আইএস জঙ্গির জানাজা পড়বেন না ফরাসি মুসলমানরা
লিহান লিমা : নিহত আইএস জঙ্গির জানাজা পড়তে এবং তাকে সমাহিত করতে প্রত্যাখ্যান করেছেন ফরাসি মুসলমানরা। স্থানীয় মুসলিম সংস্থা জানায়, নরম্যান্ডোর ক্যাথলিক যাজককে হত্যাকারী আইএসের সন্ত্রাসী, আর আইএস ইসলামের শত্রু। সিএনএন
স্থানীয় মুসলিম কালচারাল অ্যাসোসিয়েশন-এর সভাপতি মোহাম্মদ কারবেলিয়া বলেন, আবদেল কারমিসি (১৯) আইএসের সদস্য, আমি এবং স্থানীয় কোনো ইমাম তার জানাজা পড়ব না। মুসলমানরা তার দাফনে অংশগ্রহণ করবেন না। ফরাসি মুসলিমদের এই সিদ্ধান্তে হত্যাকারী আবদেল কারমিসির লাশ অনিশ্চয়তায় রয়েছে। স্থানীয় মেয়র তার লাশের দাফনের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন।
এর আগে ২৬ জুলাই ফ্রান্সের নরম্যান্ডের সতেরশ শতকে নির্মিত সেন্ট এথিনি ডি- রৌভারি চার্চে ৫ জনকে জিম্মি করে আইএস জঙ্গি আবদেল কারমিসি ও আবদেল মালেক পিতিতজান (১৯)। এরপর চার্চের যাজক জ্যাকুস হ্যামেলকে (৮৬) ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে তারা। পালিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশের গুলিতে নিহত হয় দুই জঙ্গি। সম্পাদনা : রাশিদ রিয়াজ
রিকু আমির : রাজধানীর কল্যাণপুরের জঙ্গি আস্তানা থেকে জব্দ করা কালো বর্ণের ও আরবি লেখা একটি পতাকার সঙ্গে গুলশানে হামলাকারীদের পতাকার মিল পাওয়ায় তদন্ত সংশ্লিষ্টরা নিশ্চিত, কল্যাণপুরের জঙ্গিদের সঙ্গে গুলশানের জঙ্গিদের যোগাযোগ ছিল।
গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলার পর জঙ্গিদের ছবি কথিত আইএসের ‘আমাক’ নিউজ এজেন্সিতে প্রকাশিত হয়েছিল। জঙ্গিদের ছবির পেছনে ব্যাকগ্রাউন্ড হিসাবে ছিল, কালো বর্ণের আরবি লেখা পতাকা।
গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানান, তারা বিশেষজ্ঞদের দিয়ে পরীক্ষা করে দেখেছেন, দুটি পতাকা একই। গুলশান হামলার আগে জঙ্গিরা যে পতাকা পেছনে রেখে ছবি তুলেছিলেন, কল্যাণপুরেও সেই পতাকা পেছনে রেখেই ছবি তুলেছেন তারা। এতে প্রমাণিত হয়, গুলশান হামলায় জড়িতদের সঙ্গে কল্যাণপুরের জঙ্গিদের যোগাযোগ ছিল।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের কর্মকর্তারা বলেছেন, গুলশান-শোলাকিয়ার হামলা ও কল্যাণপুরের জঙ্গি আস্তানায় অভিযানে নিহত জঙ্গিরা একই গ্রুপের। তাদের মাস্টারমাইন্ডও একই ব্যক্তি। একই ব্যক্তির কাছ থেকে প্রশিক্ষণও নিয়েছেন তারা। গুলশানের হামলার পর আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানের মুখে তারা আগের আস্তানা ছেড়ে কল্যাণপুরের এই বাসায় উঠেন। বাসা পরিবর্তনের সময় জঙ্গিরা সেই পতাকাও সঙ্গে নিয়ে এসেছিলেন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, আইএসের অনুসারী হিসাবে জেএমবির এই ভগ্নাংশটি নিজেদের আইএসের লোক বলে প্রমাণ করার জন্য চেষ্টা করেছেন। এ কারণে আইএসের পতাকার পাশাপাশি তাদের অপারেশনাল পোশাকও ব্যবহার করেছেন। বড় কোনও হামলার পরিকল্পনা করে এসব ছবি তুলে তারা গোপনে সেই ছবি আইএসের কথিত আমাক এজেন্সির কাছে পাঠিয়ে দিয়েছেন, যাতে হামলার পরপরই আইএসের মাধ্যমে এর দায় স্বীকার করা যায়। এছাড়া দাবিক ম্যাগাজিনের মাধ্যমে ছবি প্রকাশ করে সারা দুনিয়ায় ছড়িয়েও দেওয়া যায়।
কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের কর্মকর্তারা জানান, এগুলো হলো দেশিয় জঙ্গিদের আন্তর্জাতিক হয়ে উঠার কৌশল। আইএসের পতাকা ব্যবহার করলে আইএস সদস্য হিসাবে যাতে তাদের গণ্য করা হয়। সম্পাদনা: এম আলম