জঙ্গি হামলার ঘটনা তদন্তে বন্ধু রাষ্ট্রের সহায়তা নেয়া হতে পারে: ডিএমপি কমিশনার
সুজন কৈরী : গুলশান হামলার তদন্তের সক্ষমতা বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর রয়েছে বলে দাবি করেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া। তিনি বলেন, তদন্তের প্রয়োজনে কারিগরি সহায়তার জন্য অবশ্যই আমরা আমাদের বিদেশি বন্ধু রাষ্ট্রের সহায়তা গ্রহণ করতে পারি।
গতকাল শনিবার সকালে ডিএমপি কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ডিএমপি কমিশনার সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, যদিও বর্তমান পরিস্থিতিটি নতুন, তবুও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ বিশেষ করে ডিটেকটিভ ব্রাঞ্চ ও নবগঠিত কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটে একঝাঁক তরুণ প্রতিভাবান ও পেশাদার অফিসার রয়েছেন। যাদের অনেকেরই দেশ বিদেশের উচ্চতর প্রশিক্ষণ রয়েছে। কাজেই এ ঘটনার তদন্তে তারা অত্যন্ত পারদর্শী। তবে প্রয়োজনে রাসায়নিক পরীক্ষা বা ল্যাব পরীক্ষার ক্ষেত্রে অতীতের মতো বন্ধু প্রতীম রাষ্ট্র বা সংস্থার কারিগরি সহায়তা নেয়া হতে পারে।
মর্মান্তিক হামলার ঘটনা প্রসঙ্গে কমিশনার জানান, এটি আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক কোনো ঘটনা নয়। এটি একটি জাতীয় সমস্যা। এ সমস্যা নতুন, আগে ছিল না। তারপরও পুলিশ খবর পেয়ে কয়েক মিনিটের মধ্যে ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রতিরোধ গড়ে তুলে। সারা রাত ঘটনাস্থল ঘিরে রেখে পাল্টা আক্রমণ করে হামলাকারীদের রেস্তোরাঁর ভিতরে থাকতে বাধ্য করে। যার ফলশ্রুতিতে সম্মিলিত বাহিনীর সফল অভিযানের মধ্যদিয়ে ৩২ জন জিম্মিকে জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয় এবং হামলাকারীরা বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়।
তিনি বলেন, বর্তমান পরিস্থিতি শুধু আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে মোকাবিলা সম্ভব নয়। এজন্য জাতীয় ঐকমত্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং সেই লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। নগরবাসীর সমর্থন ও সহযোগিতা নিয়েই বর্তমান পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ সম্ভব বলেও আশা প্রকাশ করেন এ পুলিশ কর্মকর্তা।
কমিশনার বলেন, সন্ত্রাস মোকাবিলায় পুলিশের যা যা করা দরকার তা পুলিশ করবে। হামলা করে এদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বা এদেশের জনতাকে দমন করা যাবে না। তিনি প্রয়োজনে পুলিশের ট্রেনিং প্যাটার্ন, কর্মপদ্ধতি, মোড অফ অ্যাকশন ও ওয়ে অব অ্যাকশনে পরিবর্তন আনার কথাও উল্লেখ করেন।
গুলশান ট্র্যাজেডির পর কেটেছে নয় দিন। এই ঘটনায় গুলশান থানায় দায়েরকৃত মামলাটি তদন্ত করছে ডিএমপির নবগঠিত কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্র্যান্স ন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটি)। এর মধ্যে ঘটনাস্থল থেকে আলামত সংগ্রহ এবং আটক সন্দেহভাজনদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। বিশ্বজুড়ে আলোড়ন তোলা এই ঘটনার তদন্তে ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, জাপান, ইতালি প্রয়োজনে বাংলাদেশকে সহযোগিতার আগ্রহ দেখিয়েছে। সম্পাদনা : সৈয়দ নূর-ই-আলম