নির্বাচনকালীন সরকার সমস্যার সমাধান হবে কীভাবে?
কাজী সিরাজ
আগামী জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি এখন থেকেই শুরু করে দিয়েছে রাজনৈতিক দলগুলো। ২০১৮ অথবা ২০১৯ সালের প্রথম দিকে হওয়ার কথা আগামী জাতীয় নির্বাচন। যেকোনো জাতীয় নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দলগুলো বিভিন্ন বক্তব্যের মাধ্যমে তারা তাদের অবস্থান জানান দিয়ে থাকে। এটাকে অনেকে রাজনৈতিক গেমও বলে থাকেন। তারা একে অপরের উপর এই গেম চাপিয়ে দিতে চায়। বিশেষ করে প্রধান দুই রাজনৈতিক দল একে অপরের উপর একটা চাপ তৈরি করতে চয়। এমনটি আমরা আগেও দেখেছি। নির্বাচনের আগে সরকার, বিরোধী দলগুলোকে চাপে রাখতে চায়। বিরোধী দলও সরকারকে চাপে রেখে আন্দোলন করে নির্বাচনের সময় কিছুটা সুযোগ বা সুবিধা নিতে চায়।
আমার ধারণাÑ নির্বাচনে যাওয়া না যাওয়া, নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা নিয়ে খুব একটা ঝামেলা হবে না বড় দুই দলের মধ্যে। কারণ ২০১৪ সালের নির্বাচনে সরকার পক্ষের অবস্থান ছিল শেখ হাসিনা সরকারের অধীনেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে হবে। কিন্তু পরে সেখান থেকে সরে এসে আওয়ামী লীগ সর্বদলীয় সরকারের প্রস্তাব দিয়েছিল। বিএনপির তখনকার দাবি ছিল, তত্ত্বাবধায়ক সরকার। এখন বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি করছে না। তারা এখন নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের কথা বলছে। আমার ধারণা, আওয়ামী লীগের তৎকালীন সর্বদলীয় সরকার প্রস্তাব এবং বিএনপির এখনকার নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের মধ্যে দূরত্ব খুব একটা নেই। নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে যে সমস্যা তার একটা সমাধানও সম্ভবত হবে।
বিএনপি তো শেখ হাসিনাকে প্রধান রেখেই সহায়ক সরকার চেয়েছে। এটা হতেই পারে। আমার মনে হয়, শেখ হাসিনাকে রেখেও একটা অ্যারেজমেন্ট হতে পারে। এটা হওয়া সম্ভব। এখন যে কথাগুলো বলা হচ্ছে বিএনপির পক্ষ থেকে, যে তারা নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকার ছাড়া কিংবা এই সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাবে না, এটা আসলে একটা রাজনৈতিক চাপ। বিএনপি একটা নির্বাচনমুখী দল। আমার ধারণা, আগামী জাতীয় নির্বাচনে যাবে দলটি। বিএনপি যদি নির্বাচনে না যায় তাহলে সাংগঠনিকভাবে আরও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আর সরকার যদি আগামী জাতীয় নির্বাচনটিও সবার কাছে গ্রহণযোগ্য করতে না পারে, বিএনপিকে যদি নির্বাচনে না আনতে পারে তাহলে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচন যেভাবে পার করেছিল, এবার বোধহয় সেটা সম্ভব না-ও হতে পারে।
পরিচিতি: সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক
মতামত গ্রহণ: তানভীন ফাহাদ
সম্পাদনা: আশিক রহমান