প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের সময় তিস্তা ও গঙ্গা চুক্তি সম্পাদনের সম্ভাবনা বাড়ল
বিশ্বজিৎ দত্ত: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এপ্রিলে ভারত সফরে যাবেন। তিস্তার জলবণ্টন ও গঙ্গা ব্যারেজ নির্মাণ এই দুটি চুক্তিই প্রাধান্য পাবে তার ভারত সফরে। যা বাংলাদেশ ও আওয়ামী লীগের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমত, কৃষিনির্ভর বাংলাদেশের জন্য তিস্তা ও পদ্মার জল দরকারি। দ্বিতীয়ত, আগামী সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের জয়ী হয়ে আসার জন্যও শেখ হাসিনাকে এই দুটি চুক্তির বিষয়ে একটি সমাধানে আসতে হবে।
কেননা ইতোমধ্যেই বিএনপি ভারতবিরোধী সেøাগান তুলতে শুরু করেছে। যাতে মনে করা হচ্ছেÑ আগামী নির্বাচনেও বিএনপি পুরনো ভারত বিরোধিতাকেই কৌশল হিসেবে নিবে। বিএনপির এই কৌশলকে শুরুতেই ধাক্কা দিতে হলে ঝুলে থাকা তিস্তা ও গঙ্গা জলের সুরাহা হাসিনার জন্য দরকারি। ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার বাংলাদেশকে এই ব্যাপারে অনেকবার আশ্বস্ত করেছে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশ সফরের সময় চুক্তি দুটির বিষয়ে শেখ হাসিনাকে আশ্বস্ত করেছিলেন। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির আপত্তি ও রাজ্যসভায় বিলটি পাস না হওয়ায় চুক্তির বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি। লোকসভাতে বিজেপির একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকলেও রাজ্যসভাতে মোদির একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা ছিল না। যার ফলে কোনো বিল উত্থাপন করতে গেলে সংসদের উচ্চ কক্ষ রাজ্যসভাতে তৃণমূল, কংগ্রেস ও অন্যান্য দলের বিরোধিতায় তা বাতিল হয়ে যায়। এবারে নরেন্দ্র মোদির রাজ্যসভাতেও একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে যাচ্ছেন। বিশেষ করে উত্তর প্রদেশ ও উত্তরা খ-ে বিজেপি জয়ী হওয়ায় রাজ্য সভাতে বিজেপি একক সংখ্যাগরিষ্ঠতার পথে। এখন রাজ্য সভাতে কোনো বিল পাস করাতে বিজেপির সহযোগী দুই একটা দলের সহায়তা লাগবে। কিন্তু আগামী ডিসেম্বরে ঝাড়খ-, কর্নাটকসহ ৫টি রাজ্যে ভোট। নরেন্দ্র মোদির এই বিজয়ে ধারণা করা হচ্ছে ডিসেম্বরে রাজ্য সভাতে বিজেপি একাই লোকসভার মতো একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে। আর এর আগেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত সফর করছেন। এবার মমতা রাজি হোক আর না হোক। নরেন্দ্র মোদি নিজেই পারবেন এই দুটি চুক্তি করতে। মমতার আপত্তিতে কোনো কাজ হবে না। ইতোমধ্যে গঙ্গা ব্যারেজের বিষয়ে ভারতের কেন্দ্রীয় পানি বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, গঙ্গা ব্যারেজ করলে দুই দেশেই উপকৃত হবে। পশ্চিম বঙ্গও জমানো পানি খাল কেটে সেচে ব্যবহার করতে পারবে।
চুক্তির বিষয়ে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়ির সচিব ড. জাফর আহমেদ খান জানান, ১৬৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য এই ব্যারেজটি নির্মাণে সম্পূর্ণ খরচ বহন করবে বাংলাদেশ। যাতে সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৪ বিলিয়ন ডলার। ব্যারেজ নির্মাণে চুক্তির বিষয়ে বাংলাদেশ সব ধরনের কাজ সম্পন্ন করে রেখেছে। এখন দুই দেশের রাজনৈতিক মহলে সিদ্ধান্ত হলেই কাজ শুরু করা যাবে। সম্পাদনা: রাশিদ