বছরে ইয়াবার পেছনে ব্যয় ২৪ হাজার কোটি টাকা
ডেস্ক রিপোর্ট : বাংলাদেশে বছরে ৩০০ কোটি মার্কিন ডলার বা ২৪ হাজার ৪৬ কোটি টাকা মূল্যের ইয়াবা ট্যাবলেট বিক্রি হয় বলে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের বরাত দিয়ে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা রয়টার্স। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের এই তথ্য সঠিক হলে হিসাব অনুসারে তা চলতি ২০১৬-১৭ অর্থবছরের বাজেটের ১৪ ভাগের এক ভাগ বা ৭ দশমিক ৪১ শতাংশ। উল্লেখ, ২০১৬-১৭ অর্থবছরের জন্য সরকার ৩ লাখ ৪০ হাজার ৬০৫ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করে।
গতকাল শুক্রবার মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের বরাত দিয়ে রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে প্রতিদিন প্রায় ২০ লাখ ইয়াবা ট্যাবলেট সেবন করা হয়। দেশে ইয়াবার এই ভয়াবহ বিস্তারে উৎকণ্ঠায় সরকার ও সংশ্লিষ্ট দপ্তর। আর এই কারণে ইয়াবা তৈরির অন্যতম উপাদান সিউডোফেড্রিন নিষিদ্ধ করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ সরকার।
মূলত সর্দি-কাশির ওষুধ তৈরিতে ব্যবহৃত হয় সিউডোফেড্রিন দিয়েই মেটাফেটামিন তৈরি করা হয়। মেটাফেটামিন ও ক্যাফেইন দিয়েই ইয়াবা ট্যাবলেট তৈরি করা হয়। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে রয়টার্স বলছে, ফ্রেবুয়ারি মাসের শেষের দিকেই সিউডোফেড্রিন আমদানি নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। খুব শিগগিরই নিষিদ্ধের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া হবে।
অধিদপ্তরের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম শিকদার বলেন, আমরা সিউডোফেড্রিন আমদানি নিষিদ্ধ করলে প্রতিবেশী দেশগুলো আর অভিযোগ করতে পারবে না, আমাদের দেশেও ইয়াবার উৎপাদন কমবে। তিনি জানান, বিশ্বজুড়েই পণ্যটি ব্যবহারে বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। সম্প্রতি মেক্সিকোও সিউডোফেড্রিন আমদানি নিষিদ্ধ করেছে। তবে গত পাঁচ বছরে বাংলাদেশে এই ওষুধের আমদানি ৬ গুণ বেড়েছে।
উল্লেখ, বাংলাদেশ বৈধভাবে ব্রাজিল, ইতালি, ভারত, চীন ও সিঙ্গাপুর থেকে সিউডোফেড্রিন আমদানি করে। আমদানি করা সিউডোফেড্রিন দিয়ে আট ধরনের ওষুধ প্রস্তুত করে স্থানীয় ওষুধ কোম্পানি। তবে গ্লাক্সোস্মিথকিন এর মতো অনেক ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ২০১০ সাল থেকে সিউডোফেড্রিন দিয়ে ওষুধ উৎপাদন বন্ধ করে দিয়েছে।
সাধারণত এক কেজি সিউডোফেড্রিনের মূল্য ৬৭ ডলার। এই পরিমাণ সিউডোফেড্রিন দিয়ে ৪ লাখ ইয়াবা ট্যাবলেট তৈরি করা সম্ভব। এ কারণে অনেক ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি সিউডোফেড্রিন অপব্যবহারের দিকে ঝুঁকে পড়ছে বলে মনে করেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের প্রধান কেমিক্যাল পরীক্ষক দুলাল কৃষ্ণ সাহা। মাদক ও অপরাধবিষয়ক জাতিসংঘের আঞ্চলিক প্রতিনিধি জেরেমি ডগলাস বলেন, নিয়ন্ত্রণের ফলেই ভালো ফল আসতে পারে। তবে একই সঙ্গে নিষেধাজ্ঞার ফলে অনেক সময় অবৈধ বাজার তৈরি করে।