কখন কোন ইস্যুতে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা এই মুহূর্তে বলা যাবে না : সিইসি
সাইদ রিপন : কখন কোন ইস্যুতে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করব, সেটা এই মুহূর্তে বলা যাবে না। সহকর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করেই এই বিষয়ে আমরা জানাতে পারব। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপে বসবেন কিনাÑসাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে সিইসিকে এম নুরুল হুদা এই কথা বলেন।
শপথ গ্রহণের পর থেকে আর কোন রাজনৈতিক দলের সাথে সম্পর্ক নেই বলে অঙ্গীকার ব্যক্ত করলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা। গতকাল বুধবার বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন
ভবনের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। নুরুল হুদা বলেন, আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ সব ছোট-বড় রাজনৈতিক দলকে আস্থায় এনে নিরপেক্ষভাবে তিনি দায়িত্ব পালন করবেন।
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার পর সার্চ কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে গত ৬ ফেব্রুয়ারি নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। কিন্তু রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ এনে বিএনপি নতুন সিইসি কে এম নুরুল হুদার ব্যাপারে ক্ষোভ প্রকাশ করে।
বিএনপির অভিযোগ, নতুন সিইসি ১৯৯৬ সালে জনতার মঞ্চের অন্যতম সংগঠক ছিলেন। সাংবাদিকদের এ সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে সিইসি কে এম নুরুল হুদা বলেন, আমি কোনো রাজনৈতিক দলের (আওয়ামী লীগ) নির্বাচনী বোর্ডে ছিলাম না। নিরপেক্ষভাবে কাজ করার জন্য শপথ নিয়েছি। সেই অনুযায়ী কাজ করব।
জনতার মঞ্চ হলো তৎকালীন বিএনপির নেতৃত্বাধীন সরকারের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের আন্দোলনের সময় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মেয়র হানিফের নেতৃত্বে গড়ে তোলা সমাবেশ মঞ্চ। বিএনপির সরকারের পদত্যাগ পর্যন্ত ওই মঞ্চ ঘিরে সমাবেশ হয়। তাতে সরকারি প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরের কিছু কর্মকর্তা অংশ নেন।
তবে সিইসি কে এম নুরুল হুদা তার বিরুদ্ধে এই অভিযোগ অস্বীকার করে সাংবাদিকদের বলেন, তিনি তখন কুমিল্লার জেলা প্রশাসক ছিলেন। তাই জনতার মঞ্চে থাকার কোনো প্রশ্নই আসে না।
তিনি বলেন, দায়িত্ব পালনে কখনো কারো কাছে মাথানত করবো না। আমাদের প্রধান চ্যালেঞ্জ হচ্ছে সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দেওয়া। আর আমাদের প্রথম কাজ হচ্ছে কমিশনে যেসব সমস্যা রয়েছে, তা চিহ্নিত করা। সহকর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করে তার সমাধান করা। একইসঙ্গে তিনি তার দায়িত্ব পালনে সব রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজ, গণমাধ্যম ও জনগণের সহযোগিতা কামনা করেন।
আপনারা কোনোভাবে প্রভাবিত হবেন কিনাÑএমন প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, আমরা সাংবিধানিকভাবে শপথ নিয়েছি, সাংবিধানিকভাবেই দায়িত্ব পালন করব। কারও প্রভাব বিস্তারে আমরা প্রভাবিত হব না। সরকারের এখানে প্রভাব সৃষ্টির কোনও সুযোগ নেই।
নির্বাচনকালীন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রভাব বিস্তার বিষয়ে সিইসি বলেন, আমরা সংবিধান ও আইনের বাইরে প্রভাব বিস্তার করতে কাউকে দেব না। সংবাদ সম্মেলন সিইসির সঙ্গে অন্য নির্বাচন কমিশনার, কমিশন সচিবসহ ইসির কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে গতকাল বিকাল ৩ টায় সুপ্রিম কোর্টের জাজেস লাউঞ্জে সিইসি কে এম নূরুল হুদাসহ নতুন নির্বাচন কমিশনারদের শপথ পাঠ করান প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা। শপথ নেওয়া কমিশনের অন্য চার সদস্য হলেন সাবেক অতিরিক্ত সচিব মাহবুব তালুকদার, সাবেক সচিব রফিকুল ইসলাম, অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ কবিতা খানম ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদৎ হোসেন চৌধুরী। সম্পাদনা: নাশরাত আর্শিয়ানা চৌধুরী