বিশ্বব্যাংকের কাছে ক্ষতি পূরণ চাওয়া যাবে অর্থমন্ত্রীকে উদ্যোগ নিতে হবে : আইনমন্ত্রী
নাশরাত আর্শিয়ানা চৌধুরী: বিশ্বব্যাংকের বিরুদ্ধে মামলা করার সুযোগ নেই বাংলাদেশ সরকারের। মামলা করার সুযোগ না থাকলেও ক্ষতি পূরণ চাওয়ার সুযোগ আছে। সেই সুযোগ নিয়েই বিশ্বব্যাংকের কাছে ক্ষতিপূরণ চাইতে হবে বাংলাদেশ সরকারকে। সেই কাজটা অর্থমন্ত্রীকেই করতে হবে- এই কথা বলেছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। গতকাল সকালে এই প্রতিবেদককে তিনি বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বব্যাংকের অভিযোগের কারণে পদ্মা সেতু প্রকল্পের কাজ যথাসময়ে শুরু করতে পারেনি এবং শেষও করতে পারছে না। যথাসময়ে কাজ শুরু করে শেষ করলে কত খরচ হতো এবং সেতু চালু হলে সেখান থেকে কি পরিমাণ রাজস্ব আদায় হতো সেটা আগে পুঙ্খানুপঙ্খভাবে হিসাব করতে হবে। হিসাবে যাতে সামান্যতম ভুল না হয়। কারণ হিসাবে ভুল হলে সমস্যা হবে। এই জন্য আগে প্রকল্পের ব্যয় কোন খাতে কত ধরা হয়েছিল। কত লাগতো। যেটা বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে চুক্তিতে বলা হয়েছিল। তা বের করতে হবে। এরপর ওই হিসাবকে সামনে রেখে এখন কাজ চলছে এই অবস্থায় কোন কোন খাতে কত ব্যয় বাড়ছে সেটা হিসাব করতে হবে। দুটি হিসাবের তুলনামূলক চিত্র তুলে ধরে বিশ্বব্যাংকের কাছে বাংলাদেশের তরফ থেকে ক্ষতিপূরণ চাইতে হবে। এই ক্ষতিপূরণ দিতে বিশ্বব্যাংক বাধ্যই বলা যায়। কারণ তাদের কারণেই ক্ষতি হয়েছে। বাংলাদেশ বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে কোনো বৈরিতা তৈরি না করেই সমঝোতার মধ্যেই ক্ষতিপূরণ চাইতে পারে। আর ক্ষতি পূরণ চাওয়ার জন্য আইনি কোনো বাঁধা নেই।
আইনমন্ত্রী বলেন, আমি বলবো ১৪ দলীয় জোটের পক্ষ থেকে যে এক বিলিয়ন ডলার ক্ষতি পূরণ চাওয়া হয়েছে তা যৌক্তিক। আর এই যৌক্তিকতার কারণে তা চাইতে হবে। তবে টাকার অংক তারা এক বিলিয়ন বলেছেন সেখানে দেখতে হবে আসলে ক্ষতির পরিমাণ কত। সেই পরিমাণ নির্ধারণ করেই এরপর টাকা চাওয়া যেতে পারে। এই ব্যাপারে অর্থমন্ত্রী ব্যবস্থা নিবেন বলেও আশা করছি।
আইনমন্ত্রী বলেন, অর্থমন্ত্রী বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করেই ব্যবস্থা নিতে পারেন। আর আইনি পরামর্শের কথা বললে আমি বলবো, এটা চাওয়ার সুযোগ আছে। চাওয়া যাবে। এখনই চান। কারণ তাদের কারণে আমাদের এত বড় ক্ষতি হয়েছে। সেই ক্ষতির কিছুটাতো তারা অর্থ দিয়ে পূরণ করতে পারে। যদিও ক্ষতিটা ছিল অপূরণীয়।
আইনমন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশের আস্থা অর্জনে ব্যবস্থা নিতে হবে বিশ্বব্যাংককেই। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ ও ষড়যন্ত্রের সঙ্গে বিশ্বব্যাংকের যেসব কর্মকর্তা জড়িত ওই সব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাংক ব্যবস্থা নিতে পারে। ।
তিনি বলেন, পদ্মা সেতুর অর্থায়ন নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে বিশ্বব্যাংক যে আচরণ করেছে এর প্রতিকার চাই। বিশ্বব্যাংকের এই কাজের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখা হাসিনা ও মিথ্যা অভিযোগের কারণে যারা ভুক্তভোগী হয়েছেন তাদের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।
আইনি ব্যবস্থা নেওয়া নিয়ে তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বব্যাংকের সদস্য হওয়ার সময় যে নীতি ও চুক্তি সই করেছিলো সেখানে উল্লেখ নেই, ঋণ বাতিল করলে বিশ্বব্যাংকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যাবে। বিশ্বব্যাংক আইনের ঊর্ধ্বে নয়। হাইকোর্ট কমিশন করার কথা বলেছে, হাইকোর্ট একটি রুল জারি করেছে। সেখানে কি বলা হয়েছে তা আগে দেখতে হবে। এরপর কথা বলা যাবে। তবে আদালত থেকে এ বিষয়ে বক্তব্য আসাই ভালো। সম্পাদনা: এনামুল হক