দল বদলালেও মন বদলায় না
এম কবির : দেশের জাতীয় নেতারা বিভন্ন সময় নিজের প্রয়োজনে দল বদলান। কখনো বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে. আওয়ামী লীগ থেকে বিএনপিতে আবার জাতীয় পার্টি ও জামায়াত থেকে বিএনপি ও আওয়ামী লীগে যোগ দিচ্ছেন। বর্তমানে আওয়ামী লীগে যোগদানের হিড়িক পড়েছে।
জামায়াত ও বিএনপি থেকে বহু নেতা আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছেন। নীতি ও আদর্শের বিপরীতমুখী অবস্থান সত্ত্বেও জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীদের কাছে টানছে আওয়ামী লীগ। চলতি বছর সারা দেশে জামায়াতে ইসলামীর প্রায় পাঁচ হাজার নেতাকর্মী আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছেন। বিএনপিসহ আরও কয়েকটি দল ধরলে সংখ্যাটি প্রায় ২০ হাজার। নেতারা দল বদলালেও মন বদলাতে পারেননি।
একসময় সুবিদ আলী ভূইয়া বিএনপির মতাদর্শে বিশ্বাসী ছিলেন। তাই তিনি জিয়াকে প্রথম রাষ্ট্রপতি বলেছেন। খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান জিয়াকে প্রথম রাষ্ট্রপতি বলায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তুলোধুনো করেছেন আওয়ামী লীগের নেতারা। আওয়ামী নেতা সুবিদ আলী ভূইয়া জিয়াকে প্রথম রাষ্ট্রপতি বলেছেন। এবার কি করবে আওয়ামী লীগ?
বর্তমান সংসদে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি মেজর জেনারেল (অব.) সুবিদ আলী। তিনি বিএনপির আমলে সশস্ত্র বাহিনীর প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার ছিলেন। চাকরি থেকে অবসর নেয়ার পর বিএনপির মনোনয়ন চেয়েও পাননি। ২০০১ সালে কুমিল্লা-১ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে হেরে যান। এরপর তিনি আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে ২০০৮ সালে বিএনপির প্রভাবশালী নেতা খন্দকার মোশাররফ হোসেনকে হারিয়ে সংসদ সদস্য হন।
নবম সংসদে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি ছিলেন তিনি। এবার দশম সংসদে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়ে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত কমিটির সভাপতি হন তিনি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি নিয়ে সুবিদ আলী ১৯৬৬ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়েছিলেন। ১৯৬৯ সালে ক্যাপ্টেন হিসেবে চট্টগ্রামে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে বদলি হন। যেখানে জিয়াউর রহমানও ছিলেন। একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের শুরুতে জিয়ার অধীনেই যুদ্ধ করেছিলেন সুবিদ আলী।
চট্টগ্রামের সাবেক মেয়র মনজুর আলম। ২০০৯ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে ২০১০ সালের চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দল থেকে মেয়র প্রার্থীর মনোনয়ন চান। কিন্তু এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীকে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করা হয়। যোগ দেন বিএনপিতে, তখন বিএনপিও মনজুর আলমকে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করে। কিন্তু তিনি জিয়ার আদর্শ কখনো মেনে নিতে পারেননি। আন্দোলন সংগ্রাম নিয়ে বিএনপি নেতাদের সঙ্গে তার মনোমালিন্য হয়। তখন থেকেই ঠিক করেন তিনি আবার আওয়ামী লীগে ফিরে যাবেন। যে কথা সেই কাজ। ১৫ আগস্ট ঘোষণা দেন আবার আওয়ামী লীগে ফিরে যাওয়ার।
মনজুর আলম বাংলাদেশ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমি আওয়ামী পরিবারেরই সন্তান। আমার রাজনৈতিক আদর্শ বঙ্গবন্ধু। আমার প্রধান ধর্ম হচ্ছে মানুষের সেবা করা, জনগণের কল্যাণ করা। তাই বৃহৎ পরিসরে জনসেবা করতে গিয়েই আমি অন্য দলের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলাম।’ বঙ্গবন্ধুকে মনেপ্রাণে ধারণ করেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছাকে আমার মায়ের মর্যাদা দিয়েছি। আগামী প্রজন্মও বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতি করবে। সম্পাদনা : রাশিদ রিয়াজ