মদপানের ক্ষতিকর দিক
সাঈদ যোবায়ের
ইসলামের পূর্ব যুগে আরবদের মধ্যে মদপান ছিল অতিসাধারণ একটি রেওয়াজ। মদপানে তারা সকলেও অভ্যস্ত ছিল। ফলে হঠাৎ করে মদপান করা নিষেধ করার সুযোগ ছিল না। এই জন্য আল্লাহপাক মদকে ধীরে ধীরে তিন ধাপে নিষেধ করেছেন। প্রথম ধাপে শুধু এটুকু বলা হয়েছে যে, ‘মদপানে উপকার সামান্য তবে ক্ষতি অনেক বেশি’। (সূরা বাকারা: আয়াত ২১৯)
এই সামান্য নিষেধাজ্ঞার বাণীতেই সাহাবায়ে কেরামের কেউ কেউ শরাবকে এড়িয়ে চলতে শুরু করেন। তবে সবাই স্বাভাবিকভাবে এটাই ধরে নেন যে, এখনো পরিপূর্ণভাবে মদ হারাম হয়নি। একবার কয়েকজন সাহাবি এক সাথে মদপান করেন। পরপর তাদেরই একজন ইমাম হয়ে নামাজ পড়াতে দাঁড়ান। আর কোরআন তিলাওয়াতে শক্ত রকমের ভুল করে বসেন।
অতঃপর এরই প্রেক্ষিতে আয়াত অবতীর্ণ হয়, ‘তোমরা নেশাগ্রস্ত অবস্থায় নামাজের কাছে যেয়ো না’। (সূরা নিসা : আয়াত ৪৩) এই আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার পর থেকে সাহাবায়ে কেরাম নামাজের সময় মদ পরিহার করে চলতে থাকেন। মদের অপকারিতা ও ক্ষতির দিকগুলো রাসূলকে (সা.) ভাবিয়ে তোলে। তাই তিনি বারবার আল্লার দরবারে প্রার্থনা করেন। অতঃপর তৃতীয়বার মদ সম্পর্কে ইসলামের পরিপূর্ণ বিধান নাজির হয়। কোরআনের আয়াতে মদকে স্পষ্টভাবে নাপাক বলা হয়। মদকে উল্লেখ করা হয়, শয়তানি কর্ম ও পরস্পর লড়াই বিদ্বেষের উৎস হিসাবে। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘হে ঈমানদারগণ! এই মদ, জুয়া, মূর্তি পূজার বেদী ও ভাগ্য নির্ণায়ক শরসমূহ এ সমস্তই হচ্ছে ঘৃণ্য শয়তানি কার্যকলাপ। এগুলো থেকে দূরে থাকো, আশা করা যায় তোমরা সফলতা লাভ করবে। শয়তান তো চায় মদ ও জুয়ার মাধ্যমে তোমাদের মধ্যে শত্রুতা ও হিংসা-বিদ্বেষ সৃষ্টি করতে এবং আল্লাহর স্মরণ ও নামাজ থেকে তোমাদের বিরত রাখতে। তাহলে তোমরা কি এসব থেকে বিরত থাকবে?’ [সুরা মায়েদা : আয়াত ৯০-৯১]