চাঁপাইনবাবগঞ্জে নিখোঁজ দুই শিশুর বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার, স্বর্ণালঙ্কারের লোভেই হত্যা
সাহাবুদ্দিন সনু ও মো. আসাদুল্লাহ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ: চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার ফতেপুর গ্রামে নিখোঁজের দুদিন পর স্কুল ছাত্রী সুমাইয়া খাতুন মেঘলা ও মেহজাবিন আক্তার মালিহার বস্তাবন্দি লাশ অবশেষে গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় উদ্ধার হয়েছে। স্থানীয় যুবকদের উদ্যোগে বাড়ি বাড়ি তল্লাশি করেই বেরিয়ে আসে বস্তাবন্দি লাশ। হত্যার পর বস্তাবন্দি অবস্থায় তাদের রাখা হয়েছিল ফতেপুরের ভ্যানচালক ইয়াসিন আলীর বাড়ির খাটের নিচে। এ ঘটনায় ফতেপুরের ইয়াসিন আলী তার স্ত্রী তানজিলা খাতুন (৫০), পুত্রবধূ লাকি বেগমকে (৩২) আটক করা হয়।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানিয়েছে, মঙ্গলবার নিখোঁজ দুই শিশুর সন্ধানে স্থানীয় যুবকরা ফতেপুরের বাড়ি বাড়ি তল্লাশি করে। তল্লাশির ফতেপুরের ভ্যানচালক ইয়াসিন আলী (৭০) বাড়ি থেকে বস্তাবন্দি দুশিশুর লাশ পাওয়া যায়। স্থানীয় যুবকরা জানায়, বস্তা খুলতে বলা হলে বস্তার মধ্যে কুমড়া আছে বলে তাদের জানানো হয়। এ কথায় যুবকদের সন্দেহ হলে তারা জোরকরে বস্তা খুলে। বস্তা খুলতেই বেরিয়ে আসে শিশুদের মাথা।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের পুলিশ সুপার টিএম মোজাহিদুল ইসলাম জানান, সন্ধ্যায় স্থানীয় বিডিআর সদস্য তাজেমুল হকের মাধ্যমে খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে। দুই শিশু সুমাইয়া খাতুন মেঘলা ও মেহজাবিন আক্তার মালিহাকে স্বর্ণালঙ্কারের লোভেই হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করেছে পুলিশ। পুলিশ সুপার জানান, ওই দুই শিশুর কাছে স্বর্ণের কানের দুল ও গলায় চেন ছিল। ওই স্বর্ণালঙ্কারের লোভেই লাকি খাতুন দুই শিশুকে হত্যা করে। লাকি খাতুনের বাড়ি থেকেই পুলিশ ওই দুই শিশুর বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করে। প্রসঙ্গত, রোববার দুপুরে ফতেপুর গ্রামের প্রবাসী মিলন রানার মেয়ে সুমাইয়া খাতুন মেঘলা ও আব্দুল মালেকের মেয়ে মেহজাবিন আক্তার মালিহা স্থানীয় কিন্ডার গার্টেন স্কুল ‘ছোটমনি বিদ্যানিকেতন’ থেকে ফিরে বাড়ির বাইরে খেলতে যাওয়ার পর থেকে নিখোঁজ ছিল। অনেক খোঁজাখুজির পর তাদের পাওয়া না গেলে ওইদিন বিকালে পরিবারের পক্ষ থেকে বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়। পুলিশ ওই রাতেই সন্দেহভাজন হিসেবে ফতেপুর সংলগ্ন তেলিপাড়া ঘোষপাড়া গ্রামের বাবু শম্ভু’র মেয়ে গীতা রানী (১৮) নামে একজনকে আটক করে। আটক গীতা রানী পুলিশের কাছে অসংলগ্ন কথাবার্তা বলে। গীতার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী পুলিশ কয়েক স্থানে অভিযানও চালায়। তবে তার দেওয়া তথ্যে সন্ধান পাওয়া যায়নি মেঘলা আর মালিহার। সম্পাদনা: মুরাদ হাসান