বাংলাদেশ এবং কলকাতার চলচ্চিত্র শিল্পের মধ্যে খুব একটা পার্থক্য আমি দেখছি না
আমাদের অর্থনীতিকে দেওয়া বিশেষ সাক্ষাৎকারে কলকাতার জনপ্রিয় অভিনেত্রী প্রিয়াংকা সরকার
সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আউয়াল চৌধুরী
হুমায়ূন আহমেদের ভীষণ ভক্ত আমি। হুমায়ূন আহমেদের মাধ্যমেই বাংলাদেশকে দূর থেকে আমি অনুভব করেছি। বাবা-দাদার কাছে এদেশের অনেক গল্প শুনেছি। এদেশের গল্প। তারা একসময় এদেশেরই নাগরিক ছিলেন। এদেশটি তাদেরও ছিল। আমি এদেশকে ভীষণ ভালোবাসি। অনুভব করি। খুব ভালো লাগছে বাংলাদেশে আসতে পেরেÑ দৈনিক আমাদের অর্থনীতিকে দেওয়া বিশেষ সাক্ষাৎকারে এমন মন্তব্য করেন কলকাতার জনপ্রিয় অভিনেত্রী পিয়াংকা সরকার।
‘চিরদিন তুমি যে আমার’ খ্যাত এই নায়িকা এবার বাংলাদেশের দর্শকদের হৃদয় জয় করতে এসেছেন এই দেশে। রফিক শিকদার পরিচালিত ‘হৃদয় জুড়ে’ চলচ্চিত্রে তিনি অভিনয় করবেন চিত্রনায়ক নিরবের বিপরীতে। আমাদের অর্থনীতি তার মুখোমুখি হলে তিনি অনেক অজানা কথাই বলেন। অনেক প্রশ্নের উত্তর দেন আন্তরিকতার সঙ্গে। প্রিয়াংকা সরকার বলেন, আমার দাদার বাড়ি বাংলাদেশের বিক্রমপুরে। এখানেই আমার বাবার জন্ম। চল্লিশের দশকেই তারা কলকাতা চলে যান। বড়দের কাছে বাংলাদেশের অনেক গল্প শুনেছি। তাদের মাধ্যমেই বাংলাদেশ সম্পর্কে একটা ধারণা তৈরি হয়।
তিনি আরও বলেন, আমি হুমায়ূন আহমেদের ভীষণ ভক্ত। সেদিন রমনা থানা অতিক্রম করার সময় খুব আনন্দ পেয়েছি। দুবছর আগে আমি যখন রাজকাহিনী করি তখন কলকাতায় জয়াদির সঙ্গে কাজ করার সুযোগ হয় আমার। জয়াদির সঙ্গে অনেক আলাপও হয়। একসঙ্গে আমরা মেকআপ রুমে দিনের পর দিন আড্ডা দিয়েছি। আমাদের খাওয়া, ভাষা-সংস্কৃতি, চিন্তা-ভাবনা প্রায় সবই এক এবং অভিন্ন। কিন্তু জয়াদির সঙ্গে দেখা করতে পাসপোর্ট ভিসা ছাড়া আসতে পারব না, এটা আমাকে অবাক করেছিল। এটা ভীষণ কষ্টের ব্যাপার।
এক প্রশ্নের জবাবে জনপ্রিয় এই নায়িকা বলেন, ভাষা এক হলেও হয়তো বলার ধরনের একটু আলাদা টান আছে। আঞ্চলিকতার একটা বিষয় রয়েছে। আমার ফেসবুক পেজে কলকাতার দর্শকদের পাশাপাশি বাংলাদেশি দর্শকদের কাছ থেকেও প্রচুর রেসপন্স পাই। এটা আমাকে ভীষণ আনন্দিত করে।
তিনি বলেন, না, আমার কাজকর্ম কম, তথ্য সঠিক নয়। যখন যে কাজ সামনে এসেছে তাই করেছি। ‘চিরদিনই তুমি যে আমার’ রাহুল এবং আমি করেছিলাম। ভীষণ সাকসেসফুল জুটি। তখন পরিচালক, প্রযোজক এবং দর্শক আমাদের একসঙ্গে দেখতে চাইছিল, সে কারণে অনেক বেশি অফার পাচ্ছিলাম। এ কারণেই আমার প্রথম দশটা ছবির মধ্যে আটটা ছবিই তার সঙ্গে করেছি। তারপরেও আমরা দুজনেই চেষ্টা করেছি বাইরে কাজ করার।
এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, দেবের সঙ্গে জুটি বেঁধে কখনো কাজ করা হয়নি। কিন্তু ‘চিরদিনই তুমি যে আমার’ ছবিতে তার একটা গেস্ট অ্যাপিরিয়েন্স ছিল। তিনি অনেক ছবি করছেন। তার সঙ্গে যারা জুটি বেঁধে কাজ করেছেন বা জুটিটা সফল হয়েছে তাদের সঙ্গেই ছবি করে গেছেন। কোনো জুটি সফল হলে সেই জুটিকেই দর্শক বারবার দেখতে চান। দেবের বেলায় সেটি ঘটছে।
‘হৃদয় জুড়ে’ ছবিতে চুক্তিবদ্ধ হওয়ার আগে বাংলাদেশ ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি সম্পর্কে আপনার ধারণাটা কেমন ছিল। নিরবের সঙ্গে আগে থেকে পরিচয় ছিল কী? জানতে চাইলে তিনি বলেন, না, এর আগে তার সঙ্গে আমার আলাপ-পরিচয় ছিল না। কলকাতার অনেকেই বাংলাদেশে এসে কাজ করেছেন, অনেকের সঙ্গে সেভাবেই আলাপ হয়। মিম এর সঙ্গেও আলাপ হয় আমার। অপর এক প্রশ্নের জবাবে প্রিয়াংকা সরকার বলেন, ‘হৃদয় জুড়ে’ মুভিটি নিয়ে প্রথম কথা হয় রফিকদার (রফিক শিকদার) সঙ্গে। গল্পটা একদমই অন্য রকম, খুবই সুন্দর একটা গল্প। আমার মনে হয় যে এটা অভিনয় করে মজা লাগবে, সেজন্যই অভিনয় করা।
কলকাতা এবং বাংলাদেশের চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রির মধ্যে পার্থক্য কোন জায়গায়? এমন প্রশ্নের জবাবে প্রিয়াংকা সরকার বলেন, পার্থক্য আমি খুব একটা দেখছি না। কলকাতা আর বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের শিল্পের মধ্যে খুব একটা পার্থক্য আমি দেখছি না। হ্যাঁ কলকাতায় প্রচুর মানুষ কাজ করে। প্রচুর অভিনেতা-অভিনেত্রী, নতুন ডিরেক্টর প্রযোজকরাও কাজ করছেন। প্রচুর ছবি চলছে।
তিনি বলেন, বাবার জন্মভিটায় এবার হয়তো যাওয়া হবে না। সামনে আমার শুটিং শিডিউল আছেÑ সেটা প্রায় ২০-২৫ দিন। তখন বাংলাদেশে থাকব। এই মার্চেই বিক্রমপুর যাওয়ার ইচ্ছা আছে। আশা করছি, আমার ইচ্ছে পূরণ হবে।
সম্পাদনা: আশিক রহমান