ডালাসে রোবট-পুলিশের ‘খুন’ ঘিরে বিতর্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বোমা খোঁজা আর তা নিষ্ক্রিয় করার জন্য যার এত দর-দাম, সেই মার্কিন ‘রোবট পুলিশ’ তার হাতে থাকা বোমা ফাটিয়েই নিকেশ করে দিয়েছে ডালাসের আততায়ীকে! ‘সব্যসাচী’ এই ‘রোবো-পুলিশ’-এর ভূমিকাই এখন কড়া সমালোচনার মুখে ফেলে দিয়েছে ডালাসের পুলিশবাহিনীকে। আনন্দবাজার
প্রশ্ন উঠেছে, কেন ওই রোবটকে দিয়ে মানুষ খুন করাল পুলিশ? কেন ওই রোবটকে জনপ্রিয় ফিল্ম ‘রোবোকপ’-এর মতো ব্যবহার করা হল না? ওই রোবট তো গটগট করে হেঁটে গিয়ে ডালাসের আততায়ীর হাতে হাতকড়া পরিয়ে তাকে টেনে এনে তুলে দিতেও পারত পুলিশের হাতে! তা না করে, কেন সেই রোবট নিজেই বোমা ফাটিয়ে নিকেশ করে দিল ডালাসের আততায়ীকে? কেন তাকে দিয়ে মানুষ খুন করার কাজটা করাল ডালাস পুলিশ? প্রশ্ন তুলেছেন আইনজীবীরা। প্রশ্ন তুলেছে বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন। ডালাসের মেয়র আর পুলিশপ্রধানের অজুহাত, তা না হলে বহু পুলিশকর্মী মারা যেতেন। ডালাসের ওই ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ৫ পুলিশকর্তা। তার পরেও প্রশ্ন, পুলিশকর্মীদের বাঁচাতে রোবটকে দিয়ে আততায়ীকে নিকেশ করাটা কি খুব বিচক্ষণতার পরিচয়? তাকে হাতেনাতে ধরে, জেরা করে তো ওই ঘটনার ‘মোটিভ’ কী ছিল, তা আরও ভাল ভাবে জানা যেত!
ডালাসের এই রোবট-পুলিশ তার হাবেভাবে অনেকটাই ছিল সেই ‘রোবোকপ’-এর মতো! যে ‘রোবোকপ’ আততায়ীর হাজারো গুলিবৃষ্টি উপেক্ষা করে গটগটিয়ে তার দিকে হেঁটে বা দৌড়ে গিয়ে তাকে ঝপ্ করে ধরে ফেলত। তার হাতে হাতকড়া পরাত। আর তার পর তাকে টেনে নিয়ে এসে তুলে দিত পুলিশের হাতে।কয়েক দশক ধরে ডালাসের এই রোবট-পুলিশের কাজ ছিল বোমা খোঁজা আর সেই বোমা নিষ্ক্রিয় করে দেওয়া, আগুনের মোকাবিলা করা আর সশস্ত্র দুর্বৃত্তদের হাত থেকে অপহৃতদের ছাড়িয়ে আনা। কিন্তু তাকেই ব্যবহার করা হল পুলিশের দূরনিয়ন্ত্রিত ও স্বয়ংক্রিয় মারণাস্ত্র হিসেবে! পরে ইরাক যুদ্ধে দূরনিয়ন্ত্রিত বোমা নিষ্ক্রিয় করার কাজে ওই রোবটকে কাজে লাগিয়েছিল মার্কিন সেনাবাহিনীও। কিন্তু যেখানকার মূল নীতি ‘মারি অরি, পারি যে কৌশলে’, সেই ইরাকের রণক্ষেত্রেও মার্কিন সেনাবাহিনী কিন্তু শত্রুসেনা মারার জন্য কখনও ব্যবহার করেনি এই রোবটকে। এমনটাই জানিয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত মার্কিন সেনা-কর্তারা।নানা আকারের হয় তারা। কোনোটা কুকুরের হাড়ের মতো। কোনোটা-বা বিশাল একটা ট্রাকের মতো। আবার কোনোটা বসানো থাকে একটা ট্রলির উপর। তার ভেতরে থাকে ভিডিও ক্যামেরা। আর পুলিশ ও দুর্বৃত্ত, দু’পক্ষকেই পাঠানোর জন্য অডিও-সিগন্যালিং ব্যবস্থা।
তা সে যতই বড় অপরাধী হোক, কোনো নিরস্ত্র মানুষকে বধ করাটা কোনো যুদ্ধপ্রকৌশলেরই অঙ্গ হতে পারে না।
আর যেনতেন প্রকারের সমস্যা মেটানোর জন্য মানুষের বিরুদ্ধে কোনো যন্ত্রকে লেলিয়ে দেওয়াটা, আর যাই হোক, বীরত্বের পরিচয় হতে পারে কি ? সম্পাদনা : ইমরুল শাহেদ