রিভিউ শুনানি হতে পারে চলতি সপ্তাহে প্রধান বিচারপতির হস্তক্ষেপে মুক্তির আশায় শতবর্ষী বৃদ্ধা
মাহমুদুল আলম : প্রধান বিচারপতির হস্তক্ষেপে মুক্তির আশায় রিভিউ আবেদন করেছেন যাবজ্জীবন কারাদ- ভোগরত শতবর্ষী বৃদ্ধা অহিদুন্নেছা। গত ৩০ জুন সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় তিনি এই আবেদন করেন বলে নিশ্চিত করেছেন প্রধান বিচারপতির একান্ত সচিব মোহাম্মদ আনিসুর রহমান। এই প্রতিবেদককে একান্ত সচিব বলেন, ওই বৃদ্ধা তার দ- মওকুফ চেয়ে কারা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে রিভিউ আবেদন করেছেন। স্বল্প সময়ের মধ্যে অর্থাৎ আগামী রোববার থেকে চলতি সপ্তাহের যেকোনো দিনই মামলাটির শুনানি হতে পারে বলে জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত এই নারী এরইমধ্যে ২০ বছর জেল খেটেছেন। গত ২৯ জুন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা কাশিমপুর কারাগার পরিদর্শনে গেলে নিজের মুক্তির কথা বলেন ওহিদুন্নেছা। শত বছরের একজন মানুষ সমাজের কোনো ক্ষতি করতে পারে না। তাই তার মুক্তির উদ্যোগ নিতে আইনি ব্যবস্থা করতে বলেন প্রধান বিচারপতি। এরপর দিনই জেল কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে রিভিউ আবেদন করেন বৃদ্ধা।
একটি হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত এ নারী এতোদিন কারা অন্ধকারে মৃত্যুর প্রহর গুণছিলেন। কিন্তু হঠাৎ তিনি আশার আলো দেখছেন।
প্রধান বিচারপতির সাক্ষাৎ পেয়ে তিনি জানান, তার বয়স এখন ১০০ বছর। আইনানুযায়ী খাটতে হবে আরও ১০ বছরের জেল। চোখে দেখেন না, একা চলা ফেরাও করতে পারেন না। তাই জীবনের শেষ বেলায় মুক্তি চান প্রধান বিচারপতির কাছে। অহিদুন্নেছার দাবি, মিথ্যা মামলায় এতো বছর জেল খাটছেন তিনি। আপিল করতে চেয়েও পারেননি পরিবারের সব পুরুষ সদস্য একই মামলায় জেলে থাকায়।
বৃদ্ধার কথা শুনে প্রধান বিচারপতি জেল সুপারকে নির্দেশ দেন মামলার রিভিউয়ের ব্যবস্থা করতে। ১৯৯৭ সালে দায়ের হওয়া একটি হত্যা মামলায় চাঁদপুর জেলা ও দায়রা জজ একই পরিবারের ১৬ আসামির মধ্যে ১২ জনকে মৃত্যুদ- ও ৪ জনকে যাবজ্জীবন কারাদ- দেয়। এর বিরুদ্ধে আপিল করলে, তা খারিজ করে হাইকোর্ট। পরে নির্ধারিত সময়ের ৪৭০ দিন পর হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করলে তাও খারিজ হয়ে যায়। ফলে কারাগারই হয় অহিদুন্নেছার শেষ ঠিকানা। সেখানে থেকেই হারান স্বামী ও সন্তানকে। সম্পাদনা : পরাগ মাঝি