নির্বাচন কমিশন গঠনে আইন ও ই-ভোটিং গুরুত্ব সহকারে দেখছে নির্বাচন কমিশন
নাশরাত আর্শিয়ানা চৌধুরী: নির্বাচন কমিশন গঠনে আইন ও ই-ভোটিং করার বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখছে নির্বাচন কমিশন। এই জন্য এ সংক্রান্ত বিষয়ে কমিশনের সর্বশেষ কি উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল সেটাও তারা জানতে চাইছে। এরপর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাও নিবে।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা বলেন, নির্বাচন কমিশন আইন একটি আছে যা নির্বাচন কমিশন আইন ২০০৯ নামে পরিচিতি। ওই আইনের বিধিও আছে। কিন্তু নির্বাচন কমিশন গঠন কিংবা পুনর্গঠনের জন্য প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও কমিশনারদের নিয়োগের প্রক্রিয়া, নিয়োগ, এই সংক্রান্ত একটি আইনের প্রয়োজন। এই আইন করা দরকার। তিনি বলেন, আমরা আশা করছি আইন করতে পারব। এখনই সময় বলতে পারছি না। কারণ আগে আমাদেরকে দেখতে হবে আইনটি করার জন্য এর আগে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল কিনা। সেই উদ্যোগ কতদূর এগিয়েছিল। এটা জানার পর আমরা পরবর্তী পদক্ষেপ নেব। যদি এই সংক্রান্ত আইন করার জন্য ইতোপূর্বে কোনো ব্যবস্থাই না নেওয়া হয়ে থাকে তাহলে আমরা আইন করার ব্যবস্থা নেব। সেই ক্ষেত্রে সব দিক বিবেচনা করেই আমরা আইন করবো। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীও আমাদের দায়িত্ব নেওয়ার দিনে সংসদে বলেছেন নির্বাচন কমিশন গঠনে আইনের কথা এবং ই-ভোটিংয়ের কথা।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, আমি মনে করি নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করার জন্য আইন করা প্রয়োজন। আইন করলে সবার সামনে এটাই স্পষ্ট হবে যে আইন অনুযায়ী কমিশন গঠন করা হবে। বিভিন্ন দল যে তর্ক বিতর্ক করে কিংবা পছন্দমতো ও মনের মতো না হলে আপত্তি আনে। সমালোচনা করে। অনাস্থা আনার চেষ্টা করে। এখন আইন না থাকার কারণে এগুলো হচ্ছে। আইন করা হলে এই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
ই-ভোটিংয়ের ব্যাপারে তিনি বলেন, আমাদের এখানে এখনও ই-ভোটিং চালু করার ব্যাপারে কোনো কাজ শুরু করার সুযোগ হয়নি। ই-ভোটিং করার বিষয়ে এর আগের কমিশন কী কী কাজ করেছেÑ সেটা আমাদের দেখতে হবে। সেই কাজে তারা কতখানি অগ্রসর হয়েছিল সেটাও দেখতে হবে।
এ ব্যপারে আমরা এখনও আলোচনা করিনি। আগামী কয়েকদিন পর করবো। এর আগে ওই ধরনের প্রকল্প বাস্তবায়ন করার জন্য বিগত কমিশনের অগ্রগতি জানতে হবে। তবে ইভিএম ও ডিজিভিএম-এর কথা শুনেছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন বলেই কী এটা দ্রুত দেখবেনÑ তিনি বলেন, তেমন কিছু নয়। যেটা প্রয়োজন তাতো করতে হবে। আইন করা প্রয়োজন এটাতো করতে হবে। আর ভোটিং পদ্ধতির ক্ষেত্রেও আধুনিকায়ন প্রয়োজন সেটাও করতে হবে। আসলে আমাদের কাজ বেশ চ্যালেঞ্জিং। তবে আমরা আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করব। সফলভাবে দায়িত্ব পালনের চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
এমনিতে বিএনপি আপনাদের সমালোচনা করছে এর উপর প্রধানমন্ত্রী বলার সঙ্গে সঙ্গেই যদি এই উদ্যোগ নেন তাহলে কমিশন আরও সমলোচনার মুখে পড়বে কিনা এ ব্যাপারে তিনি বলেন, আমাদের এখন কাজ করার সময়। অন্য কোনো বিষয় নিয়ে ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া জানানোর সময় এখনও আসেনি।
বিএনপির তরফ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ই-ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের বিষয়টি বিবেচনার যে কথা বলছেন তা দুরভিসন্ধিমূলক বলে দাবি করেছে। দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, এই পদ্ধতি চালু হলে ভোট ম্যানিপুলেট করা সরকারের জন্য সহজ হবে। এটি জনগণের ভোটকে নিজ উদ্দেশ্য সাধনে জালিয়াতি করার প্রচেষ্টামাত্র। এটি প্রধানমন্ত্রীর আরেকটি ভেল্কিবাজিরই বর্ধিত প্রকাশ।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা বলেন, বিএনপি অনেক কথাই বলতে পারে। কিন্তু তাদেরকে আগে আস্থা রাখতে হবে। আস্থা রাখার সম্মান কমিশন না রাখলে এরপর তারা কথা বলতে পারে। কিন্তু কেবল বলার জন্য বলে কিংবা কমিশনকে বিতর্কিত করার জন্য কিছু বলে তো লাভ নেই। আমরা আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করার জন্য সব ধরনের উদ্যোগ নেব। সম্পাদনা: এনামুল হক