জঙ্গিদের লাশ আপাতত হস্তান্তর নয়, থাকবে সিএমএইচয়ে
নাশরাত আর্শিয়ানা চৌধুরী : গুলশানে হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্টে নিহত ছয় জঙ্গির লাশ আপাতত হস্তান্তর করা হবে না। এই লাশগুলো আপাতত রাখা হয়েছে সিএমএইচয়ে। সেখানেই থাকবে। রাষ্ট্রীয়ভাবে সরকার এই জঙ্গিদের লাশ হস্তান্তর করার ব্যাপারে যে সিদ্ধান্ত নিবেন সে হিসেবেই ব্যবস্থা নিবে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি তাদের পরিবারের কেউ লাশ দাবি না করলে ও নিতে না চাইলে ওই লাশ শেষ পর্যন্ত কী করা হবে সেই ব্যাপারেও ঘটনার প্রেক্ষাপট বিবেচনা করে সরকার সিদ্ধান্ত নিবে।
সূত্র জানায়, যে ছয় জঙ্গি গুলশান হামলার সঙ্গে জড়িত ছিল ওই সব জঙ্গিরা বাংলাদেশের বলে পরিচয় জানতে পেরেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। তবে ওই সব জঙ্গির পরিবারের সদস্যদের তরফ থেকে এখনো পর্যন্ত কেউ তার পরিচয় প্রকাশ করে লাশ গ্রহণ করার ব্যাপারে যোগাযোগ করেনি। তবে বিভিন্ন গণমাধ্যমে ও ওইসব জঙ্গিদের ব্যাপারে সাইট ইন্টিলিজেন্সে তথ্য এলেও তাদের পরিবারের কারও সঙ্গে এখনো পর্যন্ত যোগাযোগ করেনি তদন্ত কর্মকর্তারা। তারা বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন। তাদের ব্যাপারে বিভিন্ন ধরনের তথ্য নেওয়ার চেষ্টা করছেন। পরিচয় পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়ার পর ও পরিবারের ব্যাপারে তথ্য জানার পর তারা এই ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন।
সূত্র জানায়, এই সব লাশ এখনই দাফন করার কোনো তাড়া নেই। সরকারের তরফ থেকে এই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত দেওয়া হবে। সেই মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এখনো পর্যন্ত এমন কোনো নির্দেশনা আসেনি। তাছাড়া বিষয়টি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। মামলার তদন্তের স্বার্থে জঙ্গিদের ব্যাপারে তদন্ত কর্মকর্তাদের অনেক তথ্য জানার দরকার হতে পারে। সেই হিসেবে লাশগুলো সংরক্ষণ করারও প্রয়োজন হতে পারে। এছাড়া আরও বিভিন্ন সংস্থারও প্রয়োজন হতে পারে। সব মিলিয়ে এই ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটন করার জন্য জঙ্গিদের ব্যাপারে সরকার তড়িঘড়ি কোনো সিদ্ধান্ত নিবে না।
সূত্র জানায়, গুলশানের ঘটনায় ৮-৯ জন জঙ্গি ছিল বলে হোটেলের স্টাফদের দুজন ছাদ দিয়ে বেরিয়ে আসার পর জানিয়েছিল। সেই হিসেবে অভিযান পরিচালনাকারীরা ওখানে তারা ৮-৯ জন জঙ্গির সন্ধান করে। এরমধ্যে ছয় জন ঘটনায় নিহত হয়। বাকি ২-৩ জনকে সুনির্দিষ্ট করে চিহ্নিত করা যায়নি। তবে একজনকে সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেফতার করা হয়েছে। যাদের আটক করা হয়েছে এরমধ্যে ওই দলের সদস্য কেউ আছে কিনা সেটাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এছাড়া অভিযান পরিচালনার আগে ঘটনার পর পর কোনো জঙ্গি ওই জায়গা থেকে বেরিয়ে গেছে কিনা সেটাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একটি সূত্র বলছে, ঘটনার পর ওই রেস্টুরেন্টের চারদিকসহ বিভিন্ন দিকে এমনভাবে নিরাপত্তা বেষ্টনী দেওয়া হয়েছিল সেখান থেকে কারও পালানোর সুযোগ ছিল না। তারপরও যাদের আটক করা হয়েছে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেই এই ব্যাপারে আরও প্রয়োজনীয় তথ্য জানা যাবে।
সূত্র জানায়, বিদেশি ও দেশি যেসব নাগরিক হত্যাকা-ের শিকার হয়েছেন তাদের পরিবারের সদস্যরা যোগাযোগ করছেন, তাদের কর্তৃপক্ষও যোগাযোগ করছে। তবে জঙ্গিদের লাশ তাদের সন্তান ও কিংবা পরিবারের সদস্য বলে কেউ এখনও দাবি করেনি। সম্পাদনা : সুমন ইসলাম