প্রবাসী আয়ে ধস, ৫ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন
হাসান আরিফ: প্রবাসী আয়ে ধস নেমেছে। ৫ বছরের মধ্যে কোনো একক মাসের মধ্যে ফেব্রুয়ারি মাসে সব থেকে কম প্রবাসী আয় দেশে এসেছে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে মাত্র ৯৩ কোটি ৬২ লাখ ডলার পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। ২০১১ সালের নভেম্বরে ৯০ কোটি ডলারের রেমিটেন্স বাংলাদেশে এসেছিল। এই হিসাবে চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসে (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) প্রবাসী আয় কমেছে ১৭ শতাংশ। বাংলাদেশ ব্যাংক রেমিটেন্স প্রবাহের হালনাগাদ তথ্য থেকে এই চিত্র পাওয়া গেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যে বলা হয়েছে, গত বছরের নভেম্বর ও ডিসেম্বরে ১০০ কোটি ডলারের কম রেমিটেন্স এলেও জানুয়ারি মাসে তা কিছুটা বেড়ে ১০০ কোটি ডলারের বেশি হয়। তবে ফেব্রুয়ারি মাসে তা ফের কমে ৯৩ কোটি ৬২ লাখ ডলারে নেমে এসেছে। ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে রেমিটেন্স এসেছিল ১১৩ কোটি ৬২ লাখ ডলার। শতাংশের হিসাবে ১৭ দশমিক ৬০ শতাংশ। প্রবাসী আয় প্রবাহের ধারাবাহিক পতনে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্তৃপক্ষও উদ্বিগ্ন। তাই বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর সঙ্গে সম্প্রতি কয়েক দফায় বৈঠক করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। এছাড়া আয় বাড়াতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দুটি প্রতিনিধি দল মধ্যপ্রাচ্য, সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়ায় সরেজমিনে তদন্তে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, ডলারের বিপরীতে ব্রিটিশ পাউন্ড, ইউরো, মালয়েশিয়ান রিংগিত, সিঙ্গাপুর ডলারের মুদ্রার মূল্যমান কমে গেছে। ফলে এসব দেশের শ্রমিকদের আয়ের বিপরীতে বাংলাদেশি টাকা কম পাওয়া যাচ্ছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত কয়েক বছর ধরে প্রবাসীদের পাঠানো আয় ১০০ কোটি ডলারের বেশি থাকলেও গত নভেম্বর ও ডিসেম্বরে তা নেমে আসে যথাক্রমে ৯৫ কোটি ১৩ লাখ ডলার ও ৯৫ কোটি ৮৭ লাখ ডলারে। জানুয়ারি মাসে আসে ১০১ কোটি ডলার। ২০১৬ সালে প্রবাসীরা ১ হাজার ৩৬১ কোটি ডলার প্রবাসী আয় দেশে পাঠিয়েছিলেন। ২০১৫ সালে এসেছিল ১ হাজার ৫৩২ কোটি ডলার। সে হিসাবে গত বছরে প্রবাসী আয় আগের বছরের চেয়ে ১১ দশমিক ১৬ শতাংশ কমেছিল। এর আগে ২০১৩ সালেও প্রবাসীরা তার আগের বছরের তুলনায় ২ দশমিক ৩৯ শতাংশ কম প্রবাসী আয় পাঠিয়েছিলেন।
প্রবাসী আয়ের নেতিবাচক প্রবণতা প্রথম দেখা দেয় ২০১৩ সালে। ওই বছরে প্রবাসীরা ১ হাজার ৩৮৩ কোটি ডলার পাঠান, যা ২০১২ সালের তুলনায় ২ দশমিক ৩৯ শতাংশ কম ছিল। এরপর ২০১৪ সালে প্রবাসী আয়ে ৭ দশমিক ৮৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ঘটে। ওই বছর মোট ১ হাজার ৪৯২ কোটি ডলার আয় দেশে আসে। এরপর ২০১৫ সালেও প্রবাসী আয়ে ২ দশমিক ৬৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়।