চকরিয়ায় ফুলের বাম্পার ফলন
এম রায়হান চৌধুরী চকরিয়া (কক্সবাজার) :কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার হারবাং ও বরইতলী ইউনিয়ন দুটি ইতোমধ্যে ফুলের গ্রাম হিসেবে দক্ষিণ চট্টগ্রামে সর্বাধিক পরিচিতি লাভ করেছে। প্রায় ১৫বছর ধরে দুটি ইউনিয়নের বিপুল পরিমাণ জমিতে চাষ করা গোলাপ ও গ্যাডিওলাসসহ নানাজাতের ফুল প্রতিবছর বিশেষ দিবসগুলোতে দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হচ্ছে। মাটির উর্বরতা শক্তি ও গুনগতমান ভাল হওয়ায় এখানকার জমিতে ফলন হওয়া ফুলের যেমন চাহিদা রয়েছে, তেমনি সতেজ ফুলের সৌরভে বিমোহিত করছে ক্রেতা সাধারণকে। ফুলের গ্রামের দুই শতাধিক বাগানে গোলাপ ও গ্যাডিওলাস ফুল বিক্রির ধুম পড়েছে। বিশেষ দিনে ফুলের ব্যাপক চাহিদা থাকায় বাগানগুলোতে ফুল কাটার মহোৎসব।
বরইতলীর একাধিক বাগান ঘুরে দেখা গেছে, স্থানীয় বাগান থেকে প্রায় আড়াই লাখ পিস গোলাপ বিক্রি হয়েছে। বাগান মালিক সমিতির তথ্য মতে, দুই শতাধিক বাগান মালিকরা ২১ দিবস উপলক্ষে এদিন প্রায় ১০লাখ টাকার গোলাপ ফুল বিক্রি করেছেন। বেশিরভাগ ফুল সরবরাহ দেওয়া হয়েছে চট্টগ্রামের বৃহত্তম ফুলের বাজার চেরাগী পাহাড় এবং কক্সবাজার শহরে।
স্থানীয় ফুলচাষিদের মতে, উপজেলার বরইতলী ও হারবাং ইউনিয়নে প্রথম দিকে অল্প জমিতে নানা জাতের ফুলের চাষ হলেও সময়ের পরিক্রমায় এখন দুইশত একর জমিতে হচ্ছে ফুলের চাষ। ফুল চাষী ও সমিতির কর্মকর্তাদের তথ্য মতে, স্থানীয় দুই শতাধিক বাগান থেকে চাষিরা ফুল বিক্রি বছরে প্রায় ১০ কোটি টাকার মতো আয় করছেন। ফুল চাষ করে বর্তমানে বেশির ভাগ পরিবারের আর্থিকভাবে ভাগ্য বদল হয়েছে।
বরইতলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জালাল আহমদ সিকদার বলেন, বরইতলী ও হারবাং ইউনিয়নের জমিতে ফলন করা গোলাপ ও গ্যাডিওলাসসহ নানা জাতের ফুল দীর্ঘ কয়েকবছর ধরে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিক্রি করা হচ্ছে। ফুল চাষ ও বিক্রি করে এলাকার অনেক পরিবার এখন ভাল অবস্থানে আছে। হাজার মতো মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। তামাকের পরিবর্তে ফুল চাষ অবশ্যই পরিবেশ বান্ধব ও লাভজনক। তাই সরকারকে ফুলচাষিদের ব্যাপারে সার্বিক সহযোগিতা করতে হবে। ফুলের গ্রামের ভেতরে গড়ে ওঠা একটি রিসোর্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো.শহিদুল ইসলাম বলেন, দেশে প্রতিদিনই সরকারি- বেসরকারি এবং পারিবারিক ও পাটিসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ফুলের চাহিদা আছে। তবে ফুলের অনন্য চাহিদা থাকে জাতীয় দিবস অন্যতম। বিশেষ দিবসগুলোতে বরইতলী ও হারবাং জনপদের বাগানের সতেজ ফুল যাচ্ছে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের বিভিন্ন বাজারে যাচ্ছে এটা আমাদের জন্য বড় গৌরবের।
চকরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো.আতিক উল্লাহ বলেন, উপজেলার বরইতলী ও হারবাং ইউনিয়নে প্রায় আড়াইশ একর জমিতে বর্তমানে গোলাপ ও গ্যাডিওলাস ফুলের চাষ হয়েছে। এক সময় শখের বসে কেউ ফুল চাষের উদ্ভাবন শুরু করেন। এখন দুই ইউনিয়নের বির্স্তীন জমিতে ফুল চাষ হচ্ছে।
এতে চাষিরাও আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছে। সম্পাদনা: মুরাদ হাসান