থমকে গেছে বিশ্বাসেরহাট সেতু নির্মাণ
শামীম আহমেদ বরিশাল : লঞ্চ মালিক সমিতির আপত্তির মুখে গত একবছর ধরে জেলার কড়াইতলা নদীর ওপর বিশ্বাসেরহাট সেতু নির্মাণকাজ বন্ধ রয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, কীর্তনখোলা নদীর পূর্ব তীরের বাসিন্দাদের দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে বিশ্বাসেরহাট সেতু নির্মাণে প্রথম পর্যায়ে ২০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। ২০১৪ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি সেতুর নির্মাণকাজ উদ্বোধন করে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের তিন বছরের মধ্যে পুরোকাজ শেষ করার কথাছিলো। সে অনুযায়ী সেতুর পাইলিংসহ দুইপাশের নির্মাণকাজ দুই বছরের আগেই সম্পন্ন করা হয়। নদীর মাঝ বরাবরের সেতুর মূল অংশটির নির্মাণকাজ শুরু করার পূর্বে ঠিকাদার সেখানে লঞ্চ চলাচল বন্ধ করার জন্য একটি নোটিশ ঝুঁলিয়ে দেয়ার পরেই লঞ্চ মালিকরা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। মালিকদের অভিযোগ, সেতুর উচ্চতা কম হওয়ায় নদী দিয়ে বরিশাল-ভোলা, মেহেন্দীগঞ্জ, লালমোহন, বাউফল, কালাইয়া, কালিশুরী ও নাজিরপুরসহ বিভিন্ন রুটের লঞ্চ চলাচল বন্ধ হয়ে যাবে। লঞ্চ মালিকরা নির্মাণকাজের জন্য নদীতে লঞ্চ চলাচল বন্ধ না করে পাশ্ববর্তীস্থানে একটি চ্যানেল তৈরি করে দেয়ার দাবি করেন। এলজিইডির ঠিকাদার এতে সম্মত না হওয়ায় নির্মাণকাজ বন্ধ হয়ে যায়। এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে, এমএল টাইপের লঞ্চ চলাচলের জন্য ৭ দশমিক ৬২ মিটার উচ্চতায় সেতু নির্মাণের জন্য বিআইডব্লিউটিএ সুপারিশ করেছিলো। বাস্তবে ৮ মিটার উচ্চতায় সেতুর নির্মাণকাজ করা হয়েছে। কিন্তু ওই নদী দিয়ে এমএল টাইপের চাইতে বড় ৫/৭টি যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচলের কারণে লঞ্চ মালিকরা আপত্তি তোলেন। বিআইডব্লিউটিএ তখন এলজিইডিকে সেতুর উচ্চতা বৃদ্ধির জন্য অনুরোধ জানায়। কিন্তু সেতুর নির্মাণকাজ অর্ধেকের বেশি শেষ হওয়ায় আর উচ্চতা বৃদ্ধি করা সম্ভব হয়নি। এ অবস্থায় ২০১৬ সালের জানুয়ারি মাস থেকে বিশ্বাসেরহাট সেতুর নির্মাণকাজ বন্ধ হয়ে যায়। এ ব্যাপারে এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী রুহুল আমিন খান জানান, নতুন করে যে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে তার কাজ সম্পন্ন করতে নতুন করে ঠিকাদার নিয়োগ করা হবে। সেতুর উচ্চতা বৃদ্ধি করা সম্ভব না হওয়ায় গার্ডারের সংখ্যা বাড়ানো ও তার দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি করা হবে। তিনি আরও জানান, নদীর মাঝখানে নির্মাণকাজের সময় লঞ্চ মালিকরা অন্য চ্যানেল ব্যবহারে রাজি না হলে তাদের জন্য একপাশে একটি চ্যানেল করে দেওয়া হবে। সম্পাদনা : মুরাদ হাসান