‘স্মার্টফোন’
নিশি মল্লিক
বাবা মা এবং সন্তান, এই তিনজনের সমন্বয়ে একটি ছোট পরিবার। কালের বির্বতনে এবং পরিবেশ পরিস্থিতি তাদেরকে ব্যস্ত করে রেখেছে। বাবা একজন এনজিও অফিসার এবং মা একজন স্কুল শিক্ষিকা। তাদের ছেলের নাম রকি। রকি তার মায়ের স্কুলে তৃতীয় শ্রেনীর ছাত্র। একদিন রকির বাবা টেলিভিশন দেখছে, এবং রকির মা স্কুলের ছাত্রদের খাতা দেখায় ব্যস্ত। স্কুলের পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের লিখতে দেয়া হয়েছিল তোমরা কে কী হতে চাও? খাতা দেখার সময় রকির বাবা দেখল তার স্ত্রীর চোখ বেয়ে পানি পড়ছে। রকির বাবা তার স্ত্রীকে জিজ্ঞাসা করল কি হয়েছে তোমার? তুমি কাঁদছো কেন? তখন তার স্ত্রী একটি খাতা হাতে নিয়ে বলল, আজ পরীক্ষায় লিখতে দেয়া হয়েছিল, ‘কে কি হতে চাও’? তার উত্তরে একজন ছাত্র লিখেছে, ‘আমি স্মার্টফোন হতে চাই’, কারন মা আমাকে কোথাও ঘুরতে নিয়ে যায় না, কিন্তু স্মার্টফোনকে সাথে নিতে কখনো ভুল করে না। মা আমাকে খাওয়াতে ভুলে গেলেও স্মার্টফোনকে চার্জে দিতে ভুল করে না। মাঝে মাঝে মা আমাকে গোসল করাতে ভুলে যায়, কিন্তু স্মার্টফোনের গায়ে একটু ধুলা-ময়লা পড়লেই মা সেটাকে মুছে যতœ করে ভালো জায়গায় রেখে দেয়। মা ও বাবা স্মার্টফোনকে খুব ভালবাসে, তাই তারা দুজনেই স্মার্টফোনকে তাদের কাছে নিয়ে ঘুমায়। আমিও বাবা মার কাছে থাকতে চাই, তাই আমি স্মার্টফোন হতে চাই। আমি যদি স্মার্টফোন হই, তাহলে বাবা মা আমাকে সব সময় তাদের কাছে রাখবে। তখন রকির বাবা তার স্ত্রীকে জিজ্ঞাসা করল কে এই ছাত্র? তার স্ত্রী বলল, এই ছেলে অন্য কেউ না, আমাদের সন্তান রকি। তখন স্বামী এবং স্ত্রী দুজনার চোখ বেয়ে পানি ঝরে পড়ল। তারা ঠিক সেই মূহুর্তে থেকে প্রতিজ্ঞা করল, তারা তাদের সন্তানকে সময় দিবে, সব সময় কাছে কাছে রাখবে।
আমাদের সমাজে এমন অনেক পরিবার আছে, যারা কিনা নিজেদের ব্যস্তোতার জন্য আমাদের সন্তানদের সময় দিতে পারি না। এতেকরে সন্তানরা নানা রকম অসৎ সঙ্গে মিশে খারাপ পথে চলে যায়, তাই সব সময় আমাদের পরিবারকে খ্রিস্টীয় বিশ্বাস, ভালবাসা ও সম্প্রিতিতে গড়ে তোলা উচিত।