রিপাবলিকান কনভেনশনের পর ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা বেড়েছে
আবু সাইদ: হোয়াইট হাউজ দখলের দৌড়ে এগিয়ে গেলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। রিপাবলিকান কনভেনশন শেষ, আর ডেমোক্রেট কনভেনশন শুরু হবে মঙ্গলবার এমন অবস্থায় ৪৪ শতাংশ সমর্থন নিয়ে ট্রাম্প হিলারি থেকে ৬ পয়েন্ট এগিয়ে আছেন। এ জরিপ করা হয়েছে চারজন প্রতিদ্বন্দ্বী হিসাবে রেখে। বাকি দুজনের মধ্যে গ্রে জনসন পেয়েছেন ৯ শতাংশ সমর্থন আর জিল স্টেইন কে সমর্থন করেছে ৩ শতাংশ ভোটার। আর ট্রাম্প-হিলারি প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ট্রাম্পের পক্ষে ৪৮ শতাংশ জনমত, হিলারির পক্ষে ৪৫ শতাংশ। সিএনএন
উল্লেখ্য যে, কনভেনশন পরবর্তী জরিপের ফলাফল ২০০০ সাল থেকে খুব একটা প্রভাব ফেলেনি। ওই সময়, নিজ নিজ দলের কনভেনশনের পর আল গোরে ও জর্জ ডব্লিও বুশের জনপ্রিয়তা বেড়েছিল ৮ শতাংশ করে। তার পর তারা তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন এবং শেষ পর্যন্ত ফলাফল পেতে আদালত পর্যন্ত যেতে হয়।
সিএনএন/ওআরসি জরিপে দেখা গেছে ২০১৫ সালের পর থেকে হিলারির বিপক্ষে ট্রাম্প সবচেয়ে ভালো অবস্থানে আছেন। জরিপ মতে নিরপেক্ষ ভোটারদের মধ্যে ট্রাম্পের সমর্থন বেড়েছে। ৪৩ শতাংশ দলবর্হিভূত ভোটার বলছে ক্লিভল্যান্ড কনভেনশন তাদেরকে ট্রাম্পের প্রতি সমর্থন দিতে অনুপ্রাণিত করেছে। ৪১ শতাংশ এখনও নীরব। কনভেনশন পূর্ব অবস্থায় দল নিরপেক্ষ ভোটারদের ৩৪ শতাংশ হিলারি ক্লিন্পনের পক্ষে ছিল। আর ট্রাম্পের পক্ষে ছিল ৩১ শতাংশ। জনসনের সমর্থক ছিল ২২ শতাং আর স্টেইনের পক্ষে ছিল ১০ শতাংশ। এখন ৪৬ শতাংশ বলছে তারা ট্রাম্পের পক্ষে। অন্যদিকে হিলারির সমর্থক ২৮ শতাংশ, জনসনকে সমর্থন করছে ১৫ শতাংশ এবং স্টেইন সমর্থন পাচ্ছেন ৪ শতাংশের।
জরিপে উঠে এসেছে শিক্ষা-বিভক্তির চিত্র। কলেজ ডিগ্রি আছে এম শ্বেতাঙ্গ ভোটারদের মধ্যে হিলারির সমর্থক সংখ্যা কম নয়। কনভেনশন পূর্ব অবস্থায় ট্রাম্প ও হিলারির সমর্থন ছিল ৪০ শতাংশ করে। কনভেনশনের পর দেখা গেছে এদের মধ্যে হিলারিকে সমর্থন করে ৪৪ শতাংশ আর ট্রাম্পের সমর্থক ৩৯ শতাংশ। ট্রাম্প আশা করছেন কলেজ ডিগ্রি নেই এমন ভোটারদের সমর্থন পাবেন তিনি। জরিপের আগে এ গ্রুপের ভোটারদের ৫১ শতাংশ ছিল হিলারির সমর্থক আর ট্রাম্পের সমর্থক ছিল ৩১ শতাংশ। কনভেনশনের পর এ হিসাব উল্টে গেছে। এখন ট্রাম্পের সমর্থক ৬১ শতাংশ আর হিলারির সমর্থক ২৩ শতাংশ।
সার্বিক সমর্থন বাড়ার পাশাপাশি ট্রাম্পের ভাবমূর্তি রেটিংও বেড়েছে। ৪৬ শতাংশ ভোটার মনে করে তারা ট্রাম্পের মধ্যে ইতিবাচক দিক দেখছেন। কনভেনশনে আগে এ হার ছিল ৩৯ শতাংশ। পররাষ্ট্র নীতি নিয়্ওে ট্রাম্পের প্রতি আস্থা বেড়েছে। কনভেনশনের আগে এ রেটিং ছিল ৫০, এখন ৫৭। কনভেনশনের পর ৫২ শতাংশ মনে করছে ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসাবে ভালো। আর ৪৪ শতাংশ হিলারির প্রতি অনুরক্ত।
ট্রাম্পকে সৎ ও বিশ্বাসযোগ মনে করে ৪৩ শতাংশ ভোটার, কনভেনশনের আগে এ হার ছিল ৩৮ শতাংশ। ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হলে গর্ববোধ করবেন এমন ভোটারের হার ৩২ শতাংশ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৯ শতাংশে। ট্রাম্প সাধারণ মানুষের কথা ভাবছেন, কনভেনশনে আগে ৩৭ শতাংশ এধারণা পোষণ করতো, এখন এ হার ৪৬ শতাংশ। রিপাবলিকান কনভেনশনের সমালোচনায় মুখর ডেমোক্র্যাট শিবির। এর পরও ৪২ শতাংশ ভোটার মনে করে ট্রাম্প জাতির বিভক্তি চাননা, ঐক্য চান। কনভেনশনের আগে এ হার ছিল ৩৪ শতাংশ।
এ জরিপেরে হিসাব অনুযায়ী হিলারি ক্লিন্টন-এর ভাবমূর্তি সমস্যায় পড়েছে। সিএনএন/ওআরসি জরিপ অনুযায়ী ৬৮ শতাংশ মানুষের মনে হিলারি ক্লিন্টনের সততা ও বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন আছে।
রিপাবলিকান কনভেনশনের অনেক ভালোর মধ্যেও কিছু খারাপ নির্দেশক আছে। প্রতি ১০ জনের ৬ জন মনে করে ( কমবেশি ৫৮ শতাংশ) রিপাবলিকানদের কনভেনশন অনুষ্ঠানে অনেক দেরি হয়েছে। ১৮ শতাংশ মানুষ ট্রাম্পের বক্তৃতাকে ভয়ানক বলে উল্লেখ করেছে। ৪৮ শতাংশ বলেছে বক্তৃতায় তাদের মনোবাসনার প্রতিফলন ঘটেনি। সম্পাদনা : রাশিদ রিয়াজ