ভ্যাট খেলাপির বিরুদ্ধে অভিযান শুরু ৭৭,৫৮৭ ভ্যাট আইডির রিটার্ন দেয় ১১ হাজার
জাফর আহমদ : কাস্টম কমিশনারেট পশ্চিম অফিসের অধীনের ৭৭,৫৮৭টি নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ভ্যাট প্রতিবেদন জমা দেয় মাত্র ১১ হাজার। বাকি ৬৮ হাজার প্রতিষ্ঠানই ভ্যাট প্রতিবেদন জমা দেয় না। একারণে সরকারের দেওয়া রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য অর্জনে এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া শুরু হয়েছে। পাশাপাশি নতুন প্রতিষ্ঠান খুঁজে বের করার জন্য মাঠে নেমেছে কাস্টম, এক্সাইজ ভ্যাট ও কমিশনারেটের পশ্চিম অফিস। গতকাল রোববার মিরপুরে প্রতিষ্ঠানটির নতুন কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে কমিশনার মো. মতিউর রহমান এসব তথ্য তুলে ধরেন। এ সময় প্রতিষ্ঠানের অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
মতিউর রহমান বলেন, বিদায়ী বছরে প্রতিষ্ঠানটি আগের বছরের চেয়ে ৪২০ কোটি টাকা বেশি মূসক আদায় করেছে। বিদায়ী বছরের আদায় হয়েছে ১,৩৫৮ কোটি টাকা। এর আগের বছর আদায় হয়েছিল ৯৩৮ কোটি টাকা। প্রবৃদ্ধির হার দাঁড়িয়েছে ৪৫ শতাংশ। সরকারের চলমান উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে অর্থের ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণে প্রগ্রেসিভ রাজস্বনীতি গ্রহণ করা হয়েছে। এ ধারায় চলতি অর্থবছরে ভ্যাট, মূসক ও এক্সাইজ আরও বেশি পরিমাণে আদায় হবে।
তিনি বলেন, ৭৭,৫৮৭টি ভ্যাট আইডি থাকার পরও ভ্যাট দেয় মাত্র ১১ হাজার। যেসব প্রতিষ্ঠান ভ্যাট দেয় না তাদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে নামা হচ্ছে। পণ্য উৎপাদন বা রপ্তানি করছে কিন্তু ভ্যাট দিচ্ছে না। তাদের খুঁজে বের করে ভ্যাট আদায়ের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ক্রমান্বয়ে এসব প্রতিষ্ঠানের ভ্যাট আইডি সাময়িকভাবে স্থগিত ও বন্ধ করে দেওয়া হবে।
২০১৭-১৮ অর্থবছরের থেকে ভ্যাট আইন চালু হবে। এ জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো তৈরি হচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন ভ্যাট কমিশনার। এ জন্য ভ্যাট অফিস ডিজিটালাইজড করা, আইন প্রতিপালন করার জন্য কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া ও ভ্যাটদাতাদের সচেতনতার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি নিয়মিত করদাতাদের প্রণোদনা হিসাবে ভ্যাট অফিসের পক্ষ থেকে নিবন্ধনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, নিয়মিত করদাতারা ভ্যাট অফিসের লোকদের ভয় পায় না। ভ্যাট খেলাপিরাই ভ্যাট অফিসের লোকজনকে ভয় পায়। ভ্যাট অফিসের অনুসন্ধানে এমন চিত্র পাওয়া গেছে। ভ্যাট নিয়ে মানুষের ভীতি দূর করে ভ্যাট আইন সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করার জন্য নিয়মিত মতবিনিময়, সেমিনার ও প্রচারণামূলক কার্যক্রম চলছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
ইলেকট্রনিকস ক্যাশ রেজিস্ট্রেশন (ইসিআর) কার্যক্রম জোরদার হচ্ছে বলে জানানো হয়। এক বছর আগে ইসিআর বেইজ ভ্যাট কার্যক্রম ছিল ১৯৬টি। বর্তমানে তা দাঁড়িয়েছে ৩১৯টিতে। পাশাপাশি আরও প্রায় ১৫৫টি প্রতিষ্ঠানকে চিহ্নিত করা হয়েছে, যারা ভ্যাট প্রদানের ক্ষেত্রে ইসিআর ব্যবহার করবেন। এ জন্য জরিপ কার্যক্রম চলমান আছে।
রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে অন্যতম প্রতিবন্ধকতা মামলা। সাম্প্রতিক সময়ে এডিআরসহ বিভিন্ন কার্যক্রমের মাধ্যমে ১০ কোটি ১৬ লাখ টাকা বকেয়া আদায় হয়েছে। কর ফাঁকির অভিযোগে রাজস্ব বোর্ডের পক্ষ থেকে ৫৯টি মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন এ ভ্যাট কমিশনার। এসব উদ্যোগের ফলে কর ফাঁকির হার কমেছে। সম্পাদনা : সৈয়দ নূর-ই-আলম