বেকায়দায় ব্যাংক আমানত সংগ্রহ করলেও ঋণ বিতরণ হচ্ছেনা
জাফর আহমদ : গ্রাহকদের কাছে থেকে সংগৃতি আমানত বিতরণ করতে পারছে না বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো। যে হারে আমানত সংগ্রহ বেড়েছে তার চেয়ে কম হারে ঋণ বিতরণ করতে হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনের এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
তথ্য অনুযায়ী, ২০১৫ সালের ডিসেম্বর নাগাদ ৭,৫২,২৮২ মিলিয়ন টাকা আমানত সংগ্রহ করেছিল ব্যাংকিংখাত। যা ২০১৬ সালে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯,০৬,৬০৭ মিলিয়ন টাকা। অর্থাৎ ২০১৬ সালে আমানত সংগ্রহ বেড়েছে ২০ দশমিক ৫১ শতাংশ। কিন্তু সাধারণ ঋণ বিতরণের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১১ দশমিক ৭ শতাংশ। ২০১৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ঋণ বিতরণ করা হয়েছিল ৫৯,৭৬,৩০৬ মিলিয়ন টাকা। ২০১৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত এক বছরে ঋণ বিতরণ হয়েছে ৬৮,৮৮,৭০১ মিলিয়ন টাকা। এক বছরে ঋণ বিতরণ বেড়েছে ১১ দশমিক ৭ শতাংশ। অর্থাৎ যে হারে আমানত সংগ্রহ বাড়ছে সে হারে ঋণ ঋণ বিতরণ বাড়ছে না। কিন্তু ঠিকই বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে চড়া সুদ হারে এ ঋণ সংগ্রহ হয়েছে। এ কারণে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে শেয়ার বাজার, অভ্যান্তরীণ বিল ক্রয়, সরকারের বিভিন্ন প্রকার বন্ড, বাংলাদেশ ব্যাংকের বন্ড ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগের জন্য যেতে হচ্ছে।
এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো চড়া হারে আমানত সংগ্রহ করে অলস ফেলে রেখে সুদ পরিশোধের চেয়ে কম সুদ হারে হলে বিনিয়োগ করেছে। ২০১৬ সালে আমানত হিসাবে সংগ্রহ করা বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো ১৯,৪৫,৪৫৯ মিলিয়ন টাকা বিনিয়োগ করতে হয়েছে। এ টাকার বড় অংশ সরকারের বিভিন্ন প্রকার বন্ড কেনা হয়েছে। বাণিজ্যিক ব্যাংকের সুত্রগুলো জানায়, চড়া হারে আমানত সংগ্রহ করে শুধু শুধু বসিয়ে রাখার চেয়ে কম সুদ হারে হলেও সরকারি বন্ডের বিপরীতে বা শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করলে কিছুটা হলে মুনাফা ফিরে আসে। এতে সার্বিক লোকশানের পরিমান কিছুটা হলেও কমে। তবে বিনিয়োগের ব্যবস্থা থাকলে ব্যাংকগুলো এ ধরনের কম সুদ হারের ও ঝুকিপূর্ন বিনিয়োগ যায় না। শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ একদিকে যেমন ঝুকিপুর্ণ বিনিয়োগ; অন্যদিকে সরকারের বন্ডে বিনিয়োগ করলে তা নির্দিষ্ট সময়ের আগে ফেরত না আসায় হঠাৎ প্রয়োজন হলে সে টাকা ফেরত পাওয়ার উপায় নেই। ফলে নানামুখি ঝুকি থাকে এ সব বিনিয়োগে।