প্রধানমন্ত্রীর অভিযোগে ভারতে ওয়ার্ড কাউন্সিলর গ্রেফতার
মাছুম বিল্লাহ : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অভিযোগে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের এক ওয়ার্ড কাউন্সিলরকে গ্রেফতার করেছে দেশটির পুলিশ। প্রধানমন্ত্রীর এক আত্মীয়ের কাছ থেকে চাঁদা দাবি করে তাকে হেনস্থা করেন কলকাতার বিধাননগর পৌরসভার ৪১নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও ক্ষমতাসীন তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়।
এ ঘটনার পর প্রধানমন্ত্রী ফোনে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে এ বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। এরপরই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ওই কাউন্সিলরকে গ্রেফতারের নির্দেশ দিলে মঙ্গলবার ভোররাতে কাউন্সিলর অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য পুলিশ। খবর দৈনিক যুগশঙ্খের।
পত্রিকাটির খবরে বলা হয়, গ্রেফতার ওয়ার্ড কাউন্সিলর অনিন্দ্যের বিরুদ্ধে কলকাতার বিধাননগর এলাকায় চাঁদাবাজির অনেক অভিযোগ রয়েছে। সম্প্রতি বাংলাদেশের প্রধামন্ত্রী শেখ হাসিনার আত্মীয় এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে চাঁদা দাবি করেন অনিন্দ্য। শুলশান হামলার পর প্রধানমন্ত্রীকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফোন করলে তাকে অনিন্দ্যর চাঁদা দাবির কথা জানিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন শেখ হাসিনা। এরপর মুখ্যমন্ত্রী মমতা তৎক্ষণাৎ ব্যবস্থা নিতে বলেন তার দলের নেতাদের। এরপরই তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
প্রশাসনিক সূত্রের বরাত দিয়ে যুগশঙ্খ জানায়, অনিন্দ্যের বিরুদ্ধে বিধাননগরের প্রবীণ বাসিন্দা সন্তোষ লোধ অভিযোগ এনেছেন, বিডি ব্লকে তার একটি বাড়ির সম্প্রসারণ করাতে গেলে অনিন্দ্যের নেতৃত্বে একদল যুবক এসে ওই বাড়ির সামনে রাখা ইমারতি দ্রব্য ছুড়ে ফেলে দেয় এবং ১২ লাখ টাকা দাবি করে। তা না-দিতে পারায় সন্তোষবাবুর বাড়ির কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়। তারপর থেকেই মস্তিষ্কের রক্তক্ষরণে সন্তোষ শয্যাশায়ী। এ ঘটনার মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়।
এদিকে এ ঘটনার পর বিরোধীরা ক্ষমতাসীন তৃণমূল কংগ্রেসের সমালোচনা করেছেন। পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান বলেছেন, ‘বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে অভিযোগ পেয়েই বাধ্য হয়ে অনিন্দ্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বিষয়টা আন্তর্জাতিক পর্যায়ের বলেই অনিন্দ্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তা না হলে অনিন্দ্যকে গ্রেফতার করা হতো না।
এ ঘটনার পর মুখ্যমন্ত্রী মমতাকে কটাক্ষ করে ফেসবুক-টুইটারে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী লেখেনÑ ‘তোলা আদায় বন্ধ করে দল তুলে দেবেন না দিদি। কারণ, তৃণমূল না-থাকলে তোলাশিল্পই উঠে যাবে’!
সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর কথায়, ‘একজন তোলাবাজকে গ্রেফতার করতে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের প্রয়োজন শুনে লজ্জা লাগে। রাজ্যের মাথা হেঁট হয়ে গিয়েছে, যখন জেনেছি প্রতিবেশী দেশের প্রধানমন্ত্রী অভিযোগ করেছেন!’