ট্রুডো-ট্রাম্প বৈঠকে যৌথ সম্পর্কোন্নায়নে গুরুত্বারোপ
মোহাম্মদ আলী বোখারী, টরন্টো থেকে
গতকাল সোমবার ওয়াশিংটনের হোয়াইট হাউসে কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রের মাঝে অনুষ্ঠিত শীর্ষ পর্যায়ের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ও প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাদের দুই দেশের সম্পর্কোন্নয়নের ক্ষেত্রে গুরুত্বারোপ করেন। প্রথমবারের মতো এই মুখোমুখি বৈঠকে ট্রুডো কানাডার জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও উত্তর আমেরিকা মহাদেশের নিরাপত্তা নিশ্চিতের ক্ষেত্রে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তাতে স্বাক্ষরিত তিনটি যৌথ বিবৃতিতে এই দুই নেতা সীমান্ত নিরাপত্তা, প্রতিরক্ষা ও অর্থনৈতিক বিষয়াবলিতে পারস্পরিক সহযোগিতায় দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হন। হোয়াইট হাউসে ট্রুডোর পাশে দাঁড়িয়ে ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা উভয়ে আমাদের জনগণের সমৃদ্ধি ও সুযোগ সৃষ্টিতে নিবেদিত হয়েছি’। আপাতদৃষ্টিতে কানাডার প্রধানমন্ত্রী ট্রুডো ‘রিয়েলপলিটিক’ বা রাজনীতির বাস্তবতায় তার উল্টো পথচলা অথচ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সহযোগী ও নিকটতম প্রতিবেশী যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে ধারণাতীত এই অতি প্রতীক্ষিত বৈঠকটি করেন। ফলে বিশ্বে কয়েক দশকের সবচেয়ে সুদৃঢ় সম্পর্কের অধিকারী এই দুটি দেশের বিদ্যমান মুক্ত বাণিজ্য, প্রতিরক্ষা ও গোয়েন্দা তৎপরতার ভবিষ্যৎ সম্পর্কিত বিষয়াবলি পর্যবেক্ষণ ছিল সকলের আগ্রহদীপ্ত বিষয়। এতে একদিকে ট্রুডোর আন্তর্জাতিকমুখিতা ও অন্যদিকে ট্রাম্পের অতিকায় রক্ষণশীল ভাবমূর্তি বিবেচনায় প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বাস্তব রাজনীতির আলোকে তার শক্তিশালী প্রতিপক্ষের সঙ্গে বসেন। তাই তিনি কোনো প্রকার সমালোচনা ছাড়াই ট্রাম্পের অর্থনেতিক কর্মকা-ে কী করে কানাডা সহযোগী হতে পারে সেটাই তুলে ধরেন। লক্ষণীয়ভাবে তাতে দুই দেশের ব্যবসায়িক নারীদের উন্নয়নে ট্রাম্পকন্যা ইভাঙ্কার উপস্থিতিতে একটি যৌথ টাস্কফোর্স গঠনের উদ্যোগ গৃহীত হয়। তথাপি ট্রাম্পের কারণে উত্তর আমেরিকা মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি বা ‘নাফতা’র ক্ষয়িষ্ণু ভবিষ্যতের প্রেক্ষাপটে ‘বাই আমেরিকা’ বা আমেরিকার পণ্য কেনার নীতিতে সীমান্তে আরোপিত কর নির্ধারণের বিষয়টি ‘কর্পোরেট কানাডা’র জন্য যথেষ্ট উদ্বেগেরই কারণ হিসেবেই দৃশ্যমান। যদিও ট্রাম্প যৌথ বিবৃতি প্রদানকালে বলেন, কানাডা-যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে মেক্সিকোর বিষয়টি ‘টুইকিং’ বা সামঞ্জস্যতা নিরূপণের বিষয়। আর অভিবাসন সংক্রান্ত নীতিমালার ক্ষেত্রে ট্রুডো স্বজাত্যভিমানে বলেন, ভারসাম্যপূর্ণ সীমান্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করার মাধ্যমে কানাডা উদ্বাস্তু আশ্রয়ে সব সময়ই তার দ্বার উন্মুক্ত রাখবে। একইসঙ্গে বলেন, কানাডার জনগণ আমাকে কিভাবে যুক্তরাষ্ট্র চলবে তা জানিয়ে দিতে বলেছেন।
উদ্ভূত এই পরিস্থিতিতে ট্রুডোর যাত্রার আগেই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কোন্নয়নে কানাডার কনজারভেটিভ পার্টির অন্তর্বর্তীকালীন নেত্রী রনা অ্যাম্ব্রোস জোর দেন। আর নিউ ডেমোক্রেটিক পার্টির নেতা টম মুলক্লেয়ার সাতটি মুসলিম দেশের উপর ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত কানাডিয়ানদের বিষয়ে ট্রুডোকে সোচ্চার হতে বলেন।
ইমেইল: [email protected]