ইন্দোনেশিয়ায় শেখ হাসিনা রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ বাংলাদেশের বড় সমস্যা
ডেস্ক রিপোর্ট: বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশকে ‘বড় ধরনের সমস্যা’ উল্লেখ করে এর সমাধানে ইন্দোনেশিয়াকে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
গতকাল ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদোর সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে এ আহ্বান জানান তিনি। ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোর জোট ইন্ডিয়ান ওশান রিম অ্যাসোসিয়েশনের (আইওআরএ) ২০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে জাকার্তায় অনুষ্ঠিত লিডার্স সামিটের এক ফাঁকে দুই নেতার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
দুই নেতার বৈঠক শেষে পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক সাংবাদিকদের বলেন, ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশ সফরে গিয়েছিলেন, মিয়ানমারেও সফরে গিয়েছিলেন। বিষয়টি আলোচনায় এসেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এটা একটা বড় ধরনের সমস্যা। এটা সমাধান করা প্রয়োজন। মিয়ানমারের জনগণ-রোহিঙ্গারা, যারা বাংলাদেশে আছেন, তাদের ফিরে যাওয়ার জন্য ইন্দোনেশিয়া যেন একটা রোল প্লে করেন এ বিষয়ে (প্রধানমন্ত্রী) অনুরোধ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাকার্তা কনভেনশন সেন্টারে ভারত মহাসাগর রিম এ্যাসোসিয়েশন সামিটে ‘একটি শান্তিপূর্ণ স্থিতিশীল ও সমৃদ্ধ ভারত মহাসাগরের জন্য রিম সামুদ্রিক সহযোগিতা জোরদারকরণ’ শীর্ষক সাধারণ বিতর্ক অধিবেশ প্রধানমন্ত্রী বলেন, শান্তিপূর্ণ ও সমৃদ্ধ ভারত মহাসাগরের জন্য সামুদ্রিক সহযোগিতা জোরদার করে নিবেদিতপ্রাণ হয়ে কাজ করতে ভারত মহাসাগর রিম এ্যাসোসিয়েশন (আইওআরএ) নেতৃবৃন্দের প্রতি আহবান জানিয়েছেন। তিনি এ অঞ্চলের জন্য দক্ষ নাবিক তৈরিতে বাংলাদেশে ভারত মহাসাগর কারিগরি ও বৃত্তিমূলক একটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনেরও প্রস্তাব করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের অভীষ্ট লক্ষ্য হচ্ছে মহাসাগর ও সমুদ্রপথ উন্নয়নের মাধ্যমে রিম দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশকে রূপান্তরের প্রচেষ্টা চালানো। আসুন সামুদ্রিক সহযোগিতা বৃদ্ধি করে শান্তিপূর্ণ, স্থিতিশীল এবং সমৃদ্ধ ভারত মহাসাগরের জন্য নিজেদেরকে উৎসর্গ করি । প্রধানমন্ত্রী সমুদ্র অংশীদারিত্ব জোরদারে ‘আইওআরএ কনকর্ড’ এবং তার কর্মপরিকল্পনা গ্রহণের জন্য ‘আইওআরএ’ নেতৃবৃন্দকে ধন্যবাদ জানান। ব্লু ইকোনমি এখন সব আইওআরএ সদস্য রাষ্ট্রেরই অভিন্ন স্বার্থ বলেও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের প্রশ্নে বাংলাদেশে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির উল্লেখ করে বলেন, ব্যাপক অর্থে আমাদের এই নীতির আওতায় নিরাপদ সমুদ্র এবং সামুদ্রিক নিরাপত্তা জনিত বিষয়টিও অন্তভূক্ত রয়েছে। সন্ত্রাসবাদ ও চরমপন্থা প্রতিহত করায় আইওআরএ’র যে ঘোষণা তা আইওআরএ সদস্যদেশগুলোর মধ্যে পারষ্পরিক সহযোগিতার ক্ষেত্রকে আরো প্রসারিত হবে বলেও আষা করেন।
জ্বালানি নিরাপত্তার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ মনে করে টেকসই জ্বালানি অনুসন্ধানের জাতীয় প্রচেষ্টার বিষয়ে আঞ্চলিক সহযোগিতার প্রভাব ইতিবাচক।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ইতোমধ্যেই পার্শ¦বর্তী দেশগুলোর সঙ্গে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বাণিজ্য সম্প্রসারনের এবং সমুদ্র ও সামুদ্রিক শিল্পের ওপর ভিত্তি করে বায়ুমন্ডলীয় শক্তি ব্যবহার করে নবায়নযোাগ্য জ্বালানি উৎপাদনের উদ্যোগ নিয়েছে।
জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুপ প্রভাব প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুপ প্রভাব মোকাবেলায় আমাদের সর্বত প্রচেষ্টা সত্বেও আমরা এখনো জলবায়ুর বিরুপ প্রভাবের কাছে জিম্মী এবং এর মানে হলো আমরা সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির ভীতিকর অবস্থার দিকেই অগ্রসর হচ্ছি। এটা অনুমিতই যে সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা এক মিটার বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশ তাঁর মহামূল্যবান কৃষিজমির এক তৃতীয়াংশ হারাবে এবং প্রায় ১ কোটি ৮০ লাখ লোক বাস্তুচ্যুত হবে। এরআগে প্রধানমন্ত্রী সামিটের উদ্বোধনী পর্বে যোগ দেন। সম্পাদনা: এনামুল হক