সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন : সেমিনারে বক্তারা
জাফর আহমদ: বাংলাদেশের বর্তমান জাতীয় সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নানাবিধ চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। জাতীয় বাজেটের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ এ খাতে ব্যয় করা হলেও কর্মসূচিসমূহের প্রকৃত প্রভাব প্রত্যাশার চেয়ে অনেক কম। এ অবস্থা নিরসনে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে ব্যয়িত অর্থের দক্ষতা ও কার্যকারিতা বৃদ্ধি করতে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এর মাধ্যমে সরকার দেশের অতিদরিদ্র ও সর্বাধিক ঝুঁকিগ্রস্ত নাগরিকদেরকে ন্যূনতম আয়ের নিশ্চয়তা প্রদান করতে চায়; একই সাথে সুরক্ষিত রাখতে চায় দারিদ্র্যে নিপতিত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকা জনগোষ্ঠীকে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সিরডাপ মিলনায়তনে ‘খাদ্য অধিকার বাংলাদেশ’ আয়োজিত সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচির উত্তরণ ও খাদ্য অধিকার’ শীর্ষক জাতীয় সেমিনারে বক্তারা এসব বলেন। সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন, ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন খাদ্য অধিকার বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক মহসিন আলী।
সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ, বিশেষ অতিথি ছিলেন সমাজসেবা অধিদফতরের মহাপরিচালক গাজী মোহাম্মদ নুরুল কবির। আলোচক হিসাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালযের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. এমএম আকাশ, অক্সাম বাংলাদেশ-এর কান্ট্রি ডিরেক্টর, ¯েœহাল সোনেজি, ওয়ার্ল্ড ভিশন-এর ন্যাশনাল চীফ এডভাইজার ষ্টিফেন কে. হালদার, দুঃস্থ স্বাস্থ্য কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক ডা. দিবালোক সিংহ এবং কেয়ার বাংলাদেশ-এর পরিচালক আনোয়ারুল হক। সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী বলেন, সরকারের বর্তমান দৃষ্টিভঙ্গি শুধুমাত্র দেশকে উন্নতির শিখরে নিয়ে যাওয়া এবং সে লক্ষ্যে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিরও যথাযথ উন্নয়ন ঘটবে বলে আমরা মনে করি। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে গাজী মোহাম্মদ নুরুল কবির বলেন, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির উপকারভোগীদের ডাটাবেজ তৈরীর ব্যাপারে অনেক অগ্রগতী হয়েছে। ডাটাবেজ তৈরীর কাজ সম্পন্ন হলেই স্মার্ট কার্ড চালু করার কাজটা শুরু করব এবং কর্মসূচির বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে অনেক নীতিগত ব্যাপারেও সিদ্ধান্ত হবে। সভাপতির বক্তব্যে ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, টেকসই উন্নয়নের জন্য বাস্তব ও কর্মমুখী প্রশিক্ষণ ও বাস্তবধর্মী সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি বাস্তবায়নের মাধ্যমে মানব মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করতে হবে। সম্মানীয় আলোচক অধ্যাপক ড. এম এম আকাশ বলেন, খাদ্য একটা মৌলিক অধিকার সুতরাং একটা খাদ্য অধিকার আইন প্রণয়ন করা প্রয়োজন এবং সে অনুযায়ী সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা দরকার। প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে মহসিন আলী বলেন, এক কথায় জাতীয় সামাজিক সুরক্ষা কৌশল ‘সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচি’ থেকে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে উত্তরণ। যেখানে সামগ্রিক পরিস্থিতির বিশ্লেষণ এবং কার্যক্রমের প্রস্তাবনার মাধ্যমে তাত্ত্বিক এবং প্রায়োগিক উভয় দিকই সন্নিবেশিত করা হয়েছে। কিন্তু সময়কাল হিসেবে ১ম ধাপের ১০ বছর (২০১৫-২০২৫) এবং ২০২৬ সাল থেকে শুরু হওয়া ২য় ধাপের কোন সময়কালের উল্লেখ নেই। তাহলে ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হওযার পর, তখনও এনএসএসএস-এর ১ম ধাপের কার্যক্রম কি অব্যাহত থাকবে। সম্পাদনা: হামিদুর রহমান