হিলারির মেইল বিতর্ক, শুরু থেকে শেষ
রাশিদ রিয়াজ: ২০০৯ সালের ১৩ জানুয়ারি হিলারি ক্লিনটনের সহায়তাকারী জাস্টিন কুপার ক্লিনটনইমেইল ডটকম ডোমেইনটি খোলেন।
একই বছর ২ ফেব্রুয়ারি হিলারি ক্লিনটন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন।
এরপরের মাস ১৮ মার্চ হিলারি ক্লিনটন তার ব্ল্যাকবেরি ফোনে ইমেইল অ্যাকাউন্ট ব্যবহার বন্ধ করেন এবং এইচডিআর২২@ক্লিনটনইমেইল ডটকম নামে নতুন আরেকটি অ্যাকাউন্ট খোলেন। এর ডোমেইনটি তার ব্যক্তিগত ইমেইল সার্ভার থেকে খুলে দেন তার সহায়তাকারী ব্রায়ান ব্রায়ান পাগলিয়ানো।
২০১২ সালের ১১ সেপ্টেম্বর লিবিয়ার বেনগাজিতে মার্কিন দূতাবাসে চারজন আমেরিকান নাগরিক নিহত হন। ওই হামলায় নিহতদের মধ্যে মার্কিন রাষ্ট্রদূত ক্রিস স্টিভেন্সও ছিলেন।
২০১৩ সালের ২৩ জানুয়ারি ওয়াশিংটন ডিসিতে ক্যাপিটাল হিলে সিনেটের বৈদেশিক সম্পর্ক কমিটির শুনানিতে হিলারি ক্লিনটন লিবিয়ার বেনগাজিতে হামলা ও মার্কিন নাগরিক হতাহতের বিষয়ে তীব্র প্রশ্নবাণের মুখে পড়েন।
এ বছর পহেলা ফেব্রুয়ারি হিলারি ক্লিনটন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন।
পরের বছর অর্থাৎ ২০১৪ সালের ২৮ অক্টোবর স্টেট ডিপার্টমেন্ট দাবি করে বেনগাজিতে মার্কিন দূতাবাসে ওই হামলার তদন্তে হিলারি ক্লিনটনের কিছু তথ্য ফাঁস হয়েছে। তবে হিলারির আইনজীবী এ সময় তার ৩৩ হাজার ইমেইল ডিলিট বা মুছে দেওয়ার কথা জানান এবং এও বলেন, ইমেইলগুলো ছিল হিলারির ব্যক্তিগত।
এ বছর ৫ ডিসেম্বর হিলারি ক্লিনটনের আইনজীবীরা তার ব্যবহৃত ৩০ হাজার ইমেইল স্টেট ডিপার্টমেন্টের হাতে তুলে দেয়। এ সময় বেনগাজিতে হামলার ঘটনায় কংগ্রেসের পক্ষ থেকে তদন্তের দাবি ওঠে।
২০১৫ সালের দোসরা মার্চ দি নিউ ইয়র্ক টাইমস একটি প্রতিবেদনে দাবি করে যে হিলারি ক্লিনটন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে তার দায়িত্ব পালনকালে সরকারি কাজে ব্যক্তিগত ইমেইল ব্যবহার করেছেন।
এবছরই ২৫ জুলাই হিলারি ক্লিনটন বেশ আস্থার সঙ্গে দাবি করেন যে তিনি তার ব্যক্তিগত ইমেইলে সরকারি কোনো তথ্য আদান কিংবা প্রদান করেননি।
এরপর ৪ আগস্ট দি ওয়াশিংটন পোস্ট আরেক প্রতিবেদনে জানায়, এফবিআই হিলারির ইমেইল আদান-প্রদানের নিরাপত্তা কতটুকু তা খতিয়ে দেখছে। ২০১৫ সালের ১০ সেপ্টেম্বর রিপাবলিকান পার্টির নেতৃত্বে হাউজ কমিটি হিলারির ইমেইল ব্যবহার নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রশ্ন তোলে।
২০১৬ সালের ৬ জুলাই কংগ্রেস হিলারি ক্লিনটনের ইমেইল সংক্রান্ত তদন্ত বন্ধ করে দেয় এবং এফবিআই পরিচালক জেমস কমি ঘোষণা দেন হিলারিকে এ নিয়ে বিচারের মুখোমুখি করা হবে না।
২০১৬ সালের ৭ অক্টোবর উইকিলিকস হিলারির ব্যবহৃত হাজার হাজার ইমেইল ফাঁস করে। ক্লিনটনের নির্বাচনি প্রচারণা কমিটির প্রধান জন পডেষ্টার জিমেইল অ্যাকাউন্ট থেকে এসব ইমেইল ফাঁস করা হয়।
২৮ অক্টোবর এফবিআই পুনরায় হিলারি ক্লিনটনের ব্যক্তিগত কম্পিউটারের সার্ভার থেকে সমস্ত ইমেইল পুনরায় যাচাই-বাছাই শুরু করে।
শেষপর্যন্ত ৬ নভেম্বর এফবিআই চূড়ান্তভাবে ঘোষণা করে এর আগে তাদের তদন্তে হিলারি ক্লিনটনের ইমেইল নিয়ে যে সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়েছিল তার কোনো পরিবর্তন হয়নি এবং ইমেইল তদন্তে হিলারির বিরুদ্ধে কোনো ক্রিমিনাল চার্জ নেই। সূত্র: ডেইলি মেইল। সম্পাদনা: আবু সাইদ