দরিদ্র আর সুবিধা বঞ্চিতদের জন্য ডাটাবেজ হচ্ছে
সাইদ রিপন: ন্যাশনাল হাউজহোল্ড ডাটাবেজ (এনএইচডি) প্রকল্প শুরু করেছে সরকার। এতে দেশের দারিদ্র্য পিড়ীত পরিবার ভিত্তিক দরিদ্র ও সুবিধা বঞ্চিতদের চিহ্নিত করা হবে। ফলে প্রকৃত দরিদ্র ও সুবিধা বঞ্চিতদের দারিদ্র্য দূর করা সরকারের জন্য সহজ হবে। প্রকল্পটির কাজ ২০১৮ সালে শেষ করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ৬৯৯ কোটি ৪৬ লাখ টাকা।
সূত্র জানায়, এনএইচডি প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে অতিদরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য বাস্তবায়িত বিভিন্ন কর্মসূচি প্রকল্পের উপকারভোগী নির্বাচনে দ্বৈততা রোধ করা সম্ভব হবে। এর ফলে সরকারের বিপুল অর্থের সাশ্রয় হবে এবং দারিদ্র্য বিমোচন সহজ হবে। এতে সাধারণ জনগণের কাছে সরকারের পাঠানো সেবা দ্রুত ও নির্ভুলভাবে পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে এই প্রকল্পটি বিশেষ ভূমিকা রাখবে।
বিবিএস’র প্রতিবেদনে প্রকল্পের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে জানা গেছে, বিবিএসর জনবল স্বল্পতা রয়েছে। তাই কাজের গুণগতমান নিশ্চিত করার জন্য এনএইচডি প্রকল্পের আওতায় দেশের ৩ কোটি ৫০ লাখ খানার তথ্য তিন ফেইজে তথ্য সংগ্রহ করা হবে। একই সূত্রে আরো জানা গেছে, প্রকল্পের আওতায় তথ্য সংগ্রহের অংশ হিসেবে প্রথম ফেইজ রংপুর বিভাগে ৮টি জেলা, বরিশাল বিভাগের ৬টি জেলা এবং ময়মনসিংহ বিভাগের ৩টি জেলাসহ মোট ১৭টি জেলায় তথ্য সংগ্রহ করা হবে।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালে একনেকে ন্যাশনাল হাউজহোল্ড ডাটাবেজ প্রকল্পটি অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রকল্পটির জন্য প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ৬৯৯ কোটি ৪৬ লাখ টাকা।
সরকার চাচ্ছে দেশের সব খানা (পরিবার) ও খানার সদস্যদের তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহের মাধ্যমে সব জনগোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক তথ্যসম্বলিত একটি জাতীয় ডাটাবেজ তৈরি করতে। এই ডটিাবেজের মাধ্যমেই খানার আর্থ-সামাজিক অবস্থার নির্দেশক স্কোরসহ সকল খানার জন্য ডাটাবেজ থাকবে। এতে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বাস্তবায়নাধীন সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিগুলোর উপকারভোগী নির্বাচন পদ্ধতি সহজকরণ। আর্থ-সামাজিক তথ্য সম্বলিত দেশের সকল খানাভিত্তিক ডাটাবেজ প্রস্তুত, বিভিন্ন সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির মধ্যে যোগসূত্র স্থাপন এবং এ সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য উপজেলা থেকে সব প্রশাসনিক মন্ত্রণালয়ের ব্যবহার উপযোগী করা হবে। সরকারের গৃহীত বিভিন্ন সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির সঠিকভাবে অতিদরিদ্র ব্যক্তিকে চিহ্নিত করা এবং চিহ্নিত করতে সহজ হবে। অতিদরিদ্র জনগোষ্ঠীর উদ্দেশ্য বাস্তবায়িত বিভিন্ন কর্মসূচির অপব্যবহার রোধ করা যাবে।
এই বিষয়ে বিবিএস-এর মহাপরিচালক ও প্রকল্প পরিচালক মো. আমীর হোসেন আমাদের অর্থনীতিকে বলেন, বাংলাদেশের ২৩টি মন্ত্রণালয় বা বিভাগের আওতায় ১৪২টি সমাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে আসছে সরকার। এ সব কর্মসূচির মাধ্যমে যে সব সুবিধা রয়েছে তার কোনো নীতিমালা বা ডাটাবেজ নেই। ফলে সমাজিক নিরাপত্তাগুলোতে কোনো পরিবার একাধিক সুবিধা পায় আবার কোনো পরিবার বঞ্চিতও হয়। এসব সমস্যার সমাধান করতে এনএইচডি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে দেশের আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো উন্নয়নে এবং দারিদ্র্য দূরীকরণের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতি আরো গতিশীল হবে।
তিনি বলেন, প্রকল্পটি ২০১৩ সালে অনুমোদন হলেও কিভাবে প্রকল্পটির কাজ শুরু করা হবে, এ নিয়ে জটিলতা দেখা দেয়। ফলে প্রকল্পটির কাজ শুরু করতে অনেক সময় নষ্ট হয়। তার পরও প্রকল্পটি ২০১৮ সালের মধ্যে শেষ করা সম্ভব হবে বলে তিনি আশা করেন। কারণ ২০১৬ থেকেই প্রকল্পের কাজের অনেকটা অগ্রগতি হয়েছে।
তিনি বলেন, প্রথমে প্রকল্পটি ৩৪৬ কোটি টাকায় অনুমোদন হয়েছিল। কিন্তু বেতন ভাতা বৃদ্ধির কারণে প্রকল্পটি একনেকে দ্বিতীয় সংশোধনী আনতে হয়। এতে প্রকল্পের ব্যয় নির্ধারণ করা হয় ৬৯৯ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। সম্পাদনা : হাসান আরিফ