২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা ‘রায় হলে তারেককে দেশে ফেরানো সহজ হবে’
নাশরাত আর্শিয়ানা চৌধুরী : বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেশে ফেরত আনার ব্যাপারে সরকার সব ধরনের উদ্যোগ নিয়েছে। এ ব্যাপারে সরকার অত্যন্ত গোপনীয়তাও অবলম্বন করছে। তাকে ফেরত আনার জন্য সরকার কূটনীতিক ও রাজনৈতিক তৎপরতাও চালিয়ে যাচ্ছে। সংশ্লিষ্ট একজন মন্ত্রী বলেন, তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনা হবে, এটা আমরা নিশ্চিত। তাকে আমরা ফিরিয়েও আনতে পারব। ২১ আগস্ট মামলার রায় হলে তাকে দেশে ফিরিয়ে আনা সহজ হবে। একজন পলাতক আসামিকে ব্রিটিশ সরকারের উচিত হবে না এভাবে প্রশ্রয় দেওয়া।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানায়, তারেক রহমানের ব্যাপারে সরকার থেকে উদ্যোগ নেওয়ার পর এখন আর তিনি গত বছর থেকে ইউরোপের বাইরে কোনো দেশে যেতে পারছেন না। তাকে ফিরিয়ে আনার জন্য ব্রিটিশ সরকারের কাছে ও তাদের এ সংক্রান্ত বিষয়ে যারা কাজ করছেন তাদের বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে। তিনি যে বর্তমান প্রধানমন্ত্রীকে গ্রেনেড হামলা করিয়েছেন এ ব্যাপারে সাক্ষীরা আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন। তিনি ইংল্যান্ডে যাওয়ার পর তার এ ধরনের অপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার কথা গোপন করে সেখানে সরকারের ব্যাপারে মিথ্যে তথ্য দিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন, সেই সব নথিপত্র তথ্য সেখানে পাঠানো হয়েছে। ওই দেশের সরকার বিষয়গুলো খতিয়ে দেখছে। তারাও আমাদের সহায়তা করবেন বলে আশ্বাস পাওয়া গেছে।
আইন মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানায়, বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা মামলার আসামি তারেক রহমান। এ মামলার বিচার কাজ শেষ হওয়ার পথে। এ বিচার দ্রুতই শেষ হবে। এ বিচার কাজ আরও আগেই শেষ হয়ে যেত। কিন্তু বিএনপি ও জামায়াত জোট যখন ক্ষমতায় ছিল তখন তারা বিষয়টি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করে। সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে এ মামলার তদন্ত শেষ করা হয় ও বিচার কাজ শুরু হয়। ওই সময়ে মামলার আসামি ছিল ২২ জন। পরে অবশ্য ওই ঘটনার পুনঃতদন্ত করে এর আগের সরকার। সেই সময়ে সম্পূরক অভিযোগপত্রে আসামি করা হয় ২২ জনের বাইরে আরও ৩০ জনকে। মোট ৫২ জন এ মামলার আসামি। ওই মামলার একজন আসামি তারেক রহমান।
আইন মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানায়, এ মামলার আসামিদের মধ্যে যারা বিদেশে আছেন তাদের ফিরিয়ে আনার জন্য চেষ্টা চলছে। আর দেশে যারা আছেন তাদের মধ্যে কারাগারে আছেন ও জামিনে রয়েছেন ৩৩ জন।
কবে নাগাদ এ মামলার রায় হতে পারে বলে আশা করছেন জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, আমরা আশাবাদী দ্রুতই রায় হবে। তবে আমার দিনক্ষণ জানা নেই।
তারেক রহমানের বিরুদ্ধে এর আগে দুদকের মামলায় শাস্তি দিয়েছেন আদালত। সেই সঙ্গে জরিমানাও করেছেন। ওই রায়ের পর তার ব্যাপারে কি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা তার বিরুদ্ধে আদালতের দেওয়া ওই রায়ও কার্যকর করার জন্য উদ্যোগ নিব। পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ হলে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তারেক রহমান ও তার ঘনিষ্ঠজনদের অভিযোগ সরকার রাজনৈতিক বিবেচনায় তার ব্যাপারে ব্যবস্থা নিচ্ছেন এ প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, সরকার রাজনৈতিক বিবেচনায় কোনো কাজ করছে না। তিনি মামলার আসামি। আদালত সব সাক্ষ্য, প্রমাণ বিবেচনা করেই রায় দিয়েছেন। আদালতের প্রতি সবার সম্মান রাখতে হবে ও আস্থা রাখতে হবে। বিএনপি সব ব্যাপারকে রাজনৈতিকভাবে দেখলে হবে না। তারা অপরাধ করবেন আর সরকার ব্যবস্থা নিলেই সেটা রাজনৈতিক হয়ে যাবে। তারা যে অপরাধ করেছেন এটা দেশবাসী দেখেছেন। আমরা তাকে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিয়েছি। আশা করি তাদের ফিরিয়ে আনতে পারব।
তিনি বলেন, তারেক রহমানের ফিরিয়ে আনার বিষয়টি একটু কঠিন হচ্ছে কারণ তারা নানাভাবে মিথ্যে তথ্য দিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করছেন। আমাদের আবার জানাতে হচ্ছে সত্যি কথাটি। এভাবে আমরা আশা করছি বেশিদিন তারা মিথ্যে বলে পার পাবে না। সম্পাদনা : সুমন ইসলাম