বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের পূর্ণাঙ্গ কার্যক্রম ২০১৮ সালের এপ্রিলে
ফারুক আলম: বর্তমান কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী দেশের প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ আগামী ১৬ ডিসেম্বর মহাকাশে উৎক্ষেপণ করা হলেও স্যাটেলইটটি পূর্ণাঙ্গ কার্যক্রম শুরু হবে ২০১৮ সালের এপ্রিল বা মে মাস নাগাদ বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। পূর্ণাঙ্গ কার্যক্রমের পরে স্যাটেলাইট শুধুমাত্র বাংলাদেশে পরিচালনা করলে এর পেছনে যে অর্থ ব্যয় হয়েছে তা ৮ বছরের মধ্যেই উঠে আসবে। আর দেশের বাইরে স্যাটেলাইটের তরঙ্গ বিক্রি করতে পারলে এর অর্থ নির্ধারিত সময়ের আগেই উঠে আসবে।
এ বিষয়ে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের প্রকল্প পরিচালক গোলাম রাজ্জাক আমাদের অর্থনীতিকে জানান, বর্তমানে বিদেশি স্যাটেলাইটের ফ্রিকোয়েন্সি ভাড়া নিয়ে টেলিভিশন চ্যানেল, টেলিফোন, রেডিওসহ অন্যান্য যোগাযোগ রক্ষা করা হচ্ছে। এতে প্রতি বছর ভাড়া বাবদ বাংলাদেশকে বিপুল অর্থ গুনতে হয়। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট চালু করতে পারলে দেশে শুধু বৈদেশিক মুদ্রারই সাশ্রয়ই হবে না, সেইসঙ্গে অব্যবহৃত অংশ নেপাল, ভুটান ও মিয়ানমারের মতো দেশে ভাড়া দিয়ে বিপুল অংকের অর্থ আয় করা যাবে।
ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মো. আব্দুস সবুর আমাদের অর্থনীতিকে জানান, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে স্যাটেলাইট বড় ধরনের অগ্রগতি এনে দেবে। বর্তমানে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে টেলিফোন সংযোগ নেওয়া সম্ভব হয় না। এই স্যাটেলাইটের মাধ্যমে সারাদেশে টেলিফোন সংযোগ নেওয়া যাবে, যা তথ্য প্রযুক্তির সব ধরনের সেবা নিশ্চিত করার পথ সুগম করবে। পুরো বিষয়টি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। স্যাটেলাইট কাঠামো নির্মাণ ও উৎক্ষেপণ ব্যবস্থা ভূমি ও মহাকাশের নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা, বাংলাদেশে মহাকাশ ও তথ্য প্রযুক্তির প্রসার ঘটবে, যা ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের জন্য সার্বক্ষণিকভাবে তথ্যের সম্প্রচার ও যোগান দেওয়ার জন্য স্যাটেলাইট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানান, স্যাটেলাইটের ব্যবসা পরিচালনার জন্য চুক্তি অনুযায়ী বিদেশি পরামর্শক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ফ্রান্সের যে প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তারা তিন বছরের জন্য আমাদের কারিগরি সহায়তা দেবে। পাশাপাশি উপগ্রহ পরিচালনার জন্য স্থানীয়দের প্রশিক্ষণ দেবে। স্যাটেলাইটি যে কোম্পানি পরিচালনা করবে তার নাম হচ্ছে বঙ্গবন্ধু কমিউনিকেশন স্যাটেলাইট বাংলাদেশ কোম্পানি লিমিটেড। ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে কোম্পানি পরিচালিত হবে।