ জুলাই বেলা সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকা থেকে রবিউলের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী উম্মে সালমা বেগম (২৯) বাবার বাড়ি দেপাশাই গ্রামে আসেন। তিনি পৌঁছানোর পরপরই এক হৃদয়বিদারক পরিস্থিতি তৈরি হয়। রবিউলের পাঁচ বছরের ছেলে সাজেদুল করিম সামিও মায়ের বুকফাঁটা আর্তনাদ চেয়ে চেয়ে দেখছে। বাবা হারানোর মর্ম সামি এখনও বোঝে উঠতে পারেনি।
এলাকাবাসীর অতিপরিচিত মানুষ ছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা রবিউল করিম। তার অকাল মৃত্যুতে এলাকাবাসীও শোকে মুহ্যমান।
শনিবার ভোর থেকেই রবিউলের বাড়িতে ভিড় করতে শুরু করে এলাকাবাসী। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মানুষজনের ভিড়ও বাড়তে থাকে। বেলা ১১টার দিকে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী উম্মে সালমা বেগম তার একমাত্র ছেলে সাজেদুল করিম সামীকে নিয়ে শ্বশুরবাড়ি কাটিগ্রামে আসেন। এখানে আসার পরপরই তিনি স্বামীর শোকে অচেতন হয়ে পড়েন। এরপর দুপুর ১২টার দিকে মানিকগঞ্জের পুলিশ সুপার মাহফুজুর রহমান ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাকির হাসানসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা নিহতের বাড়িতে এসে পরিবারের সদস্যদের সান্ত¡না জানান।
গোপালগঞ্জ প্রতিদিন : ঢাকায় সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত বনানী থানার ওসি সালাউদ্দিন লুইয়ের গোপালগঞ্জের বাসায় চলছে শোকের মাতম। নিহতের স্বজনদের কান্না ও আহাজারি চলছে। গত শুক্রবার রাতে তার মৃত্যুর সংবাদ শোনার পর থেকে গোপালগঞ্জ শহরের ব্যাংক পাড়ার বাসায় আত্মীয়-স্বজন ও এলাকাবাসী ভিড় করে। তারা শোকাহত পরিবারকে সান্ত¡না দেয়ার চেষ্টা করছেন। ওসি সালাউদ্দিন গোপালগঞ্জের মানুষ লুই নামে পরিচিত।
ওসি লুইর হত্যাকারীদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক বিচার করতে না পারলে এ ধরনের ঘটনা দেশে আরও বৃদ্ধি পাবে। তাই এদের মূল উৎপাটন করার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন নিহতের স্বজন ও এলাকাবাসী। তার ছোটভাই মোহাম্মদ আলী খান বলেন, আমার ভাই নিরীহ মানুষ বাঁচাতে গিয়ে শহীদ হয়েছেন। তিনি আমাদের কাছে বাবার সমতুল্য ছিলেন। আমরা এ হত্যাকা-ের বিচার দাবি করছি।
ওসি সালাউদ্দীন লুইর বাবার নাম আব্দুল মান্নান খান। তিনি গোপালগঞ্জ এস এম মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন। ৭ ভাই ৪ বোনের মধ্যে লুই ছিলেন পঞ্চম। পুরো পরিবারটি তার উপর নির্ভরশীল ছিল। সম্পাদনা : প্রিয়াংকা