৪৮ ঘণ্টার মধ্যে চামড়ার মূল্য নির্ধারণের নির্দেশ
হাসান আরিফ: বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ কোরবানির ঈদের কাঁচা চামড়ার মূল্য নির্ধারণ করতে ব্যবসায়ীদের ৪৮ ঘণ্টার সময় দিয়েছে। এ সময়ের মধ্যে মূল্য নির্ধারণ করে তা বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানিয়ে দিতে নির্দেশ দিয়েছেন। গতকাল মন্ত্রণালয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, কাঁচা চামড়ার মূল্য নির্ধারণ করা না হলে ব্যবসায়ী, ক্রেতা, বিক্রেতা কেউই লাভবান হবেন না। তাই আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তা নির্ধারণ করতে ব্যবসায়ীদের বলা হয়েছে।
মূল্য কত নির্ধারণ করা হবে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, একটা বাস্তবসম্মত মূল্য তো নির্ধারণ করতে হবে। জনগণ যাতে চামড়ার ন্যায্য মূল্য পায়, আবার চামড়া শিল্পের ব্যবসায়ীরা যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে।
বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শাহীন আহমেদ বলেন, গত বছর ঢাকায় গরুর কাঁচা চামড়ার প্রতি বর্গফুট ৫০ থেকে ৫৫ টাকা আর ঢাকার বাইরে গরুর কাঁচা চামড়ার মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছিল ৪৫ থেকে ৫০ টাকা।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, প্রতিবছরই চামড়া নিয়ে খুচরা বিক্রেতাদের অভিযোগ ওঠে। সরকার কাউকে সিন্ডিকেট করতে দেবে না বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি। ট্যানারি মালিকদের নেতা শাহীন আন্তর্জাতিক বাজারে চামড়ার দাম ‘অনেক কমে গেছে’ জানিয়ে তা বিবেচনায় রেখে দাম নির্ধারণের উপর জোর দেন। আগে কোনোদিন এমন অবস্থা আসেনি এ শিল্পে। গত বছরের প্রায় ৩৫ শতাংশ চামড়া এখনো মজুত রয়েছে।
পরিবেশ দূষণের কারণে ঢাকার হাজারীবাগ থেকে ট্যানারিগুলো সাভারে চামড়া শিল্প নগরীতে এ বছরই সরে যেতে বাধ্য করেছে সরকার। ব্যবসায়ী মাহিন এ সময়ে হাজারীবাগের চামড়া আনা-নেওয়ার সুযোগ দিতে সরকারকে দাবি জানান। এ বছর কাঁচা চামড়া নষ্ট হওয়ার শঙ্কাও প্রকাশ করেন তিনি। এ বছর লবণের দাম বেশি। সে কারণে মৌসুমী ব্যবসায়ীরা চামড়ায় লবণ কম দেবে। ফলে অনেক চামড়া নষ্ট হতে পারে।
ব্যবসায়ীরা বলেন, একটি মাঝারি আকারের গরুর চামড়ায় ৫ থেকে ৬ কেজি লবণ এবং বড় আকারের গরুর চামড়ায় ৮ থেকে ১০ কেজি লবণ দিতে হয়। প্রতিটি ছাগলের চামড়ায় ৩ থেকে ৪ কেজি এবং মহিষের চামড়ায় ১০ থেকে ১৫ কেজি লবণ লাগে। এবারের ঈদ ভাদ্র মাসের গরমে হওয়ায় ৫ থেকে ৬ ঘণ্টার মধ্যে চামড়ায় লবণ দেওয়ার আহ্বান জানান ব্যবসায়ীরা।
মন্ত্রী বলেন, দাম যাতে বাজারে না বাড়ে সেজন্য সরকার দেড় লাখ মেট্রিক টন লবণ আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে, মঙ্গলবারই এ লবণের জন্য এলসি খোলা হবে। ব্যবসায়ীদের প্রণোদনার আশ্বাস দিয়ে তিনি বলেন, সাভার থেকে ‘ক্রাস্ট ও ফিনিশড’ লেদার যারা রপ্তানি করবে, সেসব ব্যবসায়ীদের ৫ শতাংশ নগদ সহায়তা প্রদান করা হবে। নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে, শিগগিরই অর্থ বিভাগ থেকে এ বিষয়ে সার্কুলার জারি করা হবে।
এ বছর প্রায় ৩৩ লাখ গরু ও মহিষ কোরবানির ঈদের জন্য তৈরি করা আছে জানিয়ে তোফায়েল বলেন, যা আমাদের চাহিদার সমান। আমাদের অন্য দেশ থেকে কোনো গরু আনতে হবে না। সম্পাদনা: দেলওয়ার হোসাইন