মৃত্যুগহ্বরে আইএসের শিকাররা!
ডেস্ক রিপোর্ট : কত লোককে মেরে গর্তে ফেলে দিয়েছে আইএস জঙ্গিরা? ঘাঁটি দখল মুক্ত করার বেশ কয়েক বছর পরেও হয়তো তার সঠিক তথ্য পাওয়া সম্ভব নয়। কারণ, মৃতের সংখ্যা ও গণকবরের সংখ্যা বিপুল। একটি উদাহরণ নিলেই ছবিটা স্পষ্ট হবে। মসুল থেকে আধঘণ্টার রাস্তা, গ্রামের মাঝেই ভৌগোলিক কারণে তৈরি হয়েছে একটি বড় প্রাকৃতিক গহ্বর। হত্যা করার জন্য সেখানেই নিয়ে আসা হত বন্দিদের। কেউ হয়তো সাদা চামড়ার ইউরোপীয়, কেউ হয়তো ইরাকে সরকারের হয়ে কাজ করতে গিয়ে ধরা পড়েছে। হত্যার সময় মসুলের আশপাশের গ্রামের বাসিন্দাদের ডেকে আনা হত। তাদের সামনেই মাথা কেটে বা গুলি করে খুন করা হত। তারপর লাথি মেরে দেহ ফেলে দেওয়া হত ওই ১০০ ফুট গভীর গহ্বরে। তবে শুধু আইএস-ই নয়, সেই সাদ্দাম হুসেনের সময় থেকেই এই হত্যালীলা শুরু হয়েছিল। তখনও এই কুয়োয় দেহ ফেলে দেওয়া হত। আর সামনে হত্যা না করা হলেও, অনেক সময়ে বড় গাড়ি করে অসংখ্য দেহ নিয়ে আসা হত কুয়োর সামনে। বালি, পাথর খালি করার মতো গাড়ি থেকে দেহ ফেলে দেওয়া হত কুয়োর ভিতর। বাইরের দিকে লেগে থাকত রক্তের দাগ, পড়ে থাকত চশমা, জুতো। আজকাল
ইরাককে আইএস মুক্ত করতে চলা সেনা অভিযানের চাপে আপাতত কোণঠাসা জঙ্গিরা। তাই মনে করা হচ্ছে, এই বিশাল মাপের মৃত্যু–গহ্বরগুলি থেকে উদ্ধার করা যাবে মৃতদেহ। কিন্তু প্রশাসন জানাচ্ছে, এখনই হয়তো সব মৃতদের পাওয়া সম্ভব হবে না। ইরাক ও সিরিয়া মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত প্রায় ৭২টি গণকবরের সন্ধান পাওয়া গেছে। যার মধ্যে বেশিরভাগই এমন গর্ত। অনুমান, সব মিলিয়ে এখনও মাটির তলায় রয়েছে প্রায় ১৫ হাজার দেহ। এই ক’দিনের মধ্যে এত দেহ কোনও ভাবে তোলা সম্ভব? এই সব গণকবরের মধ্যে মসুলের পাশেই থাকা এই প্রাকৃতিক কুয়োটিতেই রয়েছে সবচেয়ে বেশি দেহ, প্রায় ৩ হাজার থেকে ৫ হাজার। স্থানীয় ভাষায় এই ধরনের কুয়োকে বলা হয় খাসফা। স্থানীয় এক মানুষ বলছেন, ‘খাসফা হল মৃত্যুপুরী। ওই কুয়ো হাজার হাজার মানুষের জীবন গিলে খেয়েছে। আমরা দেখেছি কীভাবে নির্বিচারে মানুষ খুন করা হয়েছে। এক অন্ধকার সময় ছিল সেটা। ইরাকে যদি কাউকে ভয় দেখাতে হয়, তাহলে বলতে হয় খাসফার কথা। তাহলেই ভয়ে লোকের মুখ শুকিয়ে যায়।’ সম্পাদনা : ইমরুল শাহেদ