নারী মুক্তি আন্দোলন এখন ভোগবাদীদের খপ্পরে
জলি তালুকদার
রাজনীতিতে নারীর অংশগ্রহণ আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে। কিন্তু নারীর ক্ষমতায়ন সত্যিকারে কতটুকু হয়েছে তা বিশ্লেষণ সাপেক্ষ ব্যাপার। বুর্জোয়া, ভোগবাদী রাজনীতির কারণে রাজনীতিতে নারীর অংশগ্রহণ, সম্পৃক্ততা প্রত্যাশামতো হয় না। নারীরা তো ভোগবাদী রাজনীতি, সন্ত্রাস, খুন, লুটপাটের বিরুদ্ধে। প্রকৃতই এসব অপসংস্কৃতির বিরুদ্ধে তারা। আমাদের প্রধানমন্ত্রী একজন নারী। প্রধান বিরোধীদলের নেত্রীও একজন নারী। রাজনীতিতে নারীর অংশগ্রহণ বাড়লেও, ক্ষমতায়নের জায়গাটা ব্যাপকহারে বাড়েনি এখানে।
নারীমুক্তি আন্দোলন এখন ভোগবাদীদের খপ্পরে পড়ে গেছে। শ্রমজীবী নারীদের আন্দোলনের মধ্যদিয়েই ইতিহাস তুলে ধরা হয়েছে তাদের অবদান। আন্তর্জাতিক নারী দিবসটিও এখন সুবিধাবাদী গোষ্ঠীসমূহের কবলে। যারা নারীমুক্তির মূল বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করছে, লড়াই করছেন বিশেষ করে শ্রমিকদের মজুরি দাসত্ব এবং পুরুষতান্ত্রিক পুঁজিবাদী রাষ্ট্রব্যবস্থার বিরুদ্ধে লড়াই তারা চালিয়ে যাচ্ছে। দেশের নানাক্ষেত্রে নারীর ক্ষমতায়ন বাড়লেও প্রত্যাশানুযায়ী হচ্ছে না। তাদের এই সংখ্যা আরও বাড়া উচিত। সেক্ষেত্রে অবশ্যই রাষ্ট্র, সমাজ এবং পরিবারের পুরুষতান্ত্রিক আচরণে পরিবর্তন আনতে হবে। পুরুষতান্ত্রিক আচরণের কারণে নারীরা নানাভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছে। ধর্ষণ, নির্যাতনের শিকার হতে হচ্ছে প্রতিনিয়তই। নারীদের রাষ্ট্রীয়, সামাজিক এবং চাকরির ক্ষেত্রে নানারকম বৈষম্যের শিকার হচ্ছে। নারীরা বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠানে কাজ করছে।
পোশাকশিল্পে তাদের অবদান উল্লেখযোগ্য। অথচ তাদের কর্মক্ষেত্রটি নিরাপদ নয়। নানানভাবে তাদের হয়রানির শিকার হতে হয়। যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও নারীদের যথাযথ মর্যাদার স্থানটি দেওয়া হয় না বললে কি ভুল হবে? যোগ্যতার স্বীকৃতি আদায়ের জন্য লড়াই চালিয়ে যেতে হবে আমাদের। পুরুষতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থার মধ্যে নিজেদের এগিয়ে নিতে হলে, নিজের অধিকার নিশ্চিত করতে হলে নিরলসভাবে কাজ করে যেতে হবে। হাল ছাড়া যাবে না কোনোভাবেই। নারীরা তার যোগ্যতা দিয়েই যথাযথ মর্যাদা নিশ্চিত করবে আগামীতে। আজকের দিনে এটাই হোক আমাদের প্রত্যয়।
পরিচিতি: কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য, সিপিবি
মতামত গ্রহণ: তানভীন ফাহাদ
সম্পাদনা: আশিক রহমান