ক্স সাংগঠনিক কাঠামো, কার্যতালিকা ও রাজস্ব খাতে পদ সৃজনের প্রস্তাব সচিব কমিটিতে ‘জননিরাপত্তা ও সুরক্ষা সেবা’ নামে দুটি বিভাগে রূপান্তর হচ্ছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
আনিসুর রহমান তপন: বর্তমান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে দুটি বিভাগে রূপান্তরের একটি প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটিতে পাঠিয়েছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়। যা সচিব কমিটির আগামী বৈঠকে অনুমোদিত হতে পারে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে এ তথ্য।
সূত্র জানায়, জননিরাপত্তাসংক্রান্ত কাজের ব্যাপকতা ও গুরুত্ব বিবেচনা করে বর্তমান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে ভেঙে ‘জননিরাপত্তা বিভাগ’ ও ‘সুরক্ষা সেবা বিভাগ’ নামে দুটি বিভাগে ভাগ করা হচ্ছে। এজন্য সম্ভাব্য দুটি বিভাগের জন্য যথাক্রমে ২০০ ও ২৬০টি (মোট ৪৬০টি) পদ রাজস্ব খাতে সৃজনের একটি প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য প্রশাসনিক উন্নয়নসংক্রান্ত সচিব কমিটিতে পাঠিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। প্রস্তাবিত বিভাগ দুটির আলাদা আলাদা সাংগঠনিক কাঠামো (অর্গানোগ্রাম) ও কার্যতালিকা (এলোকেশন অব বিজনেস)সহ রাজস্ব খাতে ৪৬০টি পদ সৃজনের অনুমতি চাওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, এর আগে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জননিরাপত্তা বিভাগ ও সুরক্ষা সেবা বিভাগে রূপান্তরসহ দুটি বিভাগের জন্য যথাক্রমে ২১৭ ও ২৭৬টি পদ রাজস্ব খাতে সৃজন করতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় অনুমতি দেয়। তবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের শর্ত মোতাবেক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পাঠানো প্রস্তাবে মোট ৪৯৩টি পদের বিপরীতে অর্থ মন্ত্রণালয় ৪৬০টি পদ রাজস্ব খাতে সৃজনের অনুমোদন করে। তবে প্রথম পর্যায়ে সুরক্ষা সেবা বিভাগের অধীনে নির্বাচন করা ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারটি (এনটিএমসি) জননিরাপত্তা বিভাগে স্থানান্তরের জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে একটি সংশোধনী প্রস্তাব পাঠায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সংশোধনে এনটিএমসিকে সুরক্ষা বিভাগ থেকে জননিরাপত্তা বিভাগে স্থানান্তরের কারণ ও যৌক্তিকতা তুলে ধরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়, এনটিএমসির কার্যক্রম সুরক্ষা সেবামূলক নয় বরং এর কার্যক্রম জননিরাপত্তামূলক। বিশ্বব্যাপী টেলিযোগাযোগের অভূতপূর্ব উন্নয়ন ও অবাধ তথ্য প্রবাহ থাকায় সংবেদনশীল তথ্যের অযাচিত প্রকাশ, নিয়ন্ত্রণ, অপরাধ কার্যক্রমে প্রযুক্তির অপব্যবহার রোধে ও রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারসহ সম্ভাব্য অপতৎপরতা প্রতিরোধে এনটিএমসি গঠন করা হয়। এজন্য সাইবার ক্রাইম, সন্ত্রাস দমন, অপহরণ, চাঁদাবাজি, মানিলন্ডারিং, হুমকি প্রদান প্রতিরোধ ও দমনে এরসঙ্গে জড়িত অপরাধী শনাক্ত করে আইনি ভিত্তিতে এনটিএমসি দেশের গোয়েন্দা সংস্থাসমূহকে সহায়তা করছে। এতে জননিরাপত্তা অধিকাংশে নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে।
জানা গেছে, নতুন দুটি বিভাগের আওতাধীন একটি জননিরাপত্তা বিভাগের অধিনস্থ থাকবে- বাংলাদেশ পুলিশ, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ, বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী, বাংলাদেশ কোস্টগার্ড, তদন্ত সংস্থা ও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালস ও ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার।
এছাড়া সুরক্ষা সেবা বিভাগ নামে অপর বিভাগের অধীনস্থ সংস্থা সমূহ হবে- বহিরাগমন ও পাসপোর্ট অধিদফতর, কারা অধিদফতর, বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতর ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে কাজের ব্যাপকতা ও গুরুত্ব বিবেচনায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে দুটি বিভাগে রূপান্তরের জন্য অনুশাসন প্রদান করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সম্পাদনা: সুমন ইসলাম