মুকসুদপুরে খোলা আকাশের নিচে চলছে শিক্ষার্থীদের পাঠদান
গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি : গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর উপজেলার ৫১ নং বড় বনগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করায় পার্শের একটি আম গাছের নিচে খোলা জায়গায় ক্লাস করছে কোমল মতি শিক্ষার্থীরা।
জানা যায়, মুকসুদপুর উপজেলার বড় বনগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ১৯২৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। বিদ্যালয়টির মূল ভবন ১৯৯৫ সালে নির্মাণ করা হয়। ১৮ বছর পর ২০১৪ সালে বিদ্যালয়টি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়লে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিষয়টি উর্দ্ধতন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে নতুন একটি ভবনের জন্য আবেদন করেন যা এখনো বাস্তবায়িত হয়নি। ভবনের বিভিন স্থানে ফাটলসহ পলেস্তারা ঝরে ঝরে পড়ছে দীঘর্ দিন ধরেই। বর্তমানে ভবনের ফাটল গুলো আরো বেশি দেখা দিয়েছে। এরপর থেকে শিক্ষার্থীদের নিয়ে বাইরে আম গাছের নিচে লেখা পড়ার কার্যক্রম চলছে।
বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানায়, বৃষ্টির মৌসুমে তারা কি ভাবে ক্লাস করবে। বিদ্যালয়ের সঙ্গেই সড়ক থাকায় বিভিন্ন যানবাহনের শব্দের কারনে লেখা পড়া করতে সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। খোলা জায়গায় ক্লাস নেয়ার দরুন পার্শের গাছপালার ডালা ভেঙ্গে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে যে কোন সময়।
অভিভাবকরা জানান, আমাদের সন্তানদের বিদ্যালয়ে পাঠাতে ভয় হয়। খোলা আকাশে গাছের নিচে কাস হয় ঝড়-বৃষ্টির সময় কখন গাছের ডালপালা ভেঙ্গে পড়ে সন্তানরা আহত হয়। দ্রুত বিদ্যালয়ের ভবন নির্মানের দাবি করেন তারা।
প্রধান শিক্ষক তানিয়া পারভিন ও অন্যান্য শিক্ষিকারা জানান, আমাদের বিদ্যালয়ের শিক্ষার মান এবং ফলাফল অনেক ভাল যার কারনে শিক্ষার্থীর সংখ্যাও বেশি। কোন অতিরিক্ত ভবন না থাকায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আমাদের ওই ভবনেই বসতে হচ্ছে। যে কোন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারেও বলে জানান শিক্ষক বৃন্দ। তারা আরো জানান, দুর্ঘটনার ভয়ে বিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থী আসা কমে গেছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা আরো জানান, আমাদের বিদ্যালয়ের ভবন ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করার ফলে আমরা শিক্ষার্থীদের যাতে লেখাপড়া ক্ষতি না হয় সে জন্য খোলা স্থানে ক্লাস নেয়া হচ্ছে। দ্রুত বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণের ব্যবস্থা করার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি। বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি শহিদুল ইসলাম বিদ্যালয়ের ভবন না থাকায় খোলা জায়গায় ক্লাস নেয়া হচ্ছে জানিয়ে বলেন, বসার জায়গা না থাকায় এবং দুর্ঘটনার আশংকায় বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের আসা কমে যাচ্ছে। অবিলম্বে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান তিনি।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার নরেন্দ্রনাথ মৌত্র জানান, সম্প্রতি জরাজীর্ণ ভবনের তালিকা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়েছি। আশা করছি খুব দ্রুত এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে পারবো। সম্পাদনা : মুরাদ হাসান