দুর্নীতি মুক্ত থাকুন নইলে কঠিন পরিণতির জন্য অপেক্ষা করুন : দুদক চেয়ারম্যান
এস.ইসলাম জয়: দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ সরকারি কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা দুর্নীতি মুক্ত থাকুন নইলে কঠিন পরিণতির জন্য অপেক্ষা করুন। উল্লেখ্য ফাঁদ পেতে ইতোমধ্যে একজন উপসচিবকে গ্রেফতার করেছে দুদক। আরও বলেছেন, বেসিক ব্যাংকের মামলার চার্জশিট দিতে সময় লাগছে সঠিক তদন্তের জন্য। প্রত্যেকটি মামলা আমরা গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করে থাকি। যাতে কোনো নিরপরাধ ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান অন্যায়ভাবে শাস্তি না পায়। আবার কোনো অপরাধী যেন পার না পায় সেদিকেও নজর রেখে তদন্ত করতে হচ্ছে কমিশনকে। গতকাল বুধবার দুদকের প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, বেসিক ব্যাংকের ২ হাজার ৩৬ কোটি ৬৫ লাখ ৯৪ হাজার ৩৪১ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ৫৬টি মামলা করা হয়। এতগুলো মামলার সঠিক তদন্ত করতে সময় লাগছে। ওই মামলার ১৫৬ আসামির মধ্যে ২৬ জন ব্যাংক কর্মকর্তা। বাকিরা ঋণগ্রহিতা এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের স্বত্ত্বাধিকারী ও সার্ভে প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা। বেসিক ব্যাংক কেলেঙ্কারিতে এমন ব্যক্তিদের নামও রয়েছে যারা ওই প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত নয়। বিভিন্ন পাইপ লাইনের মাধ্যমে টাকাগুলো বিভিন্নভাবে চলে গেছে। ওই টাকা ফেরত আনাও কষ্ট সাধ্য। তবে যত কঠিনই হোক না কেন দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত টাকা ফেরত দিতে হবে।
তিনি জানান, ফাঁদ পেতে দুর্নীতিবাজদের ধরার ঘটনায় ২০১৬ সালে ১৩টি মামলা হয়। যা আগের বছর ছিল ৪টি। ফাঁদ পেতে দুর্নীতিবাজদের ধরা ও মামলা এ বছর আরও বেশি গুরুত্ব দেওয়া হবে। দুর্নীতিপ্রবণ দফতরগুলোতে বিশেষ নজরদারি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এ বছর দুদকের গণশুনানি বাড়ানো হয়েছে। প্রতি মাসে তিনটি করে জেলা ও উপজেলায় দুদকের গণশুনানি অনুষ্ঠিত হবে। শুধু তাই নয়, গণশুনানি অনুষ্ঠিত হওয়ার তিনদিনের মধ্যে ফলোআপ শুনানি করা হবে। ফলোআপে দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের কাজ সমাধান হচ্ছে। দুর্নীতির প্রত্যেকটি রাস্তা বন্ধ করে দিতে চাই। ২০১৫ সালের তুলনায় ২০১৬ সালে দুদকে বেশি অভিযোগ আসে। ২০১৬ সালে ১২ হাজার ৫৬৮টি অভিযোগ পায়। এর মধ্যে অনুসন্ধানের জন্য গৃহীত হয় ১ হাজার ৫৪৩টি অভিযোগ কিন্তু অধিকাংশ অভিযোগ দুদকের তফসিল বহির্ভূত হওয়ায় তা অনুসন্ধানের জন্য গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি। প্রশাসনিক ব্যবস্থার জন্য সংশ্লিষ্ট দফতরে পাঠানো হয় ৫৪৩টি অভিযোগ। ২০১৬ সালে ৩৩৯টি মামলা করা হয়েছে। অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে ৫২৮টি মামলায়। ২০১৫ সালে দুদকের মামলায় সাজার হার ছিল ৩৭ শতাংশ যেখানে ২০১৬ সালে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৪.২ শতাংশ। আরও উপস্থিত ছিলেন দুদক সচিব আবু মো. মোস্তফা কামাল, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ড. নাসির উদ্দিন। সম্পাদনা: নাশরাত আর্শিয়ানা চৌধুরী