জয়পুরহাটে রোটা ভাইরাস ও টাইফয়েডের প্রকোপ
মতলুব হোসেন, জয়পুরহাট : জয়পুরহাটসহ এ অঞ্চলে রোটা ভাইরাস (ডায়রিয়া) ও টাইফয়েডের প্রকোপ দেখা দিয়েছে। ডায়রিয়া ও টাইফয়েডের প্রকোপ অব্যাহত থাকলেও মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি। গত ১৫ দিনে রোটা ভাইরাস ও টাইফয়েডে আক্রান্ত হয়ে প্রায় ৬ শতাধিক নারী, পুরুষ ও শিশু জয়পুরহাট আধুনিক জেলা হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে অনেক রোগী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
জেলার উপজেলা হাসপাতাল,বিভিন্ন ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও কনসালটেশন সেন্টারে আক্রান্ত রোগীরা চিকিৎসা নিচ্ছে। প্রায় প্রতিদিনই চিকিৎসা নিতে আসছে ৪০ থেকে ৪৫ জন আক্রান্ত রোগী। এদের মধ্যে বেশির ভাগ শিশু রোগী নিয়ে জয়পুরহাট আধুনিক জেলা হাসপাতালে আসছেন তাদের স্বজনরা। হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ওইসব শিশুদের জায়গা না হওয়ায় মেঝেতে ও বারান্দায় গদাগদি করে জায়গা নিয়ে তাদের চিকিৎসাসেবা নিতে হচ্ছে। গত জানুয়ারি মাসের শেষ থেকে এ পর্যন্ত প্রায় দেড় মাসে রোটা ভাইরাস ও টাইফয়েডে আক্রান্ত হয়ে জয়পুরহাট আধুনিক জেলা হাসপাতালে ভর্তি শুরু হয়।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, গত ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে এর প্রকোপ বাড়তে থাকে। বৈরী আবহাওয়া প্রখোর রোদ, ধুলোবালির পাশাপাশি অপরিস্কার ও অপরিচ্ছন্ন থেকে রোটা ভাইরাস ও টাইফয়েড এর প্রাদুর্ভাব ঘটে। হাসপাতালে ভর্তির পর ডায়রিয়ায় আক্রান্ত শিশু ৩/৪ দিন এবং টাইফয়েডে আক্রান্ত রোগীরা ৭/৮ দিন চিকিৎসা নেওয়ার পর তারা সুস্থ হাসপাতাল ছাড়ছে।গত ২০ ফেব্রুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ৬ শতাধিক রোগীকে হাসপাতালের বেডে, মেঝেতে ও বারান্দ চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এসব রোগীরা প্রচ- জ্বর, শরীর ব্যথা এবং শিশুরা সাধারণত বমি, পাতলা পায়খানা ও পেটের ব্যথায় ভুগছিল, পরে অবস্থা সঙ্কটাপন্ন হওয়ায় হাসপাতালে নিয়ে এসে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে।
হাসপাতালের চিকিৎসা নিতে আসা ডায়রিয়ায় আক্রান্ত শহরের সাগর পাড়া মহল্লার ১ বছরের শিশু দ্বিপ , পাঁচবিবি উপজেলাার জীবন পুরের সাদিয়ার অভিভাবক জানান তারা ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে গত পাঁচদিন থেকে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন , তাদের এলাকার প্রায় শিশুরা ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে।
টাইফয়েট এ আক্রান্ত সদরের শান্তিনগর এলাকার ডালিায় ঘোষ (২৮) কালাই উপজেলার হাতিয়র গ্রামের লিয়াকত (৩২) বলেন তারা টায়ফয়েড আক্রান্ত হয়ে গত ১০ দিন যাবত হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তারা বলেন ইদানিং প্রায় মানুষের এই অসুখ হচ্ছে। কেউ হাসপাতালে আসে আবার অনেকে বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছেন, এ জ্বর অনেকদিন যাবত ভোগায়।
জয়পুরহাট আধুনিক জেলা হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা. খুরশিদ আলম বলেন, চলমান বৈরী ও রুখ আবহাওয়ায় দিনে প্রচ- রোদ ও গরম রাতে শীত সেইসঙ্গে ধুলাবালির কারনেণরোটা ভাইরাস এবং টাইফয়েড রোগ বেড়ে চলেছে। গত কয়েক বছরের তুলনায় এবারের মাত্রাটা বেশি। গত দুই সপ্তাহে রোটা ভাইরাসে আক্রান্ত প্রায় ৬শ নারী, পুরুষ ও শিশুকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। প্রতিনিয়ত এ রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। আগামীতে আবহাওয়া অনুকূলে আসলেই এর প্রাদুর্ভাব কমে আসবে, তবে চিকিৎসার পাশাপাশি সচেতনতা অবলম্বন করে চলাফেরা করতে হবে । সম্পাদনা : মুরাদ হাসান