শয়তান দেখতে কেমন?
খ্রিস্টীয় দর্পণ ডেস্ক
শয়তান লেজ, শিং ও নখওয়ালা কোন কাল্পনিক প্রানী নয়। এরা খুব বাস্তব বুদ্ধিসম্পন্ন ও স্মার্ট। এরা সর্ব্বকাল বিরাজমান প্রতিনিধি। পবিত্র বাইবেলে এদের বর্ণনা করা হয়েছে হিংস্র জন্তু হিসেবে। আদম থেকে শুরু করে যীশু খ্রিস্ট কেউ এদের হাত থেকে রেহাই পায়নি। শয়তান যীশু খ্রিস্টের শিষ্যকেও বশে এনেছিল। পবিত্র বাইবেলে বিভিন্ন আত্মা সম্পর্কে বর্ণনা রয়েছে। আত্মাগণকে আমরা দেখতে পাইনা; কিন্তু বাইবেলে বারে বারে বলা আছে তারা আছে। তেমনি শয়তানেরও শারীরিক রূপ নেই এরা খারাপ আত্মা যা আমরা দেখতে পাইনা। এছারাও মথি ৪:১-৩ পদে আমরা দেখতে পাই শয়তান যীশুকে পরীক্ষা করেছিল কিন্তু সেক্ষেত্রেও শয়তানের আকৃতির ব্যাপারে কোন বর্ণনা নেই।
শয়তান কিভাবে কাজ করে?
শয়তানের আক্রমণ নির্দয় ও অবিরত হয়। শয়তান মন্দ কাজে প্ররোচিত করা, প্রবঞ্চনা, কুৎসা রটনা, ভালো কাজে বাধা দান প্রভৃতির মাধ্যমে অবিরত আপনাকে পরিচালনা করার চেষ্টায় ব্যস্ত। শয়তান নিজে নিজে কাজ করতে পারেনা। এদের কাজ করতে একটা মাধ্যমের দরকার হয়।
শয়তান কাদের আক্রমন করে?
শয়তানের লক্ষ্যবস্তু একমাত্র মানুষ কারন মানুষ একমাত্র ঈশ্বরের প্রতিমূর্তি। এরা কখনো মাতাল, ঘুষখোর, চোর, মিথ্যাবাদী, ক্ষমতা লোভী, ব্যভিচারি এদেরকে পরীক্ষায় ফেলেনা কারন এদেরকে ইতোমধ্যেই তার নিয়ন্ত্রনে নিয়ে ফেলেছে। যীশু এবং প্রেরিত পৌল দুজনেই তাদের শিক্ষায় শয়তানের প্রভাব সম্পর্কে সতর্কবাণী দিয়েছেন (মথি ২৪:২৪; ২ করিন্থীয় ১১:১৩-১৫; ২ থিষলনীকীয় ২:৭-১১; গালাতীয় ১:৮)।
শয়তান কেন মন্দ কাজ করায়? এতে তার লাভ কি?
শয়তানের উদ্দেশ্য মানুষকে ধর্মীয় জীবন থেকে দূরে নিয়ে যাওয়া এবং তার আনুগত্য স্বীকার করানো। অনেক উপায়ে শয়তানের আনুগত্য স্বীকার করা যায়। তার সবচেয়ে কূট কৌশল হলো স্বার্থপরতা, আত্মঅহংকার বিস্তার অর্থে স্ব-পূজা বা স্ব-মহিমার অনুসারি করা। শয়তানই স্ব-পূজার জন্মদাতা (যিশাইয় ১৪:১৩-১৪)। আমরা যখন নিজেকে মহিমান্বিত করি বা প্রশংসা করি তখন আমরা ঈশ্বরের মহিমাকে খর্ব করি এবং শয়তান তখন খুশি হয়। শয়তান সর্বশক্তিমান কিংবা সর্বজ্ঞ কোনটিই নয় কিন্তু তার প্রচন্ড ক্ষমতা রয়েছে মানুষকে মন্দ কাজে উৎসাহ যোগানোর।
শয়তান প্রবঞ্চক বা ঠগবাজ
ধরুন কেউ আপনার পথে ১ কোটি টাকা ফেলে রাখলো। আপনি পেয়ে তো মহাখুশি, টাকার মালিকের সন্ধান না করে নিজেই টাকাগুলো নিয়ে নিলেন। এবার ধরুন আপনার পাওয়া টাকাগুলো জাল বা নকল ছিল। তখন তো আপনি বোকা হয়ে যাবেন। ঠিক এভাবেই শয়তান আপনাকে লোভ দেখায়ে এবং আপনি তার ফাঁদে পাঁ দিয়ে দেন। শয়তান প্রবঞ্চনার মাধ্যমে আপনার কাছে জয়ী হয়। ১২:৯, যোহন ৮:৪৪, আদিপুস্তক ৩:১৩, ২ করিন্থীয় ১১:১৩
শয়তানের কাছ থেকে মুক্ত থাকবো কিভাবে
মানুষের সবচেয়ে বড় ভুল ঈশ্বরের সাহায্য না নিয়ে শয়তানের সাথে লড়াই করা। আবার অনেকে আছে ভয় পায়। শয়তানের খপ্পরে পরলে প্রথম কাজ হলো ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করা। ‘ঈশ্বরের অধীনে থাক। শয়তানকে রুখে দাঁড়াও, তাহলে সে তোমাদের কাছ থেকে পালিয়ে যাবে (যাকোব ৪:৭)।’ ‘তোমরা যুদ্ধের জন্য ঈশ্বরের দেওয়া সমস্ত সাজ-পোশাক পরে নাও, যেন শয়তান যেদিন আক্রমণ করবে সেই দিন তোমরা তাকে রুখে দাঁড়াতে পার এবং সব কিছু শেষ করে স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে পার। এইজন্য সত্য দিয়ে কোমর বেঁধে, বুক রক্ষার জন্য সৎ জীবন দিয়ে বুক ঢেকে, আর শান্তির সুখবর প্রচারের জন্য পা প্রস্তুত রেখে দাঁড়িয়ে থাক। এছাড়া বিশ্বাসের ঢালও তুলে নাও; সেই ঢাল দিয়ে তোমরা শয়তানের সব জ্বলন্ত তীর নিভিয়ে ফেলতে পারবে। মাথা রক্ষার জন্য ঈশ্বরের দেওয়া উদ্ধার মাথায় দিয়ে পবিত্র আত্মার ছোরা, অর্থাৎ ঈশ্বরের বাক্য গ্রহণ কর। পবিত্র আত্মার দ্বারা পরিচালিত হয়ে মনে-প্রাণে সব সময় প্রার্থনা কর।’ ইফিসীয় ৬:১৩-১৮