ভেনেজুয়েলার কাছে যুক্তরাষ্ট্রকে ক্ষমা চাইতে হবে : নিকোলাস মাদুরো
এম রবিউল্লাহ: মিথ্যা মাদক পাচারের অভিযোগ আনার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে ক্ষমা চাইতে বলেছেন ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো। সোমবার মাদুরোর ভাইস প্রেসিডেন্ট তারেক এল আইজামিকে মাদক পাচারের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ তুলে কালো তালিকাভুক্ত করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
যুক্তরাষ্ট্রের এমন পদক্ষেপের পর প্রতিক্রিয়ায় মাদুরো বলেন, আমি আমার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিবাদ নোট ওয়াশিংটনকে দিতে বলেছি। জনসম্মুখে আমাদের ভাইস প্রেসিডেন্টকে নিয়ে মিথ্যা অপপ্রচারের জন্য ক্ষমা চাইতে হবে ওয়াশিংটনকে।
মাদুরো আরও বলেন, এতে কোনো সন্দেহ নেই ভেনেজুয়েলা অবশ্যই যুক্তরাষ্ট্রের এই অপমানের জবাব জোরালভাবে দেবে বলে সমাজতান্ত্রিক দেশটির প্রেসিডেন্ট জানান। যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা তার প্রশাসনের ভাবমূর্তি ক্ষুণেœর চেষ্টা করছেন বলে মাদুরো প্রায়ই অভিযোগ করেন।
ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্টের উত্তরসূরি বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট। সব ঠিক থাকলে বিরোধিদের হটিয়ে পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হবেন তিনি এমনটাই হওয়ার কথা ছিল। তবে যুক্তরাষ্ট্রের এমন অভিযোগের কারণে তাদের পরিকল্পনা কিছুটা হলেও ধাক্কা খেল।
নতুন করে কারাকাস ও ওয়াশিংটনের মধ্যে টানাপোড়েনে ঘৃণায় পরিণত হতে যাচ্ছে দুই দেশের সম্পর্ক। ওবামা প্রশাসনের সঙ্গে কিছুটা ভালো সস্পর্ক ছিল ভেনেজুয়েলার। তবে ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্ক বাণী দিলেও মার্কিন নতুন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভেনেজুয়েলার সম্পর্কে তার অবস্থান এখনো স্পষ্ট করেননি।
মাদক পাচারের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ তুলে ভেনেজুয়েলার ভাইস প্রেসিডেন্ট তারেক এল আইজামিকে সোমবার কালো তালিকাভুক্ত করে যুক্তরাষ্ট্র।
মাদক ও অর্থ পাচারের অভিযোগে প্রেসিডেন্টে নিকোলাস মাদুরোর সরকারের শীর্ষ এ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রথমবার নিষেধাজ্ঞা জারি করে ট্রাম্প প্রশাসন।
সোমবার এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ফরেন নরকোটিকস কিনপিং ডেজিগনেশন অ্যাক্টের আওতায় এল আইজামির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। এল আইজামির তৎপরতায় স্থাবর ও অস্থাবর সমর্থন যোগান দেওয়ায় তার সহযোগী সামার্ক হোসে লোপেজ বেলোর বিরুদ্ধেও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
লোপেজ বেলোর অথবা অন্যদের মালিকানাধীন অথবা নিয়ন্ত্রণাধীন ১৩টি কোম্পানির বিরুদ্ধেও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে দেশটির অর্থ মন্ত্রণালয়। এসব কোম্পানির গঠিত আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক ব্রিটিশ ভার্জিন দ্বীপপুঞ্জ, পানামা, ব্রিটেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ভেনেজুয়েলায় ছড়িয়ে আছে।
ভেনেজুয়েলা থেকে মাদকের চালান পাঠানোর কাজ দেখভাল করে এল আইজামি। এগুলোর মধ্যে ভেনেজুয়েলার বিমান ঘাঁটিগুলো থেকে ছেড়ে আসা বিমান ও ভেনেজুয়েলার বন্দরগুলোর মধ্য দিয়ে আসা মাদক রুটগুলোও আইজামি নিয়ন্ত্রণ করে বলে সংবাদ সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনের এক সিনিয়র কর্মকর্তা জানান।
দেশটির অর্থ মন্ত্রণালয় জানায়, আইজামি বিভিন্ন উপলক্ষে ভেনেজুয়েলা থেকে আসা এক হাজার কিলোগ্রামের বেশি মাদকের চালানোর তত্ত্বাবধান করেছে অথবা সেগুলোর মালিকানার অংশীদার। এসব মাদকের চালানের একটি অংশ মেক্সিকো ও যুক্তরাষ্ট্রেও গিয়েছে বলে দাবি করা হয়। জিও নিউজ