গাড়ির সমাধিস্থল ডাম্পিং স্টেশন লতাপাতায় ঢেকে আছে কোটি কোটি টাকা মূল্যের গাড়ি
বিপ্লব বিশ্বাস : রাজধানীর রাস্তায় ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনের কারণে প্রতিদিনই কিছু যানবাহন বাজেয়াপ্ত করা হয়। এবং সেগুলো নিয়ে যাওয়া হয় ডাম্পিং স্টেশনে। ট্রাফিক বিভাগের কোনো স্থায়ী ডাম্পিং স্টেশন না থাকলেও প্রায় সবসময় গড়ে প্রায় হাজারখানেক গাড়ি থাকে এসব অস্থায়ী ডাম্পিং স্টেশনে। যেখানে বিভিন্ন মামলার আলামতের গাড়ি পড়ে থাকে বছরের পর বছর।
ঢাকার আগারগাঁওয়ে ট্রাফিক পুলিশের দুটি ডাম্পিং স্টেশনের প্রধান স্টেশনটি একটি সরকারি জায়গায়। এখানকার কিছু গাড়ি ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনের কারণে সাময়িক সময়ের জন্য রাখা হলেও অনেকগুলো আবার বছরের পর বছর পরে আছে। ফলে অনেক গাড়ির গা বেয়ে উঠেছে লতাপাতায়। রিকশা থেকে শুরু করে বড় ট্রাক, সব ধরনের যানবাহনই রয়েছে ডাম্পিং স্টেশনে। ট্রাফিক আইনে আটক অধিকাংশ গাড়ির মালিক বা চালক এসে নিয়ে গেলেও থেকে যায় বিভিন্ন থানা থেকে আসা মামলার আলামত।
কোনো কোনো গাড়ি এক দশকেরও বেশি সময় ধরে পড়ে আছে ডাম্পিং স্টেশনে। শ্যাওলা আর পাতায় এগুলো ঢেকে পড়েছে। পুলিশ বলছে, দিনে গড়ে ২০ থেকে ৩০ টি গাড়ি আসে ডাম্পিং স্টেশনে। প্রচুর পরিমাণে মোটরসাইকেল রয়েছে এই ডাম্পিং স্টেশনটিতে। যার অনেকগুলোই নম্বরবিহীন। বিশেষ অভিযানের সময় ডাম্পিং স্টেশনে গাড়ি আসার পরিমাণও বেড়ে যায়। আগারগাঁওয়ে অপর ডাম্পিং স্টেশনটি রাস্তার উপরেই। দুই লেন বিশিষ্ট রাস্তার একটি পাশের পুরোটি জুড়েই রয়েছে এই ডাম্পিং স্টেশন। মামলার আলামতের পাশাপাশি বেওয়ারিশ গাড়ির জায়গা হয় এখানে। দুর্ঘটনা কবলিত বিভিন্ন গাড়িও রয়েছে এসব স্টেশনে।
দীর্ঘসময় পড়ে থাকায় একদিকে যেমন গাড়ি নষ্ট হচ্ছে আরেকদিকে রাস্তার উপরে গাড়ি রাখায় ব্যাহত হচ্ছে যান চলাচল। ট্রাফিক বিভাগ বলছে, স্থায়ী কোনো ডাম্পিং স্টেশন না থাকায় তারা নিরুপায় হয়েই এসব স্থানে গাড়ি রাখতে বাধ্য হচ্ছেন।
আবার ডাম্পিং স্টেশনে রাখা অনেক দামি গাড়ির মূল্যবান পার্টস চলে যায় চোরের মাধ্যমে ধোলাইপাড়ে। সূত্রমতে, এই ডাম্পিং স্টেশনকে ঘিরে একদল চোরের আশ্রয় প্রশ্রয়ে রয়েছে কয়েকজন অসৎ পুলিশ সদস্য। এই ডাম্পিং স্টেশনের মূল্যবান গাড়ির তথ্য চোরদের দিলে তারা সেখান থেকে মূল্যবান গাড়ির পার্টস চুরি করে নিয়ে যা। পরে তা বিক্রি করে ওই সব অসৎ পুলিশ সদস্যের মধ্যে ভাগ বাটোয়ারা করে। এই চোরচক্রের সঙ্গে এক পুলিশ কর্মকর্তাসহ তিন সদস্য জড়িত বলে জানা গেছে। সম্পাদনা : সৈয়দ নূর-ই-আলম