ভারতের সঙ্গে চুক্তির বিষয়বস্তু জনসম্মুখে প্রকাশ করুন : সরকারকে ফখরুল
কিরণ সেখ: বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের চুক্তির বিষয়বস্তু জনসম্মুখে প্রকাশ করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ভারত সফরে প্রধানমন্ত্রী নিরাপত্তা ও সামরিক চুক্তি করবেন- গণমাধ্যমের এ সংবাদ তুলে ধরে তিনি বলেন, ভারত ও বাংলাদেশর মধ্যে চুক্তি হবে। আর সেটা জনগণ জানতে পারবে না। এটা প্রজাতন্ত্রের দেশে হতে পারে না। ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে চুক্তির বিষয় জনসম্মুখে তুলে ধরতে হবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে ডক্টরস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ আহ্বান জানান।
‘বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ১১তম কারাবন্দি দিবস’ উপলক্ষে এ সভায় তিনি বলেন, জঙ্গিদের দমনে এবং হত্যার সরকার কোন সুনির্দিষ্ট তথ্য দিতে পারছে না। টঙ্গির ঘটনা কী, সে বিষয়ে আমি সঠিক জানি না। তাই প্রশ্ন থেকেই যায়। জঙ্গি বিষয়টি আমরা অস্বীকার করছি না এবং বাতিলও করছি না। তবে এ বিষয়ে গ্রহণযোগ্য তথ্য ও যুক্তি উপস্থাপন করতে হবে- বলেন তিনি। জঙ্গি দমনের নামে নতুন করে ড্রামা শুরু হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, রাস্তার উপর এবং ডোবার লাশ পড়ে আছে। কেনো? আমেরিকা তিনটি দেশকে জঙ্গিবাদ বলে চিহ্নিত করেছে। এ তিনটি দেশ পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও বাংলাদেশ এ কথা জানিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকার বর্হিবিশ্বের কাছে দেশকে জঙ্গিবাদ হিসাবে চিহ্নিত করছে। সংবিধানে সহায়ক সরকার নেই- আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এ বক্তব্যের কঠোর সমালোচনা করেন রুহুল কবির রিজভী। রিজভীর বক্তব্যের সঙ্গে একমত পোষন করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগ সংবিধানকে বাইবেল বানিয়েছে। নিজেদের প্রয়োজনে সংবিধান পরিবর্তন করবে। আর এখন বলবে, সংবিধানে সহায়ক সরকার নেই। সংবিধান জনগণের জন্য। তাই এসব কথা বলে জনগণকে বোকা বানানোর চেষ্টা করবেন না- ওবায়দুল কাদেরকে বললেন ফখরুল। হুম্মাম কাদের চৌধুরীর গুম হওয়া প্রসঙ্গে মির্জা আলমগীর ইসলাম আলমগীর বলেন, হুম্মাম কাদের তো যুদ্ধপরাধী নন। বিনা অপরাধে কেনো তাকে তুলে নেওয়া হলো? আবার কেনো ৭ মাস পড়ে তাকে ফেরত দেওয়া হলো? এর কোন উত্তর নেই। সরকার যে অর্থনৈতিক চিত্র দেখাচ্ছে তা সঠিক নয় বলে দাবি করেন তিনি। বলেন, অর্থনৈতিক উন্নয়নের কথা বলে সরকার জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করছে। ভুল তথ্য দিয়ে জনগণকে বোকা বানানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। সরকারকে বলবো, এ বিষয়ে আসুন সেমিনার ও আলোচনা করি। আপনারাও প্রমান দিন, আমরাও প্রমান করি কত ব্যাংক শেষ করেছেন এবং দুর্নীতি করেছেন। নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, সরকার তো দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন চাইবেই। কারণ কারা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এতো হত্যা, গুম ও নির্যাতনের পরও ৪ টি সিটি করপোরেশন নির্বাচন আমরা বের করে এনেছি। নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে তিনি আরো বলেন, সরকার যা করছে, তা সবই রাজনৈতিক। তাই আমাদেরকে জনগণের কাছে যেতে হবে। জনগণের কাছে অভিযোগ করতে হবে। কারণ জনগণই একমাত্র জায়গা। জনগণ ছাড়া অন্য কোন পথ নেই। ফখরুল বলেন, আজকের এই দিনটি বিশেষ। কারণ ১৯৭১ সালে আজকের এদিনে মাওলা ভাসানী বাংলাদেশকে স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু আওয়ামী ঘোরনা ছাড়া আর কারো মুক্তিযুদ্ধে অবদার তারা স্বীকার করে না।
সংগঠনের সহ- সভাপতি ডা. এম এ কুদ্দুসের সভাপতিত্বে সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এ জেড এম জাহিদ হোসেন, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী প্রমুখ বক্তব্যে রাখেন।