কারাগারেই মৃত্যু হলো সন্ত্রাসী কামাল পাশার
সুজন কৈরী : তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী কামাল পাশা গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার-২ এ মারা গেছেন। গতকাল বুধবার সকালে ৯০ বছরের সাজাপ্রাপ্ত এ আসামির মৃত্যু হয়। কামাল পাশা গুলশান হত্যাকা-ে নিহত জঙ্গি রোহান ইমতিয়াজের মামা ও আওয়ামী লীগ নেতা ইমতিয়াজ খান বাবুলের শ্যালক। রাজধানীর মোহাম্মদপুরে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে দুই ভাই জুয়েল ও রিবেলকে হত্যার মাধ্যমে আন্ডারওয়ার্ল্ডের ভয়ঙ্কর দানবে পরিণত হন কামাল পাশা।
কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২ এর জেল সুপার প্রশান্ত কুমার বণিক জানান, সাজাপ্রাপ্ত আসামি কামাল পাশা সকাল সাড়ে ৯টার দিকে হঠাৎ কারাগারে অসুস্থ হয়ে পড়েন। চিকিৎসার জন্য প্রথমে তাকে কারা হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি ঘটলে তাকে গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
কামাল পাশার বাবার নাম লিয়াকত আলী। গ্রামের বাড়ি টাঙ্গাইলের কালিহাতির ঝাপড়াজানে। ১৯৯৭ সালের এপ্রিলে আগারগাঁওয়ে শামিম ও মামুনকে হত্যার মাধ্যমে এক সময়ের ভাড়াটে সন্ত্রাসী কামাল পাশার হাতেখড়ি হয়। আরেক শীর্ষ সন্ত্রাসী বিকাশের নির্দেশে এই জোড়া খুনে কিলার হিসেবে যোগ দেন তিনি। এরপর ২০০০ সালের ৫ মে সকালে মোহাম্মদপুরের কাজী নজরুল ইসলাম রোডের বাসিন্দা আপন দুই ভাইকে নির্মমভাবে হত্যার মাধ্যমে লাইমলাইটে আসেন কামাল পাশা।
১৯৯৭ সালের ২২ মে দিনদুপুরে কামাল পাশা এবং তার সহযোগী রাশেদ মোস্তফা ওরফে রতন পিজি হাসপাতালে ঠিকাদার আশিক ইকবালকে গুলি করে হত্যা করে। হত্যাকা-ের পর তারা শত শত লোকের সামনে পিস্তল উঁচিয়ে একটি বেবিট্যাক্সি নিয়ে পালানোর চেষ্টা করলে সোনারগাঁও হোটেলের সামনে এক সার্জেন্ট জীবনবাজি রেখে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় তাদের আটক করেন। কিন্তু, জামিন পেয়ে বেরিয়ে আসেন কামাল পাশা। বিএনপি জোট সরকারের আমলে শীর্ষ ২৩ সন্ত্রাসীর তালিকায় কামাল পাশাকে ধরিয়ে দিতে এক লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা করা হয়। পরে কামাল পাশার বাবাই ছেলেকে পুলিশের হাতে তুলে দিয়ে আইনের প্রতি শ্রদ্ধা দেখান।
গ্রেফতারের পর মোহাম্মদপুর ও রমনা থানার দুটি পৃথক হত্যা মামলায় এবং তেজগাঁও থানার একটি অস্ত্র মামলায় আদালত তাকে ৯০ বছরের সশ্রম কারাদ- দেন। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুর থানায় একটি এবং তেজগাঁও থানায় দুটি মামলা বিচারাধীন রয়েছে। তাকে ২০০৫ সালের ২৬ আগস্ট গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২ এ স্থানান্তর করা হয়। সম্পাদনা: পরাগ মাঝি