অটোরিকশার ধাক্কায় শিশুর মৃত্যু চারজনের অস্বাভাবিক মৃত্যু
সুজন কৈরী: রাজধানীর দক্ষিণখানের আশকোনায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার ধাক্কায় শরিফ মিয়া নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া পৃথক ঘটনায় চারজনের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। নিহতরা হলো শ্যাওড়াপাড়ায় ইসতেফা জান্নাত রাখি (২১), খিলগাঁওয়ে ফাতেমা আক্তার (২২), তুরাগে সুবর্ণা আক্তার (১১) ও পল্ল¬বীতে আছমা আক্তার (২৪)। নিহতদের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠিয়েছে সংশি¬ষ্ট থানা পুলিশ।
নিহত শরিফের বাবা দিনমজুর আবদুল মতিন জনান, তাদের গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার খাগাতুয়া গ্রামে। পরিবার নিয়ে তারা আশকোনার হাজি ক্যাম্প এলাকায় থাকে ভাড়া থাকেন। দুপুরে বাসার সামনের রাস্তায় খেলছিল শরিফ। এ সময় একটি অটোরিকশা তাকে ধাক্কা দেয়। এতে শরিফ গুরুতর আহত হয়। স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে অবস্থার অবনতি হলে ঢামেক হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় অটোরিকশাটি আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
মৃত রাখির বাবা কবির হোসেন জানান, তাদের বাড়ি পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার রামপুর গ্রামে। তিনি পশ্চিম শ্যাওড়াপাড়ার ৫৩ নম্বর বাসায় ভাড়া থেকে সিএনজি চালিত অটোরিকশা ভাড়া চালান। গত বৃহস্পতিবার ভোরে তিনি অটোরিকশা চালানোর জন্য বাইরে বেরিয়ে যান। রাত সোয়া ১১টার দিকে বাসায় ফিরে ভেতর থেকে ঘরের দরজা বন্ধ পান। ডাকাডাকি করলে কোনো সাড়া না পেয়ে প্রতিবেশীদের সহায়তায় দরজা ভেঙে রাখিকে ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচানো অবস্থায় ঝুলতে দেখেন। রাখি মোহাম্মদপুর কেন্দ্রীয় কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিভাগে তৃতীয় বর্ষে পড়ত।
মিরপুর থানার এসআই নাসির উদ্দিন জানান, পরিবারের কাছ থেকে মৃত্যুর খবর পেয়ে লাশ উদ্ধার করা হয়। তবে আত্মহত্যার কারণ সম্পর্কে তারা কিছুই জানাতে পারেননি।
খিলগাঁও থানার এসআই ফারুক হোসেন জানান, গত বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে খিলগাঁওয়ের গোলার বাড়ি এলাকার একটি বাসা থেকে ফাতেমার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়। তিনি স্বামী জনি মিয়ার সঙ্গে ওই বাসায় ভাড়া থাকতেন। পারিবারিক কলহের জেরে আত্মহত্যা করতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন এসআই। ফাতেমার বাড়ি মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলায়।
মৃত শিশু সুবর্ণার বাবা আশরাফুল ইসলাম জানান, গত বৃহস্পতিবার বিকেলে সুবর্ণাসহ আরও কয়েকজন তুরাগের ১৫ নম্বর সেক্টরের ৪ নম্বর রোড এলাকায় রাজউকের লেকে গোসল করতে যায়। পানিতে নামলে সে নিচে তলিয়ে যায়। তাৎক্ষণিক খোঁজাখুঁজি করেও তাকে পাওয়া যায়নি। পরে মৃতদেহ পানিতে ভেসে উঠে।
মৃত আছমার মামা রাসেল হোসেন জানান, গতকাল সকালে মিরপুর ১১ নম্বর সেক্টরের ২ নম্বর রোডের একটি বাসা থেকে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় আছমার মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। আছমা কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার তুজারভাঙা গ্রামের আবদুল আহাদের মেয়ে। সে গ্রিন ইউনিভার্সিটিতে এমবিএতে পড়ত এবং ওই বাসায় একা থাকত। তবে আত্মহত্যার কারণ সম্পর্কে কিছুই জানাতে পারেননি তিনি।
পল্লবী থানার ওসি দাদন ফকির জানান, নিহতের শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। সম্পাদনা: এনামুল হক