তৃণমূলে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেবে কেন্দ্র : ওবায়দুল কাদের
আল হেলাল শুভ: আওয়ামী লীগের তৃণমূলে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত কেন্দ্র নেবে এমন বার্তা জানিয়ে দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, তৃণমূলে একটা ‘সার্কলার’ গেছে। দলীয় শৃঙ্খলার বিষয়ে আমরা পরিষ্কারভাবে বলে দিয়েছি যে, দলের নিম্নতম শাখার কেউ অপরাধী হলে সরাসরি বহিষ্কার করা যাবে না। কেন্দ্রীয় কমিটি তা চূড়ান্ত করবে। নারায়ণগঞ্জের মতো কুমিল্লায় সিটি করপোরেশনেও দলীয় নেতাকর্মীদের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের সমাধান করা হবে বলেও এ সময় জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাদের। গতকাল ধানমন্ডির আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে মহিলা আওয়ামী লীগের পঞ্চম জাতীয় সম্মেলনের প্রস্তুতি নিয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। আজ রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে মহিলা লীগের ওই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।
দলের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে হবে উল্লেখ করে নেতাকর্মীদের উদ্দেশে এ সময় তিনি বলেন, দলের মধ্যে কলহ-কোন্দল চলবে না। জনগণের অগ্রহণযোগ্য কোনো কাজ করা যাবে না। জন-অসন্তোষ সৃষ্টি হয়Ñ এমন কোনো কর্মকা-ে লিপ্ত হতে পারবেন না।
কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আফজল খান ও আ ক ম বাহারউদ্দিনের দ্বন্দ্ব কোনো প্রভাব ফেলবে কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, এটা আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। নারায়ণগঞ্জের সিটি নির্বাচনে দলের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব কুমিল্লার মতো এত তীব্র ছিল? সেটা আমরা মিটিয়ে ফেলেছিলাম। সবার সমন্বিত প্রচেষ্টায় দলীয় প্রার্থী (সেলিনা হায়াৎ আইভী) বিজয়ী হয়েছিল। নারায়ণগঞ্জে যেটা সম্ভব, কুমিল্লাতেও সেটা সম্ভব।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাদের আরও বলেন, জনগণ যাকে ইচ্ছা তাকে ভোট দিবে। কিন্তু আমরা আশা করি আমাদের দল ঐক্যবদ্ধভাবে নির্বাচনে লড়বে। আর নির্বাচনে আমাদের দল ভিন্ন কোন প্রার্থী দেওয়া হয়েছে? আওয়ামী লীগ বড় পরিবার এখানে ভাইয়ে ভাইয়ে ছোটখাটো সমস্যা থাকবেই। নারায়ণগঞ্জে আমরা সমাধান করেছি, কুমিল্লায়ও সমাধান করব।
নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকার নিয়ে বিএনপির দাবি প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের অপর প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, সংবিধানে সহায়ক সরকারের কোনো বিধান নেই। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিধান রয়েছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার করার ব্যাপারে তো আমাদের কোনো আপত্তি নেই। গতবারও নির্বাচনের সময় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ছিল। পৃথিবীর সব উন্নত গণতান্ত্রিক দেশ নির্বাচনের সময় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করে। ওই সময় শুধু সরকার দৈনন্দিন কাজ করবে। বাস্তবে তখন একটা হাত-পা বাঁধা সরকার ক্ষমতায় থাকবে। নির্বাচন হবে নির্বাচন কমিশনের অধীনে, সরকারের অধীনে নয়। নির্বাচনকালীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে বিএনপির অংশগ্রহণ থাকবে কিনা এমন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিএনপির অংশ গ্রহণের সুযোগ সংবিধানে যদি না থাকে তাহলে আমরা কি করে সে সুযোগ দিব।
খালেদা জিয়াকে ছাড়া বিএনপি দেশে কোনো নির্বাচনে যাবে না দলটির নেতাদের এমন মন্তব্যের প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের জবাবে তিনি বলেন, সময় এবং স্রোত কারও জন্য অপেক্ষা করে না। তেমনি সংবিধান ও নির্বাচন কারও জন্য অপেক্ষা করবে না। কারও জন্য ৫ জানুয়ারি নির্বাচন যেমন থেমে থাকেনি। এবারও যদি কেউ নির্বাচনে না আসেন তাহলে নির্বাচন থেমে থাকবে না। তবে এবারের নির্বাচনে বিএনপির না আসার কোনো কারণ নেই। নিবন্ধন হারানোর ভয়ে হলেও বিএনপি নির্বাচনে আসবে। নিবন্ধন বাতিল যাবার ঝুঁকি বিএনপি নিবে বলে আমার মনে হয় না।
মহিলা আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে নবীন-প্রবীণের সমন্বয় হবে এমন উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, দেশের অর্ধেক জনগোষ্ঠী নারী। আমরা নারীদের সমান গুরুত্ব দিচ্ছি। এ জন্য নির্বাচনি প্রস্তুতির পূর্ণতা দিতে মহিলাদের প্রতিনিধিত্বকারী সংগঠনগুলোকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। আমরা স্মার্ট ও আধুনিক মহিলা লীগের নেতৃত্ব উপহার দিতে যাচ্ছি।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক ফজিলাতুন্নেছা ইন্দিরা, সদস্য এসএম কামাল হোসেন, মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পিনু খান, সহ-সভাপতি সাফিয়া বেগম, সাংগঠনিক সম্পাদক মাহমুদা বেগম প্রমুখ। সম্পাদনা: এনামুল হক