চকরিয়ায় জোয়ারের পানিতে ভেসে গেছে ৭ হাজার মণ লবণ
এম রায়হান চৌধুরী চকরিয় চকরিয়া(কক্সবাজার): চকরিয়া উপজেলার পশ্চিম বড়ভেওলা ইউনিয়নের দরবেশকাটা এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধের সøুইচ গেইট ভেঙে জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে স্থানীয় লম্বাখালী ঘোনাসহ বিপুল পরিমাণ লবণ মাঠ। এতে পানিতে ভেসে গেছে ওই এলাকার শতাধিক প্রান্তিক চাষীর উৎপাদিত প্রায় সাত হাজার মণ লবণ। মৌসুমের মাঝপথে এসে উৎপাদিত লবণ ও চাষের ক্ষেত্র নষ্ট হওয়ায় বর্তমানে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন ভুক্তভোগী চাষিরা। ক্ষতিগ্রস্ত চাীিরা এব্যাপারে তদন্তপূর্বক ক্ষতিগ্রস্ত সøুইচ গেইটটি মেরামত এবং ভেসে যাওয়া লবণের ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করতে প্রশাসনের কাছে জরুরি ভিত্তিতে হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। অভিযোগে স্থানীয় দরবেশকাটা এলাকার লবণ চাষি মোহাম্মদ এখলাছ, মো. কায়কোবাদ, মনছুর আলম, নাজেম উদ্দিন, গিয়াস উদ্দিন, সাহাব উদ্দিন, আবদুল করিম, জকরিয়া, মো. ছাদেক, বাদশা মিয়া, নাজু মাঝি, আবদুর রহমান, ছলিমউদ্দিন, নুরুল আমিন, ছলিম বাদশা, আবছার মেস্ত্রী, গিয়াস উদ্দিন বদ, নাছির উদ্দিন, কবির আহমদ, মনির উল্লাহ ও মোক্তার আহমদসহ উপস্থিত শতাধিক চাসি দাবি করেছেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন বেড়িবাঁধের নির্মাণ কাজের সময় এস্কেভেটর গাড়ি দিয়ে মাটি কাটতে গেলে একটি স্লুইচ ভেঙে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এরপর রাতের বেলায় বেড়িবাঁধের ওপারে নদীতে জোয়ার আসলে পানির প্রবল চাপে সøুইচ গেইটের ক্ষতিগ্রস্ত অংশটি বড় আকারে ফাটলের সৃষ্টি হয়ে পানি ঢুকে পড়ে এপারের লবণ মাঠ তলিয়ে যায়। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে পশ্চিম বড়ভেওলা ইউপি চেয়ারম্যান ও মাতামুহুরী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বাবলা বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নজরদারি না থাকায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের লোকজন শুরু থেকে নির্মাণ কাজে নানা ধরনের অনিয়ম করছেন। বিশেষ করে স্কেভেটর দিয়ে মাটি কাটার সময় সøুইচ গেইটটি ভেঙে গেলেও স্থানীয় চাষী কিংবা এলাকার জনপ্রতিনিধি অথবা পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের না জানিয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্টরা কাজ চালিয়ে যেতে থাকেন। এ অবস্থার ফলে তাদের ভুলের মাশুল দিতে হচ্ছে এখন এলাকার পান্তিক লবণ চাষিদের। তিনি বলেন, বিষয়টি লিখিতভাবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানানো জন্য পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যানকে বলা হয়েছে। জানতে চাইলে ক্ষতিগ্রস্ত লবণ মাঠ লম্বাখালী ঘোনার পরিচালক ও ফোয়াব কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি মো.শহিদুল ইসলাম বলেন, উপজেলার পশ্চিমবড় ভেওলা ইউনিয়নের দরবেশকাটা গ্রামের অদুরে ৩৫৩ একর আয়তনের লম্বাখালী ঘোনায় চলতি মৌসুমে প্রায় ৩৬০জন চাষী লবণ চাষ করছেন। এছাড়াও পাশের বিপুল পরিমাণ জমিতে এলাকার আরও ৬শতাধিক চাষি জমি বর্গা নিয়ে লবণ চাষে রয়েছেন। তিনি বলেন, মৌসুমের মাঝপথে এসে উৎপাদনের এ সময়ে বেড়িবাঁধের সøুইচ গেইটটি ভেঙে নদীর পানি ঢুকে পড়ার কারণে বেশির ভাগ লবণ মাঠ তলিয়ে গেছে। ভেসে গেছে চাষিদের প্রায় সাত হাজার মণ উৎপাদিত লবণ। বর্তমানে বাজারে প্রতিমণ লবণ ২৮০ টাকা ধরে বিক্রি হচ্ছে। সে হিসেবে ধারণা করা হচ্ছে চাষীদের প্রায় ২০ লাখ টাকার বেশি ক্ষতিসাধন হয়েছে। কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো.সবিবুর রহমান বলেন, চকরিয়া উপকূলীয় অঞ্চলের চিংড়িজোন ও লবণ চাষ নিশ্চিত করতে সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলের নির্দেশে পানি উন্নয়ন বোর্ড তিনটি প্যাকেজের আওতায় সেখানে প্রায় ১১ কিলোমিটার আয়তনের বেড়িবাঁধ সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে। বেড়িবাঁধ সংস্কার কাজ শেষ হলে সুফল পাবে ওই এলাকার মৎস্য ও লবণ চাষিরা।সম্পাদনা: মুরাদ হাসান