প্রধানমন্ত্রী দায়িত্বজ্ঞানহীন উক্তি করতে পারেন তা চিন্তার বাইরে : মির্জা ফখরুল
শাহানুজ্জামান টিটু : ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ এবং যুক্তরাষ্ট্রের কাছে গ্যাস বিক্রির মুচলেকা দিয়ে ২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপি ক্ষমতায় এসেছিল প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের কঠোর সমালোচনা করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। প্রধানমন্ত্রীর এ বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদও জানান বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য আমাদের হতবাক করেছে। তিনি এত বড় দায়িত্বজ্ঞানহীন উক্তি করতে পারেন তা আমাদের চিন্তারও বাইরে। ‘ভারতের প্রতিনিধি হাওয়া ভবনেই বসে থাকতো’ প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্যেরও প্রতিবাদ জানান মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, লোকজন বলে খোদ প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে নাকি তারা বসে থাকেন, বাইরের লোকজন। কারা বসে থাকে তা আমরা জানি না। এর ব্যাখ্যা তো তার দেওয়া উচিত। সুতরাং, প্রধানমন্ত্রীর উচিত হবে দেশের মানুষের কথা, আন্তর্জাতিক স্বার্থের কথা এবং যেটা বলা উচিত সেই কথা বলা। প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন ভারত সফর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তিস্তা চুক্তি ছাড়া কোনো চুক্তি হলে তা জনগণ মেনে নেবে না।
গতকাল দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যৌথসভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, প্রধানমন্ত্রী শনিবার বলেছেন, ২০০১ সালের নির্বাচনের পূর্বে ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ এবং যুক্তরাষ্ট্রের কাছে গ্যাস বিক্রির মুচলেকা দিয়ে বিএনপি ক্ষমতায় এসেছিল। তাহলে প্রধানমন্ত্রী কিভাবে ক্ষমতায় এসেছিলেন। কার কাছে মুচলেকা দিয়েছিলেন?
তিনি বলেন, জনগণের ধারণা আছে যে, ২০১৪ সালের নির্বাচনের সময় ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বাংলাদেশে এলেন। তিনি সব জায়গায় দৌড়ালেন। এরশাদ সাহেবের কাছে গেলেন। তাকে নির্বাচনের জন্য রাজি করালেন। তাহলে কি মানুষ এটাই ভাববে যে, ২০১৪ সালের নির্বাচনে ভারতের ‘র’ এর ভূমিকা ছিল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ?
মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা কখনই দেশের স্বার্থবিরোধী কোনো কাজ করিনি। গ্যাস বিক্রির মুচলেকা দিয়ে নাকি বিএনপি ক্ষমতায় এসেছিল। প্রধানমন্ত্রীর মতো দায়িত্বশীল ব্যক্তির এমন মন্তব্যে এ কথা তিনি পরিষ্কার করে দিয়েছেন যে, এদেশে তাহলে বিদেশিরা অবস্থান করছে। তারা বিভিন্নভাবে কাজ করছে এবং সরকার পরিবর্তনশীলতার সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর মুখ থেকে এ ধরনের উক্তি দেশ ও জাতির জন্য কতটা মঙ্গলজনক হবে তা সহজেই অনুমেয়।
আসলে প্রধানমন্ত্রী রাজনৈতিক স্বার্থে অবলীলায় মিথ্যাচার করেনÑ এ মন্তব্য করে মহাসচিব বলেন, এর ফলে জাতি আরও বিভক্ত হয়। অথচ দেশের সংকট মোকাবিলায় ও অথনৈতিক উন্নয়নে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করা দরকার। তার উচিত ভেবে-চিন্তে মন্তব্য করা। দেখেন আজ পর্যন্ত যত বক্তব্য তিনি দিয়েছেন, তার মতো কিন্তু দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্য আমরা দেইনি।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী আগামী মাসের ৮ তারিখে ভারতে যাবেন। আমরা আশা করছি তিনি তিস্তা পানি বণ্টন চুক্তি করবেন। তবে দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ববিরোধী কোনো চুক্তি করলে দেশের জনগণ মানবে না।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি দেশের জন্য সব করেছে কিন্তু কখনো দেশের স্বার্থবিরোধী কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি।